অপু তালুকদার শিপলু
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহনাফ আবীর আশরাফুল্লাহ ২৪-এর স্বাধীন বাংলাদেশ বিনির্মাণে, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার পতন যুদ্ধের একজন সাহসী যোদ্ধার নাম। আশরাফ টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলা সদরের বারপাখিয়া গ্রামের মো. হারুন অর রশিদ ও মা আছিয়া খাতুনের একমাত্র পুত্রসন্তান এবং তিন বোনের মধ্যে একমাত্র ভাই।
আশরাফ ছিলেন ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার এবং ঢাকার আশুলিয়ার মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিএসসি (ইইই) তৃতীয় বর্ষের মেধাবী ছাত্র। তিনি খণ্ডকালীন চাকরির পাশাপাশি সার্ভিসিং সেন্টার চালু করে আয় শুরু করেন। নিজের উপার্জিত অর্থেই পড়ালেখার খরচ চালাতেন এবং পরিবারকেও সাহায্য করতেন।
শৈশব থেকেই কেটেছে বাবার স্নেহহীনতায়। কারণ, আশরাফ যখন ছোট, তখনই তার বাবা পরিবার ছেড়ে অন্যত্র চলে যান। তার বাবার অনুপস্থিতিতে হাল ধরেন আহনাফের মা। বহু কষ্টে মা একাই পুরো পরিবারের সব দায়িত্ব পালন করেন এবং সন্তানদের সুশিক্ষায় বড় করতে শুরু করেন। এলাকায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে আরবি শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে যা আয় হতো, সেই টাকা দিয়ে ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া ও সংসারের খরচ চালাতেন তার মা। ভাঙা ঘরে থেকে জীবনসংগ্রামের দিনগুলোকে এগিয়ে নিতে থাকেন আহনাফের মা। দুঃখিনী মায়ের সব স্বপ্ন ছিল ছেলেকে ঘিরে। বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করে একদিন পরিবারের দৈন্যদশা ঘুচাবে আশরাফ অথচ তার আগেই হঠাৎ বেজে উঠে বিপ্লবের সুর...।
শুরু হয় জুলাই-আগস্ট-২৪-এর গণঅভ্যুত্থান। ফ্যাসিবাদী শক্তি নির্মূলে ছাত্র-জনতার অংশগ্রহণে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ ক্রমেই বেগবান হয়, যা পরে রূপ নেয় একদফা দাবিতে। ৫ আগস্ট-২৪ দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয় ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা।
ওইদিনই আশুলিয়া থানার বাইপাইল এলাকায় বুড়িরবাজার গলির মাথায় ফ্যাসিবাদী শক্তির বুলেটের আঘাতে শহীদ হন মো. আহনাফ আবীর আশরাফুল্লাহ।
শহীদ আশরাফের বোন অ্যাডভোকেট সাইয়েদা আক্তার বলেন, ৫ আগস্ট-২৪ তিনবার কথা হয় আমার সঙ্গে। তখন আশরাফ বাইপাইল রাস্তায় আন্দোলনে। খুব হইচই হচ্ছে তা শুনতে পাচ্ছি। আশরাফ আমার সঙ্গে দৌড়ে দৌড়ে কথা বলে। পরিস্থিতি কী জানতে চাইলে আশরাফ বলে, ‘গোলাগুলি চলতেছে’। আমি বললাম, ‘তুই সরে যা’, আশরাফ বলে, ‘ভাগ্যে যা আছে তাই হবে’।
তারপর যখন আশরাফের ফেসবুক আইডি থেকে আঙুলে গুলি লাগার ছবি পোস্ট করে, এরপর একবার কথা হয়। মাত্র আট সেকেন্ড আমার সঙ্গে সর্বশেষ কথা হয়, বলে, ‘আমি ঠিক আছি, এত কল দেস কেন, বারবার কল দিস না।’ এটাই আমাকে বলা ওর শেষ কথা। তারপর সন্ধ্যা ৬টার দিকে হাবিব হাসপাতাল থেকে মোবাইলে কল আসে, জানতে পারি, আশরাফ আর নেই। পেটে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আশরাফকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল।
শহীদ আশরাফের মা আছিয়া খাতুন আমার দেশকে বলেন, ‘আমার সব স্বপ্ন ছিল আশরাফকে নিয়ে। শেষ জীবনের ভরসা ছিল আশরাফ। সব স্বপ্নই তো শেষ হয়ে গেল। আল্লাহ যা চেয়েছেন, তাই হয়েছে। ওর জন্য কষ্ট লাগলেও আমার গর্ব হয় যে আমার ছেলে দেশের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেছে। আমি চাই, আমার ছেলের স্বপ্নের দেশ গড়ে উঠুক। এ দেশে আর কোনো দিন স্বৈরাচার ফিরে না আসুক। দুর্নীতিমুক্ত সুন্দর দেশ গঠন হোক।’
তিনি আরো বলেন, ‘সরকারিভাবে টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক, দেলদুয়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন, বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর কাছ থেকে আর্থিক অনুদান পেয়েছি। এজন্য কৃততা জানাই। তবে সারা পৃথিবী হাতের মুঠোয় তুলে দিলেও আমার ছেলে তো আর ফিরে পাব না, ছেলে হারানোর ক্ষতি পূরণ হওয়ার নয়।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহনাফ আবীর আশরাফুল্লাহ ২৪-এর স্বাধীন বাংলাদেশ বিনির্মাণে, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার পতন যুদ্ধের একজন সাহসী যোদ্ধার নাম। আশরাফ টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলা সদরের বারপাখিয়া গ্রামের মো. হারুন অর রশিদ ও মা আছিয়া খাতুনের একমাত্র পুত্রসন্তান এবং তিন বোনের মধ্যে একমাত্র ভাই।
আশরাফ ছিলেন ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার এবং ঢাকার আশুলিয়ার মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিএসসি (ইইই) তৃতীয় বর্ষের মেধাবী ছাত্র। তিনি খণ্ডকালীন চাকরির পাশাপাশি সার্ভিসিং সেন্টার চালু করে আয় শুরু করেন। নিজের উপার্জিত অর্থেই পড়ালেখার খরচ চালাতেন এবং পরিবারকেও সাহায্য করতেন।
শৈশব থেকেই কেটেছে বাবার স্নেহহীনতায়। কারণ, আশরাফ যখন ছোট, তখনই তার বাবা পরিবার ছেড়ে অন্যত্র চলে যান। তার বাবার অনুপস্থিতিতে হাল ধরেন আহনাফের মা। বহু কষ্টে মা একাই পুরো পরিবারের সব দায়িত্ব পালন করেন এবং সন্তানদের সুশিক্ষায় বড় করতে শুরু করেন। এলাকায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে আরবি শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে যা আয় হতো, সেই টাকা দিয়ে ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া ও সংসারের খরচ চালাতেন তার মা। ভাঙা ঘরে থেকে জীবনসংগ্রামের দিনগুলোকে এগিয়ে নিতে থাকেন আহনাফের মা। দুঃখিনী মায়ের সব স্বপ্ন ছিল ছেলেকে ঘিরে। বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করে একদিন পরিবারের দৈন্যদশা ঘুচাবে আশরাফ অথচ তার আগেই হঠাৎ বেজে উঠে বিপ্লবের সুর...।
শুরু হয় জুলাই-আগস্ট-২৪-এর গণঅভ্যুত্থান। ফ্যাসিবাদী শক্তি নির্মূলে ছাত্র-জনতার অংশগ্রহণে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ ক্রমেই বেগবান হয়, যা পরে রূপ নেয় একদফা দাবিতে। ৫ আগস্ট-২৪ দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয় ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা।
ওইদিনই আশুলিয়া থানার বাইপাইল এলাকায় বুড়িরবাজার গলির মাথায় ফ্যাসিবাদী শক্তির বুলেটের আঘাতে শহীদ হন মো. আহনাফ আবীর আশরাফুল্লাহ।
শহীদ আশরাফের বোন অ্যাডভোকেট সাইয়েদা আক্তার বলেন, ৫ আগস্ট-২৪ তিনবার কথা হয় আমার সঙ্গে। তখন আশরাফ বাইপাইল রাস্তায় আন্দোলনে। খুব হইচই হচ্ছে তা শুনতে পাচ্ছি। আশরাফ আমার সঙ্গে দৌড়ে দৌড়ে কথা বলে। পরিস্থিতি কী জানতে চাইলে আশরাফ বলে, ‘গোলাগুলি চলতেছে’। আমি বললাম, ‘তুই সরে যা’, আশরাফ বলে, ‘ভাগ্যে যা আছে তাই হবে’।
তারপর যখন আশরাফের ফেসবুক আইডি থেকে আঙুলে গুলি লাগার ছবি পোস্ট করে, এরপর একবার কথা হয়। মাত্র আট সেকেন্ড আমার সঙ্গে সর্বশেষ কথা হয়, বলে, ‘আমি ঠিক আছি, এত কল দেস কেন, বারবার কল দিস না।’ এটাই আমাকে বলা ওর শেষ কথা। তারপর সন্ধ্যা ৬টার দিকে হাবিব হাসপাতাল থেকে মোবাইলে কল আসে, জানতে পারি, আশরাফ আর নেই। পেটে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আশরাফকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল।
শহীদ আশরাফের মা আছিয়া খাতুন আমার দেশকে বলেন, ‘আমার সব স্বপ্ন ছিল আশরাফকে নিয়ে। শেষ জীবনের ভরসা ছিল আশরাফ। সব স্বপ্নই তো শেষ হয়ে গেল। আল্লাহ যা চেয়েছেন, তাই হয়েছে। ওর জন্য কষ্ট লাগলেও আমার গর্ব হয় যে আমার ছেলে দেশের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেছে। আমি চাই, আমার ছেলের স্বপ্নের দেশ গড়ে উঠুক। এ দেশে আর কোনো দিন স্বৈরাচার ফিরে না আসুক। দুর্নীতিমুক্ত সুন্দর দেশ গঠন হোক।’
তিনি আরো বলেন, ‘সরকারিভাবে টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক, দেলদুয়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন, বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর কাছ থেকে আর্থিক অনুদান পেয়েছি। এজন্য কৃততা জানাই। তবে সারা পৃথিবী হাতের মুঠোয় তুলে দিলেও আমার ছেলে তো আর ফিরে পাব না, ছেলে হারানোর ক্ষতি পূরণ হওয়ার নয়।’
‘শিক্ষার্থীদের প্রথম দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বাজেট বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত হয়েছে। দীর্ঘদিনের আবাসন সংকট নিরসনে অস্থায়ী হল নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, দ্বিতীয় ক্যাম্পাস বাস্তবায়ন প্রকল্পও দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে।’
১২ ঘণ্টা আগে‘সামান্য পানির বোতল নিক্ষেপের ঘটনাকে কেন্দ্র করে একজন শিক্ষার্থীকে ডিবি অফিসে জিজ্ঞাসাবাদে নেয়া হয়েছে। অথচ আমাদের শিক্ষক, সাংবাদিক ও সহপাঠীরা আন্দোলনের সময় বারবার হামলার শিকার হয়েছেন, সে বিষয়ে তো কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।’
১৪ ঘণ্টা আগেপ্রগতিশীল নেত্রীরা বলেন, এ কর্মসূচি কেবল নারীদের স্বার্থরক্ষা নয় বরং এটি একটি বৃহৎ রাজনৈতিক ও সামাজিক মুক্তির আন্দোলনের অংশ।
১৪ ঘণ্টা আগেজগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) ‘বোতলকাণ্ড’ ঘিরে চরম উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবি সুষ্ঠু তদন্ত ছাড়া সহপাঠী ইসতিয়াককে আটকের ঘটনায় যদি কোনো ক্ষতি হয়, তাহলে ডিবি অফিস ঘেরাও করা হবে।
১৫ ঘণ্টা আগে