মার্চ ফর গাজা
এমরান এস হোসাইন
বাংলাদেশের ‘মার্চ ফর গাজা’ র্যালি আন্তর্জাতিক বিশ্বকে একটি বড় বার্তা দিয়েছে বলে মনে করেন বিশিষ্টজনরা। বাংলাদেশের ঐক্যবদ্ধ আওয়াজ বিশ্ববিবেককে নাড়া দেবে বলে তারা বিশ্বাস করেন। তারা বলেছেন, এই মহাসমাবেশ বুঝিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশিরা ফিলিস্তিনিদের পাশে রয়েছে। নানারকম সংকটে থাকলেও বাংলাদেশিদের মানবিক বোধ ও প্রতিবাদী মন আছে এবং বৃহত্তর স্বার্থে বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হতে পারে-তার প্রমাণ রেখেছে। গণজমায়েতের ঘোষণা, প্রতিশ্রুতি ধারণ ও লালন করার পরামর্শ দিয়ে তারা বলেছেন, এই ঐক্যবদ্ধ আওয়াজ বিশ্ববিবেককে নাড়া দেবে। যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্ব ও মুসলিম বিশ্বের ওপর একপ্রকার চাপ সৃষ্টি করবে।
গত শনিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচির বিষয়ে আমার দেশকে দেওয়া পৃথক প্রক্রিয়ায় তারা এসব মন্তব্য করেন।
ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি সংহতি ও ইসরাইলি বর্বরতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে শনিবার ‘প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট বাংলাদেশ’র উদ্যোগে ঢাকায় ‘মার্চ ফর গাজা’ র্যালি অনুষ্ঠিত হয়। এতে দল-মত নির্বিশেষে দেশের সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ অংশগ্রহণ করেন। আয়োজকদের মতে, এটি ছিল গাজার নিপীড়িত মানুষের পক্ষে সর্ববৃহৎ জমায়েত। এই জমায়েত থেকে লাখো কণ্ঠে ‘মুক্ত করো ফিলিস্তিন’ আওয়াজ ওঠে। এই গণজমায়েত থেকে ফিলিস্তিনের পাশে থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়। জমায়েতে পাঠ করা ঘোষণাপত্রে ‘জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি’, ‘মুসলিম উম্মাহর প্রতি’, ‘বাংলাদেশ সরকারের প্রতি’ এবং ‘অংশগ্রহণকারী নিজেদের জন্য অঙ্গীকারনামা’-এই চার স্তরের দাবি উপস্থাপন করা হয়। কর্মসূচিতে গাজায় গণহত্যার দায়ে ইসরাইলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের দাবি তোলা হয়।
মার্চ ফর গাজা কর্মসূচিতে অংশ নেন আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু। কর্মসূচির বার্তা বিষয়ে গতকাল আমার দেশকে দেওয়া এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, এরকম একটি আন্তর্জাতিক ইস্যুতে বাংলাদেশের মানুষের অভাবনীয় সংহতি, ঐক্যবদ্ধতা ও সংগঠিত হওয়ার নজির আমাদের নতুন করে ভাবতে শেখাবে। আমরা দেশ হিসেবে গরিব, নানারকম সংকটের মধ্যে আমরা আছি সত্য; কিন্তু তা সত্ত্বেও আমাদের একটা মানবিক বোধ আছে, প্রতিবাদী মন আছে এবং সময়মতো বৃহত্তর স্বার্থে আমরা বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হতে পারি-শনিবারের মহাসমাবেশ সেটাই প্রমাণ করেছে।
এই ঐক্যবদ্ধ আওয়াজ বিশ্ববিবেককে নাড়া দেবে বলে বিশ্বাস এবি পার্টির চেয়ারম্যানের। তিনি মনে করেন, এ কর্মসূচি ইসরাইলি জুলুমের বিরুদ্ধে উচ্চকণ্ঠ অন্যান্য জুলুম তথা নিজ দেশের বা প্রতিবেশী জালেমদের বিরুদ্ধেও সবাইকে সোচ্চার হতে অনুপ্রাণিত করবে। যে দাবি, ঘোষণা ও প্রতিশ্রুতি মার্চ ফর গাজায় পাঠ করা হয়েছে, তা হৃদয়ে ধারণ ও লালন করা সবচেয়ে বড় দায়িত্ব হয়ে পড়েছে বলে তিনি মনে করেন।
‘নিরাপদ সড়ক চাই’ আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা ইলিয়াস কাঞ্চন আমার দেশকে বলেন, এই কর্মসূচির মাধ্যমে সবাই মিলিতভাবে ইসরাইলকে একটি কড়া বার্তা দিয়েছি যে, আমরা ফিলিস্তিনের পক্ষে আছি। মুসলিম হিসেবে আমরা মুসলিমদের সঙ্গে আছি। পাশাপাশি এও বিশ্ববাসী দেখেছে বাংলাদেশের অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরাও মানবতার জন্য গাজার নিপীড়িত মানুষের সঙ্গে রয়েছে। এটাই ছিল আমাদের মার্চ ফর গাজা কর্মসূচির বড় বার্তা।
তিনি বলেন, মানবতার বিরুদ্ধে যে অন্যায় হচ্ছে-এটা ছিল তার একটি সম্মিলিত প্রতিবাদ। আমরা মানুষের জন্য সেখানে জড়ো হয়েছি।
এক প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশের জনপ্রিয় চলচ্চিত্র অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ইসরাইল তো সারা বিশ্বকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে হাজার হাজার নিরীহ মানুষের ওপর হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে। কাজেই আমাদের এই জমায়েত স্বাধীন ফিলিস্তিনের দাবির পক্ষে কতটা প্রভাব পড়বে, তা বলা মুশকিল। তবে একটা বার্তা তো অবশ্যই যাবে। কারণ, আমরা জানান দিয়েছি আমরা ফিলিস্তিনি নিপীড়িতদের পক্ষে। আমরা তাদের স্বাধীনতার পক্ষে।
বাংলাদেশের আপামর জনগণ আগাগোড়াই ফিলিস্তিনের পক্ষে রয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ। তিনি বলেন, আমরা বড় জমায়েত করেছি। এর সিম্বলিক ভ্যালু অবশ্যই রয়েছে। এর মাধ্যমে আমরা বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পেরেছি। তবে কার্যত দরকার তাদের জন্য সহযোগিতা বৃদ্ধি করা। তাদের জন্য কোন ধরনের সাহায্য করতে পারি-তা সংগঠিত করা দরকার। এর সঙ্গে দরকার যুক্তরাষ্ট্রকে ভালো করে বোঝানো।
বাংলাদেশ সরকারের তরফ থেকে বড় উদ্যোগ নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, জনগণের পক্ষ থেকে আমাদের সরকারের ওপর নিরবচ্ছিন্ন চাপ প্রয়োগ করা দরকার, যেন বাংলাদেশ তার সাধ্যমতো বিভিন্ন ফোরামে বিষয়টি তুলে ধরে। যুক্তরাষ্ট্রকে বিষয়টি বলার চেষ্টা করে। এটা সম্ভব হলে যুক্তরাষ্ট্রের যেসব সাধারণ জনগণ ওই হত্যাযজ্ঞের বিপক্ষে, তারা আরো সক্রিয় হবে।
যুক্তরাষ্ট্র এগিয়ে না এলে ফিলিস্তিনিদের সমস্যা সহসাই নিরসন অসম্ভব উল্লেখ করে এই বিশ্লেষক বলেন, প্যালেস্টাইনের জনগণ যে অবস্থায় পড়েছে, সেটা চিন্তা করা যায় না। আমাদের চোখের সামনে নজিরবিহীন জেনোসাইড হচ্ছে। অনেক জেনোসাইডই কিন্তু পৃথিবীতে হয়েছে। তবে মানুষ কখনো লাইভ জেনোসাইড দেখেনি। ফিলিস্তিনে কিন্তু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কল্যাণে মানুষ লাইভ জেনোসাইড দেখেছে। এই জেনোসাইডটি কিন্তু পশ্চিমা বিশ্বের সভ্যতার ওপর একটি বড় কালো দাগ। ইসরাইল এই যুদ্ধটা চালিয়ে যাচ্ছে; কারণ আমেরিকা তার সঙ্গে রয়েছে। আমেরিকা সমর্থন না দিলে তো যুদ্ধটা কন্টিনিউ হতো না। কাজেই তারা এগিয়ে না এলে এই গণহত্যা বন্ধ হবে না। আমেরিকা পরিবর্তন না হলে ইসরাইলও পরিবর্তন হবে না।
নৃশংসতা বন্ধে মুসলিম বিশ্বের ওপর চাপ প্রয়োগ দরকার উল্লেখ করে ড. ইমতিয়াজ বলেন, আমাদের চোখের সামনে দিনের পর দিন ফিলিস্তি নারী-শিশু মারা যাচ্ছে। এ পর্যন্ত ৬০ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে। কিন্তু মুসলিম বিশ্ব তো চুপ করে আছে এবং আমেরিকার সঙ্গে সম্পর্ক রাখার জন্য রীতিমত লাইন ধরে আছে। মুসলিম বিশ্ব থেকে কোনো চাপ না এলে ইসরাইল নড়েচড়ে উঠবে বলে মনে হয় না।
রাজধানীর সড়কে ট্রাফিক বিশৃঙ্খলা কমিয়ে আনতে চালু করা হচ্ছে স্বয়ংক্রিয় ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম। এই সিস্টেম চালু হলে রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে, ধুলোবালির মধ্যে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হবে না ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের।
১১ ঘণ্টা আগেকারাগারে উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করছেন দরবেশখ্যাত সালমান এফ রহমান। তিনি সব সময় চিল্লাচিল্লি করেন। কারারক্ষীদের সঙ্গে মাস্তানি করেন শাজাহান খান। কথায় কথায় রাজাকারের বাচ্চা বলে গালি দিচ্ছেন হাসানুল হক ইনু।
১১ ঘণ্টা আগেসুপিরিয়র কমান্ড হিসেবে শেখ হাসিনাই জুলাই গণহত্যার নির্দেশদাতা ছিলেন। তার বিচার হবে সুপিরিয়র কমান্ড হিসেবে। মে মাসে এ বিচার শুরুর প্রস্তুতি এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই ট্রাইব্যুনালে সুপিরিয়র কমান্ডের বিচারের জন্য চার্জশিট উপস্থাপনের প্রস্তুতি নিয়েছে প্রসিকিউশন।
১২ ঘণ্টা আগেদেশের জ্বালানি খাতের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেডে (এসএওসিএল) ‘পুকুরচুরি’ করেও বহাল তবিয়তে দুর্নীতিবাজ রাঘববোয়ালরা। তাদের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানের ৪৭২ কোটি টাকা আত্মসাতের প্রমাণ পাওয়া গেছে বার্ষিক অডিট প্রতিবেদনে।
১ দিন আগে