Ad T1

ভর্তার কয়েক পদ

সুইটি আক্তার
প্রকাশ : ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ১৮: ৫৬
বাঙালি উৎসবপ্রিয় ও ভোজনরসিক। বাংলা বর্ষবরণের দিন নানা স্বাদের ঝাল-মিষ্টি খাবার তৈরিতে ব্যস্ত থাকেন রন্ধনশিল্পীরা। আমাদের দেশে ভর্তা পছন্দ করেন না এমন মানুষের সংখ্যা খুবই কম। দেশের প্রায় প্রতিটি ঘরেই প্রায় প্রতিদিনই নানা রকমের ভর্তা করা হয়। আর নববর্ষের দিন পান্তাভাতের সঙ্গে বিশেষ কিছু ভর্তা না থাকলে কি চলে! ভিন্ন স্বাদের ভর্তা দিয়েই সাজানো হয়েছে আজকের আয়োজন। ছবি ও রেসিপি দিয়েছেন রন্ধনশিল্পী সুইটি আক্তার
আলু-ডিম ভর্তা
উপকরণ : আলু ১টি (মাঝারি সাইজের), ডিম ২টি, কাঁচামরিচ কুচি ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ টেবিল চামচ, ধনেপাতা কুচি ১ চা-চামচ, লবণ ও সরষের তেল পরিমাণমতো।
প্রস্তুত প্রণালি : প্রথমে আলু ও ডিম সেদ্ধ করে নিন। খোসা ছাড়িয়ে আলু ও ডিম আলাদাভাবে চটকে নিন। এবার পেঁয়াজ-কাঁচামরিচ-ধনেপাতা কুচি, লবণ ও সরষের তেল দিয়ে ডিম ও আলু ভালোভাবে মেখে ভর্তা তৈরি করুন। একটি বাটিতে সুন্দর করে পরিবেশন করুন।
বেগুন-শুঁটকি ভর্তা
উপকরণ : ছুরি শুঁটকি ছোট করে কাটা এক কাপ, বেগুন মাঝারি আকারের ২টা, পেঁয়াজ কুচি এক কাপ, রসুন কুচি ১/২ কাপ, জিরা গুঁড়া আধা চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া আধা চা-চামচ, মরিচ গুঁড়া এক চা-চামচ, শুকনো মরিচ কুচি ২ চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, তেল ৩/৪ চা-চামচ।
প্রস্তুত প্রণালি : প্রথমে শুঁটকি মাছ গরম পানিতে ভালো করে ধুয়ে নিন। বেগুন কেটে সামান্য হলুদ আর লবণ দিয়ে সেদ্ধ করে নিন।
এবার প্যানে তেল দিয়ে পেঁয়াজ ও রসুন কুচি সামান্য ভেজে বাকি মসলা দিয়ে কষিয়ে মাছে দিয়ে দিন। প্রয়োজনে সামান্য পানি দিন। অল্প আঁচে মাছ সেদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত রান্না করুন। এবার বেগুন ভর্তা দিয়ে দিন। ভালো করে নেড়ে রান্না করুন।
ভর্তাটা শুকিয়ে তেল ছেড়ে এলে নামিয়ে নিন। সবশেষে বেগুন-শুঁটকি ভর্তা সুন্দরভাবে পরিবেশন করুন।
kalijira_
কালোজিরা ভর্তা
উপকরণ : কালোজিরা ১ কাপ, রসুনের কোয়া ৪ টেবিল-চামচ, মরিচ ১২টি, পেঁয়াজ কুচি ৪ টেবিল-চামচ, সরষের তেল ২ টেবিল-চামচ, লবণ পরিমাণমতো।
প্রস্তুত প্রণালি : প্রথমে রসুন, পেঁয়াজ ও মরিচ কাঠখোলায় টেলে নিতে হবে। তেল বাদে সব উপকরণ পাটায় বেটে নিন। এরপর তেল দিয়ে মেখে ভর্তা করুন।
কাঁচকলার ভর্তা
উপকরণ : কাঁচকলা বড় ৪টি (সেদ্ধ করে হাতে চটকানো), বড় পেঁয়াজ কাটা ২টি, কাঁচা মরিচ কুচি ৪টি, ধনেপাতা কুচি ২ টেবিল চামচ, হলুদ আধা চা চামচ ও লবণ ১ চা চামচ। তেল ২ টেবিল চামচ এবং শেষে ১ চা চামচ সরষের তেল।
প্রস্তুত প্রণালি : তেলে পেঁয়াজ লাল করে ভেজে সব উপকরণ একত্রে নেড়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিলেই কাঁচকলার ভর্তা তৈরি।
varta_2
varta_2
লইট্টা শুঁটকি ভর্তা
উপকরণ : লইট্টা শুঁটকি, শুকনা মরিচ, পেঁয়াজ কুচি, রসুন কুচি, ধনে পাতা কুচি, সরষের তেল ও লবণ।
প্রস্তুত প্রণালি : প্রথমে শুঁটকি মাছ গরম পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। এরপর পানি ঝরিয়ে কড়াইতে তেল ছাড়া ভালো করে ভাজতে হবে। অন্য একটি কড়াইতে সামান্য তেল দিয়ে শুকনা মরিচ, পেঁয়াজ কুচি ও রসুন কুচি ভেজে নিতে হবে। এরপর ভাজা শুকনা মরিচ ও শুঁটকিগুলো ভাজা ভাজা হলে পাটায় ভালো করে বেটে নিতে হবে। এবার ভাজা পেঁয়াজ কুচি, ভাজা রসুন কুচি, সরষের তেল, লবণ ও ধনে পাতা দিয়ে সেগুলো মাখিয়ে নিন। খিচুড়ির সঙ্গে পরিবেশন করুন স্বাদের লইট্টা শুঁটকি ভর্তা।
চিংড়ি ভর্তা
উপকরণ : ছোট চিংড়ি ২৫০ গ্রাম, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, রসুন কুচি ১ টেবিল চামচ, কাঁচামরিচ সাত-আটটি, হলুদ গুঁড়া সামান্য, আদা এক ইঞ্চি পরিমাণ, সরষের তেল স্বাদমতো, লবণ স্বাদমতো।
প্রস্তুত প্রণালি : প্রথমে চিংড়ি বেছে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। এখন একটি কড়াইয়ে তেল গরম করে তাতে প্রথমে চিংড়ি, সামান্য হলুদ গুঁড়া, লবণসহ কিছুক্ষণ ভেজে নিতে হবে। এরপর তাতে টুকরো করা রসুন, পেঁয়াজ ও কাঁচামরিচ দিয়ে ভালো করে ভাজা ভাজা করে নামিয়ে নিন। এবার শিলপাটায় আদাসহ মিহি করে বেটে তৈরি করে নিন চিংড়ির ভর্তা।
বরবটির ভর্তা
উপকরণ : সেদ্ধ করে হামানদিস্তায় ছেঁচে নেওয়া মাঝারি ১ বাটি বরবটি, বড় পেঁয়াজ কাটা ১টি, রসুন কুচি ৪ কোয়া, পুড়িয়ে নিয়ে হাতে চটকে নেওয়া শুকনো মরিচ ২টি, ধনেপাতা কুচি ২ টেবিল চামচ, লবণ আধা চা চামচ, তেল ২ টেবিল চামচ ও শেষে সরষের তেল ১ চামচ।
প্রস্তুত প্রণালি : তেলে রসুন লাল করে ভেজে সব উপকরণ একত্রে মিশিয়ে নিলেই বরবটির ভর্তা তৈরি।
রসুন দিয়ে কাঁচামরিচের ভর্তা
উপকরণ : কাঁচামরিচ ১০টি, রসুন ১/২ কাপ, ধনেপাতা কুচি ১/২ কাপ, লবণ পরিমাণমতো।
প্রস্তুত প্রণালি : রসুন ছিলে নিন, কাঁচামরিচের বোঁটা ছাড়িয়ে রাখুন। এবার তাওয়ায় কাঁচামরিচ ও রসুন ভালো করে টেলে নিন। এরপর সব উপকরণ একসঙ্গে বেটে নিন। তৈরি হয়ে গেল কাঁচামরিচ-রসুনের ভর্তা।
পটোল খোসা দিয়ে চিংড়ি ভর্তা
উপকরণ : পটোলের খোসা এক কাপ, মাঝারি সাইজের চিংড়ি মাছ পাঁচটি, পেঁয়াজ কুচি দুই টেবিল চামচ, রসুন কুচি এক চা-চামচ, আদা কুচি এক চা-চামচ, হলুদ সামান্য, শুকনো মরিচ চারটি, লবণ পরিমাণমতো, সরষের তেল এক টেবিল চামচ।
প্রস্তুত প্রণালি : পটোলের খোসা ছাড়িয়ে রাখুন। পটোলের খোসা ও চিংড়ি ভালো করে ধুয়ে হলুদ ও লবণ মাখিয়ে বাকি সব উপকরণসহ অল্প আঁচে সামান্য পানি ছিটিয়ে ভেজে নিন। এমনভাবে ভাজতে হবে যেন চিংড়ি সেদ্ধ হয়। ভাজা হলে এবার সব মিহি করে বেটে নিন।
এ মজাদার ভর্তা খুব সহজে বাসায় তৈরি করে ফেলুন এবং গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করুন।
লবঙ্গ লতিকা
উপকরণ : ময়দা বড় ২ কাপ, তেল ২ টেবিল চামচ, লবণ সামান্য, লবঙ্গ ১৫-২০টি, তেল ভাজার জন্য পরিমাণমতো, পানি প্রয়োজনমতো। ময়দা, তেল ও লবণ দিয়ে শক্ত খামির তৈরি করুন। কুরানো নারকেল ২ কাপ এবং গুড়/চিনি ১ কাপ একসঙ্গে জ্বাল দিয়ে পুর তৈরি করুন। চিনি ৪০০ গ্রাম ও পানি ১ কাপ জ্বাল দিয়ে সিরা তৈরি করে নিন।
প্রস্তুত প্রণালি : এবার খামির নিয়ে পাতলা রুটি বেলে তার মাঝখানে পুর দিয়ে চারকোনা পরোটার মতো ভাঁজ করে মাঝখানে একটি করে লবঙ্গ দিয়ে পিঠার মুখ আটকে দিন। এবার ডুবো তেলে ভেজে চিনির সিরায় কিছুক্ষণ রেখে তুলে নিন। ঠান্ডা হলে সাজিয়ে পরিবেশন করুন দারুণ মজার লবঙ্গ লতিকা।
গুড়ের সন্দেশ ও চিনির সন্দেশ
গুড়ের সন্দেশ
উপকরণ : নারকেল ১টি, আখের গুড় ১ পোয়া, সন্দেশের ছাঁচ, চেঁছে ধুয়ে রাখা নারকেলের মালা।
প্রস্তুত প্রণালি : গুড় ও নারকেল অল্প পানিতে মাখিয়ে চুলায় দিতে হবে। অল্প আঁচে ক্রমাগতভাবে নেড়ে খয়েরি করুন। তারপর নারকেলের মালা দিয়ে পিষে নিন। একপর্যায়ে নারকেল কড়াই থেকে উঠে আসবে। তখনই দ্রুত ছাঁচে ফেলে সন্দেশ বানিয়ে নিন। বাতাসে রেখে শুকান।
চিনির সন্দেশ
উপকরণ : মিহি করে বাটা ১টি নারকেল, চিনি ১ পোয়া, এলাচির গুঁড়া, অল্প ঘন দুধ, সন্দেশের ছাঁচ ও চেঁছে ধুয়ে রাখা নারকেল মালা।
প্রস্তুত প্রণালি : এলাচির গুঁড়া ছাড়া সব উপকরণ মাখিয়ে অল্প আঁচে চুলায় বসান। শুকিয়ে এলে এলাচির গুঁড়া দিয়ে দিন। আরো শুকিয়ে আঠা হয়ে এলে নারকেলের মালা দিয়ে পিষে নিন। একপর্যায়ে নারকেল কড়াই থেকে উঠে আসবে। তখনই দ্রুত ছাঁচে ফেলে সন্দেশ বানাতে হবে। তারপর বাতাসে রেখে শুকাতে হবে।
Ad
এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত