Ad T1

সংবাদমাধ্যমের ভাবমূর্তি ধ্বংস করেছে ফ্যাসিস্ট সরকার: মাহমুদুর রহমান

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ০৮ মে ২০২৫, ১৪: ৩৪
আপডেট : ০৮ মে ২০২৫, ১৭: ২৭

আমার দেশ-এর সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেছেন, সংবাদমাধ্যমের ভাবমূর্তি ধ্বংস করেছে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার।

বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির আয়োজনে ‘গণমাধ্যম সংস্কার: সমস্যা ও করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

মাহমুদুর রহমান বলেন, গত ১৫ বছরে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার রাষ্ট্রের সব সংস্থাকে ধ্বংস করে গেছেন। এরমধ্যে পুলিশ, বিচার বিভাগ ও সংবাদমাধ্যম সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সিনিয়র সাংবাদিক নামধারী ব্যক্তিরা চাটুকারিতার মাধ্যমে গণমাধ্যমের ভাবমূর্তি ভূলুণ্ঠিত করে গেছেন। সেই অবস্থা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।

আমার দেশ সম্পাদক বলেন, অনেকেই গণমাধ্যমকে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করার কথা বলছেন। এটা করতে হলে প্রথমে সাংবাদিকদের মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে হবে।

তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে আমরা সবাই স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারছি, ইচ্ছামত লিখতে পারছি। এই সরকার হয়তো আগামী এক বছরের মধ্যে নির্বাচন দিয়ে চলে যাবে। এরপর সাংবাদিকদের কী ভূমিকা হবে তা এখনোই চিন্তা করতে হবে। সংবাদমাধ্যম কিংবা সাংবাদিকরা যদি কোনো রাজনৈতিক দল কিংবা প্রতিষ্ঠানের চাটুকারিতা করে তাহলে কখনোই গণমাধ্যমের ইমেজ পুনরুদ্ধার হবে না।

আমার দেশ সম্পাদক বলেন, ২০০৬ সাল পর্যন্ত সাংবাদিক ও গণমাধ্যমের যে ধরনের ইমেজ ছিল, তা সাংবাদিকরা নিজেরাই নিজেদের সম্মান হানি করে গেছেন। কিছু সিনিয়র সাংবাদিক নামধারী ব্যক্তিরা কীভাবে তৈলমর্দনের মাধ্যমে গণমাধ্যম ও সাংবাদিকদের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করেছেন তা আমরা সবাই প্রত্যক্ষ করেছি।

মাহমুদুর রহমান বলেন, আমার দেশ কারো চাটুকারিতা করবে না, সরকারের ভুলত্রুটি তুলে ধরতেও কুণ্ঠাবোধ করবে না। এরই মধ্যে আমার দেশ তা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে। আমার দেশ কখনো কোনো এলিট শ্রেণির গণমাধ্যম হবে না, গণমানুষের গণমাধ্যম হিসেবে সবসময় ভূমিকা পালন করবে।

ঈদের ছুটি বিষয়ে তিনি বলেন, গণমাধ্যম কর্মীদের ঈদের ছুটি অন্তত চারদিন হওয়া উচিত। আর যারা অনলাইনে কাজ করেন তাদেরকে ঈদের ছুটিতে আর্থিকভাবে সুবিধা দেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম. আব্দুল্লাহ বলেন, এক শ্রেণির এলিট সম্পাদকরা ৫ আগস্টের আগে ও পরের অবস্থা একই বলে বর্তমানের এই পরিবর্তনকে অস্বীকার করার চেষ্টা করছেন। তা হলে তো সুবিচার হলো না। বিগত ১৫ বছরে গণমাধ্যম ছিল সরকারি বিভিন্ন সংস্থার কাছে জিম্মি, তারা নির্ধারণ করে দিতো কোন রিপোর্ট প্রকাশ করা যাবে আর কোনটা প্রকাশ করা যাবে না। এখন তো আর সে অবস্থা নেই। ফলে ৫ আগস্টের পরে যে পরিবর্তন হয়েছে তা স্বীকার করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সুপারিশসমূহ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া শুরু করেছে সরকার। ফলে বিচ্ছিন্নভাবে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের রিপোর্টের সমালোচনা না করে সংবিধান সংস্কার কমিশনের রিপোর্টের মতো আমাদেরকে টু দ্যা পয়েন্টে আলোচনা করে সুপারিশ করতে হবে।

বিএফইউজে এবং ডিইউজের সাংবাদিক নেতাদের গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনে অন্তর্ভুক্ত না করার বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহীদুল ইসলাম বলেন, গণমাধ্যমের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা বিএফইউজে এবং ডিইউজের সাংবাদিক নেতারা দেনদরবার করে সমাধান করলেও তাদেরকে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এরফলে সাংবাদিকদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট অনেক বিষয় এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে।

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সহসভাপতি গাজী আনোয়ারের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম. আব্দুল্লাহ, দ্যা ডেইলি ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহীদুল ইসলাম, যুগ্ম সম্পাদক দিদারুল আলম, রিপোর্টার্স ইউনিটির উপদেষ্টা আসিফ শওকত প্রমুখ। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জার্নালিস্ট কমিউনিটি অব বাংলাদেশ-এর সদস্য সচিব মিয়া হোসেন। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক মাইনুল ইসলাম।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত