Ad T1

নববর্ষ উদযাপনে সহিংসতার আশঙ্কা মোকাবিলায় ৫ দাবি কবিতা পরিষদের

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ১০ এপ্রিল ২০২৫, ১৬: ২১
বাংলা নববর্ষ উদযাপনকে কেন্দ্র করে যে কোনো ষড়যন্ত্র বা সহিংসতার আশঙ্কা মোকাবিলায় সরকার ও প্রশাসনের প্রতি সর্বোচ্চ সতর্কতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ পাঁচ দাবি জানিয়েছে জাতীয় কবিতা পরিষদ।
বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে জাতীয় কবিতা পরিষদ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়।
এর আগে লিখিত বক্তব্যে কবি মোহন রায়হান বলেন, বাংলা নববর্ষে মানুষ জাত-ধর্ম-বর্ণ ভুলে একসঙ্গে একআনন্দে মেতে ওঠে। কিন্তু এই সার্বজনীন আনন্দঘন উৎসব আজ একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের নিশানায়। কিছু গোষ্ঠী- যারা ইতিহাস অস্বীকার করে, সাম্প্রদায়িক মতাদর্শকে সাংস্কৃতিক চেতনার ওপর চাপিয়ে দিতে।
তিনি বলেন, বাংলা নববর্ষ কোনো ধর্মীয় উৎসব নয়, বরং প্রশাসনিক প্রয়োজন থেকেই উৎসারিত একটি ক্যালেন্ডার ব্যবস্থা। অথচ আজ একশ্রেণির লোক ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে এটি হেয় করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউট থেকে বের হওয়া ‘শোভাযাত্রা’ আজ একটি ইউনেস্কো স্বীকৃত বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। কিন্তু কিছু গোষ্ঠী এটিকে ‘মূর্তিপূজা’ আখ্যা দিয়ে কটূক্তি করছে। এটি প্রকৃত অর্থে একটি প্রতীকী প্রতিবাদ ও শুভবোধের বহিঃপ্রকাশ, যা বাঙালি সংস্কৃতির প্রতীক হিসেবে বিশ্বমঞ্চে আমাদের পরিচয় তুলে ধরছে। বিভিন্ন ফেসবুক পেজ, ইউটিউব চ্যানেল ও গোপন গ্রুপে নববর্ষ উদযাপনকে ঘিরে উসকানিমূলক কনটেন্ট ছড়ানো হচ্ছে। এটা শুধু মতপ্রকাশ নয়, সাংস্কৃতিক জঙ্গিবাদের সূক্ষ্ম রূপ। অতীতে ২০০১, ২০০৭, ২০১৫ সালের মতো বিভিন্ন সময় এই উৎসবে হামলা ও হুমকির ইতিহাস আছে। এখনো আশঙ্কা থেকেই যায়, বিশেষ করে জনসমাগমকে টার্গেট করে।
তিনি আরো বলেন, জাতীয় কবিতা পরিষদ মনে করে, বাংলা নববর্ষকে লক্ষ্য করে চালানো এই অপপ্রচারের বিরুদ্ধে এখনই রুখে দাঁড়াতে হবে। কারণ এটি কেবল একটি উৎসব রক্ষার লড়াই নয়, এটি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, ভাষা আন্দোলনের গর্ব ও জাতিসত্তার অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রাম।
তাদের দাবিগুলো হলো— সরকার ও প্রশাসনের প্রতি আহ্বান-বাংলা নববর্ষ উদযাপনকে কেন্দ্র করে যে কোনো ষড়যন্ত্র বা সহিংসতার আশঙ্কা মোকাবিলায় সর্বোচ্চ সতর্কতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হোক; শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ও গণমাধ্যমে বাংলা নববর্ষের ইতিহাস ও তাৎপর্য তুলে ধরা; ধর্মীয় অপপ্রচার ও বিভ্রান্তি ছড়ানো গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া; সংস্কৃতিকর্মীদের অংশগ্রহণে দেশব্যাপী ‘সংস্কৃতি রক্ষা অভিযান’ গড়ে তোলা হোক-পথনাটক, কবিতা পাঠ, আলোচনা সভা ও গণসংগীতের মাধ্যমে; এবং সর্বস্তরের জনগণের প্রতি আহ্বান-এই অপপ্রচারের জবাব দিন সাহস ও সচেতনতায়।
এ সময় সংবাদ সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি কবি হাসান হাফিজ, জাতীয় কবিতা পরিষদের সহ-সভাপতি শহীদুল্লাহ ফরায়জী, উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য কবি মতিন বৈরাগী, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক কবি শাহীন রেজা প্রমুখ।
Ad
এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত