Ad T1

পিঠা উৎসবকে কেন্দ্র করে জমে উঠেছে রাবির টিএসসিসি

স্পোর্টস রিপোর্টার
প্রকাশ : ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২: ২২
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪: ২০

ছাত্র-শিক্ষক মিলনায়তন কেন্দ্র যাকে সংক্ষেপে বলা হয় ‘টিএসসিসি’। প্রতিটি ক্যাম্পাসেই একটি করে ‘টিএসসিসি’ রয়েছে। এই টিএসসিসির চত্বরে গানের আসর, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড, বন্ধু-বান্ধবী এবং ছাত্র-শিক্ষকদের আড্ডায় মুখরিত থাকে সববময়। কিন্তু রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সুখরঞ্জন সমাদ্দার ছাত্র-শিক্ষক মিলনায়তন কেন্দ্র (টিএসসিসি) চত্বরের চিত্র একদম ভিন্ন। বছরের প্রায় অধিকাংশ সময় চত্বরটি থাকে কোলাহলমুক্ত। কিন্তু শীত আসতে না আসতেই পাল্টে যায় টিএসসিসি চত্বরের চিত্র। পিঠা উৎসবকে কেন্দ্র করে প্রতিদিনই চত্বরে বসে বাহারী পিঠার দোকান। আর এসব দোকানের ধোঁয়া ওঠা গরম পিঠা খেতে খেতে জমে উঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং নগরীর বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা মানুষের আড্ডা।

শীতের বিকেলের রোদ পড়ার আগেই শুরু হয় পিঠা তৈরির কাজ। খোলা আকাশের নিচে অর্ধশতাধিক মাটির চুলায় বানানো হয় বাহারী সব শীতের পিঠা। স্থানীয় কিছু ব্যক্তি এবং বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া কিছু ছাত্র এসব পিঠার দোকানের উদ্দ্যোক্তা। কারিগর হিসেবে কাজ করেন স্থানীয় নারীরা। ক্রেতাদের পিঠা পরিবেশন করার জন্য সবুজ ঘাসের ওপর রঙিন পাটি বিছানো থাকে। পাশাপাশি কিছু চেয়ার-টুলও রয়েছে। শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাই নয় শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে বাহারী পিঠার স্বাদ নিতে আসর জমান নগরবাসী। এসব আড্ডার আসরে পিঠা পৌঁছে দিচ্ছেন দোকানের কর্মচারীরা। শিক্ষার্থীদের দোকানগুলোতে শিক্ষার্থীরাই পরিবেশনা করছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, টিএসসিসি চত্বরে প্রায় ১২টি পিঠার দোকান আছে। এসব দোকানে প্রায় ১৫ ধরনের পিঠা পাওয়া যায়। এর মধ্যে আতপ চালের আটা দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে চিতই পিঠা, চালের গুঁড়া দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে ভাপা পিঠা। আরও তৈরি হচ্ছে- তেল পিঠা, পাটিসাপটা, পুলি পিঠা, রস পিঠা, বকুল পিঠা, লাভ পিঠা, বিস্কুট পিঠা, ঝালপোয়া, চিকেন পুলি, দুধ চিতই ইত্যাদি। এসব পিঠাকে আরও সুস্বাদু করতে পাওয়া যায় ৭ পদের ভর্তা। বেগুন, শুঁটকিভর্তা, শর্ষে, ধনেপাতা, কাঁচা মরিচের ভর্তার সঙ্গে কালো জিরার ভর্তাও আছে। পিঠাভেদে দামেরও তারতম্য আছে। প্রতিটি স্পেশাল ভাপা পিঠা ২০ টাকা, সাধারণ ভাপা পিঠা ১০ টাকা, তেল পিঠা ১৫ টাকা, পাটিসাপটা ১৫ টাকা, চিতই পিঠা ১০ টাকা, পুলি পিঠা ৬ টাকা, রস পিঠা ১০ টাকা, বকুল পিঠা ৮ টাকা, লাভ পিঠা ১০ টাকা, বিস্কুট পিঠা ৬ টাকা এবং প্রতি প্লেট ভর্তা ১০ টাকা রাখা হয়। পরিধিভেদে প্রতিটি দোকানে দৈনিক আয় হয় ১০-৪০ হাজার টাকা।

পিঠা খেতে খেতে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিলেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী এনামুল হক। তিনি বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালের শীতের সন্ধ্যা মানেই টিএসসিসির পিঠা উৎসব। এখানে পিঠা খেতে হলে রীতিমত যুদ্ধ করতে হয়। একটু পরে গেলেই যেনো সিরিয়াল মেলা ভার। এখানের চিতই এবং ভাপা পিঠা খুবই ভালোলাগে। তবে চিতই পিঠার সাথে ভর্তা বেশি স্পেশাল।

নগরীর ফুলতলার বসিন্দা রাকিবুল ইসলাম। তার বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া বন্ধুদের সাথে মাঝে মাঝে ক্যাম্পাসে পিঠা খেতে আসেন। তিনি বলেন, শীতের সময়ে ক্যাম্পাসে আসতে বেশ ভালোই লাগে। এই সময়টাতে সবচেয়ে বেশি উপভোগ্য বিষয়টা হলো পিঠা। ক্যাম্পাসে বন্ধুবান্ধবের সাথে বসে পিঠা খাওয়ার মজাটা বাড়িতে বসে পাওয়া যায় না। তাই পিঠার স্বাদটা ভালোভাবে উপভোগ করার জন্য ছুটির দিনগুলোতে বিকেলে ক্যাম্পাসে ছুটে আসি পিঠা খেতে।

বিশ্ববিদ্যালযের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী শেখর রায়। পড়াশোনার পাশাপাশি একটি ছোট পিঠার দোকান দিয়েছেন। তিনি বলেন, পিঠার ব্যবসা করে ব্যবসায়িক নানা কৌশল শিখতে পারি। ছাত্র অবস্থায় আয়ের একটা চর্চা থাকে। তবে আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করি ভালো মানের পিঠা বিক্রি করে ক্রেতাদের মন জয় করতে। শিক্ষার্থীরা উৎসব পরিবেশে পিঠা খেতে আসে এইটা দেখে আমারো ভালো লাগে। ক্যাম্পাসের বাইরের শহরের নানা জায়গা থেকে লোকজন আমার দোকানে পিঠা খেতে আসে।

‘মাসুম আলীর শীতকালীন পিঠা’ দোকানের কর্ণধার মাসুম আলী। দীর্ঘ ৭ বছর ধরে শীতের সময়ে ক্যাম্পাসে পিঠার দোকান পরিচালনা করছেন। শীতের সময় দোকান পরিচালনা করেন, অন্য সময়ে রিকশা চালান। তিনি বলেন, ক্যাম্পাসে আমি গত সাত বছর ধরে পিঠা বিক্রি করছি। আমার দোকানে নারী-পুরুষ মিলিয়ে মোট ৪৮ জন কর্মচারী রয়েছে। দুপুর চারটা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত দোকান খোলা থাকে। প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৫০ হাজার টাকার মত বেচাকেনা হয়।

বিষয়:

রাবি
Ad

আইনজীবী মাসুমা মিথিলার ব্যতিক্রমধর্মী পোশাক প্রদর্শনীর উদ্বোধন

তরুণ প্রজন্মের চিন্তা চেতনাকে বিএনপি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে: আমিনুল হক

আইনজীবী মাসুমা মিথিলার ব্যতিক্রমধর্মী পোশাক প্রদর্শনী

ত্রুটিপূর্ণ খতনায় শিশুর লিঙ্গে ছিদ্র: কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হাইকোর্টের রুল

পাকিস্তানকে এগিয়ে রাখলেন যুবরাজ

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত