নোয়াখালীর সদর উপজেলায় ক্লুলেস ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা চালক বাবর হোসেন (১৮) হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন ও ঘটনার মূল হোতা মামুনকে পুলিশ ও র‍্যাব যৌথ অভিযানে আটক করেছে।

সোমবার রাতে উপজেলার মাইজদী পেট্রোল পাম্প এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়।

আটক মনিরুল ইসলাম মামুন (৩০) নোয়াখালী পৌরসভার মধ্যম করিমপুর এলাকার তাজুল ইসলামের ছেলে। এ সময় তার কাছ থেকে বাবরের ব্যবহৃত মোবাইল ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি গেঞ্জি উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এখনো নিহত বাবরের ব্যবহৃত অটোরিকশাটির সন্ধান পাওয়া যায়নি।

নিহত বাবর নোয়াখালী পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যম করিমপুর এলাকার মো. সেলিমের ছেলে।

মঙ্গলবার পৃথক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে র‍্যাব-১১, সিপিসি-৩ নোয়াখালীর কোম্পানি কমান্ডার (ভারপ্রাপ্ত) সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মিঠুন কুমার কুণ্ডু ও নোয়াখালী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অ্যাপস) মোহাম্মদ ইব্রাহিম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

র‍্যাব ও পুলিশ জানায়, গত ৯ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টার দিকে ভাড়া নিয়ে যাওয়ার পর থেকে আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালক বাবরের। এরপর থেকে স্বজনেরা যোগাযোগ করেও বন্ধ পাচ্ছিলেন তার মুঠোফোন। পরে বৃহস্পতিবার দুপুরে নোয়াখালী সদর উপজেলার ডাক্তার বাজার স্লুইসগেট এলাকার একটি কবরস্থান থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করলেও তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও অটোরিকশাটি নিখোঁজ ছিল। পরবর্তীতে এ ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনে পুলিশ ও র‍্যাবের একাধিক টিম কাজ করে।

র‍্যাব ও পুলিশ আরো জানায়, গ্রেপ্তারের পর হত্যাকারী মামুনকে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে হত্যাকাণ্ডে নিজে জড়িত থাকার বিষয়ে বিস্তারিত স্বীকার করে। জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, কতিপয় ব্যক্তির কাছ থেকে ধার নেওয়া ৪৫ হাজার টাকার পরিবর্তে ৯০ হাজার টাকা দিতে বাধ্য হওয়ায় অতিরিক্ত টাকা সংগ্রহে তার পরিচিত বাবরের অটোরিকশা বিক্রি করে টাকা সংগ্রহের উদ্দেশ্যে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। সে মোতাবেক তাকে নিয়ে দত্তেরহাট এসে ফ্রুটিকা জুসের সাথে কৌশলে ঘুমের ট্যাবলেট খাইয়ে বিনোদপুর ইউনিয়নের জালিয়াল গ্রামের নির্জন বাগানে অটোরিকশা রেখে বাবরকে নিয়ে প্রথমে সোনাপুর যায়। তারপর সিএনজি যোগে পূর্বচর উড়িয়ার স্লুইসগেট কৃষি অফিসের সামনে ডান দিকে নির্জন স্থানের সবজি বাগানে নিয়ে ঘুমের ঔষধ খাইয়ে দুর্বল করে বাবরকে তার গায়ের লিলেন গেঞ্জি দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।

এ ঘটনায় সুধারাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. কামরুল ইসলাম মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার টার সময় জানান, ভিকটিমের স্যান্ডেল বাঁশ ঝাড়ের পাশে এবং হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত লিলেন গেঞ্জিটি পাশের কলাবাগানে রেখে পালিয়ে যায়।

আসামি মামুন মঙ্গলবার আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। বিজ্ঞ আদালত আসামি মামুনকে জেলখানায় পাঠায়। তিনি আরো জানান এই হত্যাকাণ্ড উদঘাটনে পুলিশকে প্রযুক্তিগত সহযোগিতা করেছে র‍্যাব।

এমএস