Ad T1

গাজার চিঠি

গাসসান কানাফানি
প্রকাশ : ১২ এপ্রিল ২০২৫, ১২: ২৪
প্রিয়,
আজ তোমার চিঠি পেয়েছি। তুমি জানিয়েছ, আমার প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা করে রেখেছ। আমি স্যাকরামেন্টোতে গিয়েই তোমার সঙ্গে থাকতে পারি। তুমি আরো লিখেছ, আমাকে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে গ্রহণ করা হয়েছে।
মোস্তফা, তোমাকে জানাতে চাই, তোমার প্রতি কৃতজ্ঞ আমি । তবে এখন যে খবরটি দেব, হয়তো তুমি তাতে অবাক হবে। বিশ্বাস করো, আমি একটুও দ্বিধাগ্রস্ত নই, বরং আজকের দিনে, এই মুহূর্তে, আমি আরো স্পষ্টভাবে জীবনের সত্যিকার চিত্র দেখছি। তাই, প্রিয় বন্ধু, আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, তোমার সঙ্গে আমি সেই ‘সবুজ ফসলের মাঠ, পানি ও সুন্দর মুখের দিকে’ যাব না, যার কথা তুমি লিখেছিলে। আমি এখানেই থাকব এবং এখান থেকে কখনো সরব না।
হ্যাঁ, আমার জন্য অস্বস্তিকর বটে যে, আমাদের জীবনপথ আর একই রেখায় চলমান থাকছে না। প্রায়ই আমার কানে বাজে তোমার-আমার সেই প্রতিজ্ঞা, যখন আমরা বলেছিলাম, ‘আমরা একসঙ্গে চলব, একসঙ্গে এগিয়ে যাব, একসঙ্গে ধনী হব।’ কিন্তু, প্রিয় বন্ধু, আমার কিছুই করার নেই।
সে দিনটির কথা আজও আমার মনে পড়ে, কায়রো বিমানবন্দর প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে আছি, তোমার হাত ধরে রেখেছি, বারে বারে পাগলাটে ইঞ্জিনটা দেখছি। সবকিছু যেন সেই ইঞ্জিনের সঙ্গে ঘুরছিল। তুমি দাঁড়িয়ে ছিলে আমার সামনে। তোমার মুখে কোনো ভাবান্তর ছিল না। শৈশবে গাজার ‘শুজাইয়া’য় যে-মুখ দেখেছি, সেই শান্ত, স্থির মুখটি অবিকল এখনো তোমার, কোনো বদল ঘটেনি। শুধু মসৃণ কয়েকটা বলিরেখা পড়েছে।
আমরা একসঙ্গে বেড়ে উঠেছিলাম বলে একে অপরকে ভালো বুঝতাম। একসঙ্গে চলতে চলতে অবশেষে একদিন আমাদের স্বপ্নগুলো পূরণ করব, এমন অঙ্গীকার করেছিলাম… কিন্তু; ‘আর মাত্র ১৫ মিনিট, তারপর প্লেন উড়াল দেবে। এত কী দেখছ, কিছুই নেই। শোনো, সামনের বছর কুয়েত চলে যাবে এবং তোমার বেতন থেকে কিছু কিছু জমাবে, তা দিয়ে গাজা থেকে ক্যালিফোর্নিয়া চলে যাবে। আমরা একসঙ্গে যেমন শুরু করেছিলাম, তেমনই চলতে হবে…।’
আমি লক্ষ করছিলাম, তোমার ঠোঁটগুলো দ্রুত নড়ছিল। এটাই ছিল তোমার কথা বলার ধরন—কোনো বিরতি বা ছেদ নেই। একই সঙ্গে অস্পষ্ট অনুভব করছিলাম, তোমার এই পালানোর সিদ্ধান্তে তুমি পুরোপুরি সন্তুষ্ট নও। পালানোর তিনটি যথাযথ কারণ বলতে বললেও তুমি খুঁজে পাবে না। আমি নিজেও এই দ্বন্দ্বে ভুগছিলাম। কিন্তু সবচেয়ে স্পষ্ট অনুভূতি ছিল—‘কেন আমরা গাজা ছেড়ে পালিয়ে যাই না?’ কেন? তবুও তোমার অবস্থা ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছিল। তুমি কুয়েতের পরিচিতদের সঙ্গে চুক্তি করতে পেরেছিলে, কিন্তু আমার সে সুযোগটা হলো না। সেই দুর্বিষহ সময়ে মাঝে মাঝে তোমার কাছ থেকে কিছু অর্থ পেতাম। তুমি বলতে আমাকে ‘ঋণ’ দিচ্ছ, যাতে আমার নিজেকে ছোট না লাগে। আমাদের পারিবারিক অবস্থা তুমি সবই জানতে; জানতে আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থার স্কুলে যৎসামান্য বেতন আমার, যা দিয়ে মা, ভাইয়ের বিধবা স্ত্রী আর তার চারটি সন্তানের খোরপোশ চলে কি চলে না।
‘ভালোভাবে শোনো, প্রতিদিন আমাকে লিখবে… প্রতি ঘণ্টায়… প্রতি মিনিটে। প্লেনের সময় ঘনিয়ে এসেছে। আল্লাহ তোমাকে নিরাপদে রাখুন। বলো, দেখা হবে নিশ্চয়… আবার দেখা হবে।’
তোমার ঠোঁটগুলো আমার গাল স্পর্শ করল। তারপর মুখ ঘুরিয়ে প্লেনের দিকে রওনা হলে। যখন আবার আমার দিকে তাকালে, দেখলাম, তোমার চোখে অশ্রু…।
ক’দিন পর কুয়েতের পরিচিতরা আমার সঙ্গেও চুক্তি করল। তোমাকে তো নতুন করে জীবনবৃত্তান্ত শোনাতে হবে না। যথাসময়ে সবকিছুই তো তোমাকে লিখেছি। আমার জীবন ছিল মন্থর, শূন্য; ছোট্ট একটা শামুকের মতো—একাকিত্বের ভারী জালে আটকে যাওয়া, এক অন্ধকার ভবিষ্যতের সঙ্গে ধীর গতিতে যুদ্ধ করা, এক নোংরা নৈমিত্তিকতা এবং সময়ের তালে মিলে চলা সংগ্রাম। সবকিছু ছিল কেমন এক তাপমাত্রার মতো, এক ধরনের পিছিয়ে পড়া প্রবাহ; পুরো জীবন যেন শেষ মাসটির অপেক্ষায়।
বছরের মাঝামাঝি সে বছর ইহুদিরা সাবাহ সেন্টার আক্রমণ করল। গাজা, আমাদের গাজা, আগুন ও বোমায় আছড়ে ফেলল। এই ঘটনা হয়তো আমার জীবনের রুটিনে কিছুটা পরিবর্তন আনতে পারত, কিন্তু তাতে আমার খুব একটা আগ্রহ ছিল না। কেননা গাজার কথা ভেবে কী হবে, আমি তো ক্যালিফোর্নিয়া চলে যাব, দীর্ঘ কষ্টকর জীবন থেকে মুক্তি পাব। গাজাকে ঘৃণা করি, গাজার মানুষদেরও। এই বিধ্বস্ত শহরের প্রতিটি কোণ আমাকে ব্যর্থ ছবির কথা মনে করিয়ে দেয়, যেন কোনো অসুস্থ ব্যক্তি মাটির রঙে এটা এঁকেছে। হ্যাঁ, আমি মাকে এবং ভাইয়ের বিধবা স্ত্রী ও তার সন্তানদের সামান্য অর্থ পাঠাতাম, এটা তাদের জীবনযাত্রায় সাহায্য করত। কিন্তু এখন আমিও এই শেষ বাঁধন থেকেও মুক্ত হয়ে যাব। ক্যালিফোর্নিয়াতে, যেখানে সেই সবুজ মাঠ ও পরাজয়ের গন্ধ থেকে বহু দূরে আমি স্বাধীনভাবে বাঁচব। যে সহানুভূতি ভাইয়ের সন্তানদের, তাদের মা ও আমার মায়ের প্রতি অনুভব করি, তা কি কখনো আমার এই মর্মান্তিক জীবনের ব্যাখ্যা হতে পারে? এই জীবনকে আর সহ্য করা সম্ভব নয়, আমি পালিয়ে যেতে চাই!
এসব অনুভূতির কথা তুমি জানো, মোস্তফা। তুমি নিজেও তা অনুভব করেছ—কী ছিল সেই অজ্ঞেয় রহস্য, যা আমাদের গাজার সঙ্গে এমনভাবে বেঁধে রেখেছিল যে, পালিয়ে যাওয়ার সব ইচ্ছা আটকে দিত? কেন আমরা এসব স্পষ্ট করে ব্যাখ্যা করতে পারি না? কেন আমরা এই পরাজয়, এই যন্ত্রণা, এই ক্ষতগুলো রেখে নতুন আর রঙিন জীবন বেছে নিতে পারি না? কেন? আমরা ঠিক জানতাম না।
জুন মাসে, সেবার ছুটিতে দেশে গিয়ে সমস্ত ইচ্ছা ও আকাঙ্ক্ষা জড়ো করে এক নতুন সূচনা করব, পরিকল্পনা করেছিলাম। ছোট ছোট আনন্দ, জীবনকে যা বর্ণময় করে তোলে—সেদিকে তীব্র টান অনুভব করছিলাম। কিন্তু গাজা পেলাম ঠিক আগের মতো—এক রুদ্ধ আবরণ, যেন নিজের ভেতরে প্যাঁচানো, যেন শ্যাওলা ধরা শামুকের খোলস, যাকে সমুদ্রে ঢেউ ছুড়ে দিয়েছে বালুকাময় স্যাঁতসেঁতে উপকূলে, কসাইখানার কাছাকাছি। গাজা, এই গাজা যেন দম বন্ধ করা এক দুঃস্বপ্নে আক্রান্ত ঘুমন্ত মানুষের নিঃশ্বাসের চেয়েও সংকীর্ণ, যেখানে গলিপথে ঘোরাফেরা করে কী এক চিরচেনা গন্ধ—পরাজয় ও দারিদ্র্যের গন্ধ, এক দুঃখী শহরের দুর্গন্ধ। আর তার বাড়িগুলো, যেন ছাদের কিনারা থেকে বেরিয়ে আসা কর্কশ কানাগলি... এখানে জীবন, এখানে পরিবেশ, এখানে ঘরবাড়ি—সবকিছুতে যেন আত্মবিশ্বাসের অভাব।
এটাই গাজা। কিন্তু কী সেই রহস্যময়, অস্পষ্ট জিনিস, যা মানুষকে টেনে নিয়ে আসে নিজের বাড়ি, তার নিজস্ব স্মৃতিতে—যেভাবে ঝরনার টান অনুভব করে পথ হারানো পাহাড়ি হরিণের দল? আমি জানি না। তবে জানি, সে সকালে আমি বাড়িতে মায়ের কাছে গেলাম। সেখানে দেখি আমার ভাইয়ের স্ত্রীকে। তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। নাদিয়া, ১৩ বছর বয়সী কন্যা, হাসপাতালে ভর্তি, তার জন্য সাহায্য চাইলেন।
আচ্ছা, তুমি কি নাদিয়াকে চেন? সেই সন্ধ্যায় আমি এক কেজি আপেল কিনে হাসপাতালে গেলাম নাদিয়াকে দেখতে। মনে হচ্ছিল, আমার মা ও ভাইয়ের স্ত্রী কিছু একটা লুকাচ্ছেন। এমন কিছু, যা তারা খুলে বলতে পারছেন না। অদ্ভুত কিছু হবে, কোনোভাবে ধরতে পারছিলাম না। আমি তো নাদিয়াকে ভালোবাসতে অভ্যস্ত। ভালোবাসতাম সেই পুরো প্রজন্মকে, যারা পরাজয় আর উদ্বাস্তু জীবনের দুধ খেয়ে বড় হয়েছে, এতখানি যে, তারা ভাবত, সুখী জীবন আসলে এক ধরনের সামাজিক বিচ্যুতি।
সেই মুহূর্তে কী ঘটেছিল? আমি জানি না। চুপচাপ সাদা রুমটায় প্রবেশ করলাম। অসুস্থ শিশুর মধ্যে একটা পবিত্র আভা থাকে। সেই শিশু যদি কঠিন ও যন্ত্রণাদায়ক আঘাতে আক্রান্ত হয়, তাহলে?
নাদিয়া বিছানায় শুয়ে আছে। তার পিঠ সাদা বিছানায় বিশ্রাম নিচ্ছে, আর সোনালি চুলগুলো রেশমের মতো ছড়িয়ে পড়েছে। তার বড় বড় চোখে ছেয়ে আছে গভীর নীরবতা। এক ফোঁটা অশ্রু চোখের গহিন কালো কন্দরে টলমল করছে। মুখটি শান্ত, তবে চেহারা যেন যন্ত্রণাবিদ্ধ প্রফেট।
নাদিয়া এখনো শিশুমাত্র…। তবে ওর বাড় হয়েছে অন্য শিশুদের চেয়ে বেশি, অনেক বেশি।
‘নাদিয়া…’ জানি না, শব্দগুলো কি আমিই বলেছিলাম, নাকি আমার পেছনে আর কেউ ছিল! কিন্তু সে চোখ তুলে আমাকে দেখল। মনে হলো, তার চোখ গরম চায়ে এক টুকরা চিনির মতো আমাকে গলিয়ে দিতে চায়। তার মৃদু হাসিমাখা কণ্ঠ শুনতে পেলাম, ‘চাচা… আপনি কি কুয়েত থেকে এসেছেন?’
তার কণ্ঠের শব্দ ভেঙে গিয়েছিল। কনুইয়ের সাহায্যে শরীর তুলে বসল। গলাটা বাড়িয়ে দিল আমার দিকে। আমি তার পিঠে হাত রাখলাম। কাছে বসে বললাম, ‘নাদিয়া, তোমার জন্য কুয়েত থেকে উপহার এনেছি, অনেক উপহার। তুমি সুস্থ হও, আমি অপেক্ষা করছি। যেদিন বিছানা ছেড়ে আমার কাছে আসবে, সেদিন সেগুলো তোমাকে দেব। তোমার জন্য সেই লাল প্যান্টও কিনে এনেছি, তুমি আনতে বলেছিলে না? সেটা এনেছি।’
এটা একটা ডাহা মিথ্যা। পরিস্থিতির চাপে বলতে হয়েছিল। কিন্তু যখন কথাটি বলছিলাম, মনে হচ্ছিল আমি সত্যি বলছি। নাদিয়া কেঁপে উঠল, যেন কোনো বজ্রবিদ্যুতের ঝটকায় আক্রান্ত হয়েছে, তারপর সে ভয়ে-আবেগে কতক্ষণ নিথর হয়ে রইল। টের পেলাম, তার অশ্রু আমার হাতের পিঠ ভিজিয়ে দিচ্ছে।
‘বলো, নাদিয়া… তোমার কি লাল প্যান্ট পছন্দ নয়?’
সে চোখ তুলে আমার দিকে তাকাল। কিছু বলার মতো মুখ খুলল, কিন্তু থেমে গেল। দাঁত চেপে ধরল। আর তখনই আবার শুনলাম, দূর থেকে যেন তার কণ্ঠ ভেসে এলো, ‘চাচা!’
হাতের আঙুল দিয়ে সাদা চাদরটা একটু উঠিয়ে আমাকে ইঙ্গিত করল—তার পায়ের ওপরের অংশটা কাটা।
প্রিয় বন্ধু, আমি কখনো ভুলব না নাদিয়ার কাটা পা। না, কখনো ভুলব না তার সুন্দর মুখে আটকে পড়া গভীর যন্ত্রণার সেই অসহ্য ‍দৃশ্য।
সেদিন হাসপাতাল থেকে বের হয়ে আমি গাজার রাস্তায় হাঁটতে থাকলাম। একপ্রকার ঘৃণার সঙ্গে হাতে শক্ত করে ধরে রেখেছিলাম সেই দুটি পাউন্ড, যা এনেছিলাম নাদিয়াকে দেব বলে । তীব্র রোদ গাজার রাস্তাঘাট যেন রক্তের রঙে ভরিয়ে দিচ্ছে। গাজা, প্রিয় মুস্তাফা, সেটা ছিল সম্পূর্ণ নতুন এক গাজা। আমি আর তুমি, এমন গাজা কখনো দেখিনি।
শুজাইয়া মহল্লার শুরুতে স্তূপ করে রাখা পাথরগুলো, যেখানে আমরা একসময় বাস করতাম, সেই পাথরগুলো যেন কথা বলছিল; যেন কেবল পরিস্থিতি ব্যাখ্যার জন্য সেগুলো রাখা হয়েছিল।
এই গাজা, যেখানে আমরা সাত বছর কাটিয়েছি তার সরল-সোজা মানুষদের সঙ্গে, নাকবার সময়ের মতো, সেই গাজা আজ একেবারেই ভিন্ন। মনে হচ্ছিল, এটি কেবল শুরু… কেন জানি মনে হচ্ছিল, এটি শুধুই শুরু।
আমি যখন বড় সড়কে হেঁটে হেঁটে বাড়ি ফিরছিলাম, মনে হচ্ছিল, এই সড়ক কেবল ক্ষুদ্র সূচনা, যার শেষ প্রান্তে আছে এক দীর্ঘ, দীর্ঘ মহাসড়ক। গাজার প্রতিটি বস্তু যেন নাদিয়ার উরু থেকে কাটা পায়ের শোকে কাঁপছিল—এমন এক শোক, যা শুধু কান্নায় থেমে থাকে না। এটা ছিল এক চ্যালেঞ্জ, বরং তারও বেশি, ছিল সেই কাটা পা ফিরে পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা!
আবার গাজার রাস্তায় বেরিয়ে পড়লাম। রোদের আলো ঝলসে দিচ্ছিল সর্বত্র। আমাকে বলা হয়েছিল, নাদিয়া তার পা হারিয়েছে। বোমা আর আগুন থেকে ছোট ভাইবোনদের বাঁচাতে সে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। বোমার একটা টুকরা ঘরের সঙ্গে আঁকড়ে ছিল। নাদিয়া চাইলে নিজেকে বাঁচাতে পারত, পালিয়ে যেতে পারত, নিজের পা বাঁচাতে পারত; কিন্তু সে তা করেনি! কেন?
না, বন্ধু। আমি স্যাক্রামেন্টোতে আসব না। একটুও অনুতাপ নেই আমার। না, আমি আর এগিয়ে নেব না সেই পথ, যা আমরা শৈশবে একসঙ্গে শুরু করেছিলাম। সেই অজ্ঞেয় অনুভূতি, যা তুমি গাজা ছেড়ে চলে যাওয়ার সময় অনুভব করেছিলে, সেই ছোট্ট অনুভবটি জাগিয়ে তুলতে হবে বিপুলকায় দৈত্যের মতো। তাকে বড় হতে দিতে হবে, বিস্তৃত হতে দিতে হবে, কারণ তার মাঝে লুকিয়ে আছে তোমার প্রকৃত আত্মপরিচয়। তোমাকে খুঁজে বের করতে হবে, যাতে তুমি নিজেকে খুঁজে পাও। এখানে, পরাজয়ের ধ্বংসাবশেষের মাঝে, আমি তোমার কাছে আসব না… তুমি বরং ফিরে এসো আমাদের কাছে। ফিরে এসো… ফিরে এসে নাদিয়ার উরু থেকে কাটা পায়ের কাছ থেকে শেখো—জীবন কী! অস্তিত্বের মানে কী!
ফিরে এসো, প্রিয় বন্ধু, আমরা সবাই তোমার অপেক্ষায় আছি!
অনুবাদ : মনযূরুল হক

বিষয়:

গাজা
Ad
এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত