Ad T1

তারেক রহমানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার বাদির বিরুদ্ধের মানববন্ধনে হামলা

জেলা প্রতিনিধি, নোয়াখালী
প্রকাশ : ১১ এপ্রিল ২০২৫, ১৯: ০৫
নোয়াখালীতে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার বাদির বিরুদ্ধের মানববন্ধনে হামলার অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক ও তার ভাই বিএনপি নেতা আব্দুল্লাহ মিয়ার বিরুদ্ধে।
শুক্রবার সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.কামরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
বৃহস্পতিবার নোয়াখালী জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন চলাকালে ও ফিরে যেতে বাটিরটেক চৌমুহনী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। দু’দফা হামলায় অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছে। আহতদের নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, সুবর্ণচর উপজেলার চরজব্বর ইউনিয়নের স্থানীয় বিএনপি নেতা মো. হাসান, জাকির হোসেন, আইয়ুব মেম্বার, কেজি ফারুক অভিযোগ করেন, চরজব্বর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক ২০১৮ সালে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মিথ্যা ও বানোয়াট একটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করে। ওই মামলা এবং ওমর ফারুক ও তার ভাই আব্দুল্লাহ চেয়ারম্যানের নানা অনিয়মের প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এসময় দু’সহোদর ওমর ফারুকের আওয়ামী গ্রুপ ও তার ভাই আব্দুল্লাহ চেয়ারম্যানের বিএনপির গ্রুপ একসাথে মানবন্ধনে বাধা দেয়। তাদের হামলায় অনেকে আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
আহতরা হলেন, সুবর্ণচর উপজেলার চরজব্বর ইউনিয়নের ৭নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি কামাল উদ্দিন (৫৫), স্থানীয় যুবদল কর্মী রাকিব জিয়া (২৭), স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা সুজন মিয়া (২৬), যুবদল নেতা মো. শরীফ (৩৫) ও সুবর্ণচর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম-আহবায়ক আবুল খায়ের আকাশ (৩৮)।
02
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন ডা. মো. শাহজাহান, মো. কামাল উদ্দিন, জাকির হোসেন, মো. রায়হান, ভুট্ট মাঝি প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে করা মামলার বাদি সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট ওমর ফারুকের বড় ভাই স্থানীয় চরজব্বর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল্যাহ মিয়া উপজেলা বিএনপির উপদেষ্টা হয়েও আওয়ামী লীগের স্থানীয় এমপি একরামুল করিম চৌধুরীর সঙ্গে আঁতাত করে বিএনপির সকল আন্দোলন-সংগ্রামে নিজেকে আড়ালে রেখে গত ১৭ বছর আওয়ামী লীগের সকল সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেছেন। ওই সময় অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক সুবর্ণচর উপজেলায় আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়া ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আবদুল্যাহ মিয়া এলাকায় বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে তার ভাই ওমর ফারুকের সন্ত্রাসী বাহিনী ও আব্দুল্লাহ মিয়ার বাহিনী দিয়ে নোয়াখালী পৌর যুবদল নেতা জাকির হোসেনের চার একরের একটি মৎস্য খামার, স্থানীয় ব্যবসায়ী সাহাব উদ্দিনের তিন একরের একটি মৎস্য খামার, নাছের আহাম্মদের ২ একর জমি, আবদুল হাইয়ের ২ একর জমি, ইলিয়াছ মিয়ার ২ একর জমিসহ ১৬ জন ব্যক্তির প্রায় ৩০ একর জমি জোরপূর্বক দখল, খামারের মাছ লুট, চাঁদা আদায়সহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছেন।
বক্তারা আরো বলেন, আবদুল্যাহ মিয়া ও তার ভাই আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট ফারুকের সন্ত্রাসী বাহিনীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে স্থানীয় এলাকাবাসীর উদ্যোগে আজ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধনে দাঁড়ান এলাকার কয়েকশ নারী-পুরুষ। এসময় আবদুল্যাহ মিয়ার অনুসারী সুবর্ণচর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক আবুল খায়ের আকাশের নেতৃত্বে মানববন্ধনে বাধা দেয়। এতে মানববন্ধনকারীরা তাকে পিটিয়ে প্রতিহত করলে আকাশ ফোন দিয়ে তার লোকজন জড়ো করে পুনরায় মানববন্ধনকারীদের ওপর হামলা করলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় চারজন মানববন্ধনকারীসহ পাঁচজন আহত হয়।
01
খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এদিকে জাকির জানান হামলার পর মানববন্ধনকারী লোকজন পাঁচটি বাস যোগে সুবর্ণচর ফেরার পথে বাটিরটেক চৌমুহনী তেরিজপোল এলাকায় পৌঁছলে আব্দুল্লাহ মিয়ার লোকজন ও চরজব্বর ইউপি সদস্য আওয়ামী লীগ নেতা আইউব আলীর নেতৃত্বে গাড়িগুলোর গতিরোধ করে হামলা ও ভাঙচুর চালায়। মানববন্ধনে আসা নারী-পুরুষদের গাড়ি থেকে নামিয়ে তারা মারধর করে। এতে বিএনপি নেতা হাসানসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে। আহতদের বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
সুবর্ণচর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম-আহবায়ক আবুল খায়ের আকাশ জানান, পরিকল্পিতভাবে বিশৃঙ্খলা তৈরি করে আমাদেরকে রাজনৈতিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করার ষড়যন্ত্র করছে।
এ ব্যাপারে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল্যাহ মিয়া অভিযোগের বিষয়ে সাংবাদিকদের জানান, স্থানীয় জনবিচ্ছিন্ন কিছু লোক আমাকে রাজনৈতিকভাবে ঘায়েল করার জন্য আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমি দলের নাম ব্যবহার করে জমি দখলতো দূরের কথা, কারো সঙ্গে কখনো খারাপ আচরণও করিনি।
এ ঘটনায় সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.কামরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তীতে এই বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এমএস
Ad
এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত