বাংলা বর্ষবরণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা অনুষদ কর্তৃক আয়োজিত 'বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা'য় জন্য বানানো ফ্যাসিবাদের মোটিফ পুড়ানোর ঘটনায় সেই মোটিফের আদলে পুনরায় তৈরি হচ্ছে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার মুখাকৃতির মোটিফ। ইতোমধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। রোববার রাতের মধ্যেই কাজ সম্পন্ন হবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

রোববার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে চারুকলায় সরেজমিনে গিয়ে মোটিফ নতুন করে মোটিফ বানানোর কর্মযজ্ঞ দেখা যায়। গতকাল রাত থেকে এই মোটিফ বানানোর কাজ শুরু হয়েছে বলে জানান সেখানে দায়িত্বরত চারুকলার সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা।

নতুন করে তৈরি করা এই মোটিফটি ১৬ ফিট উচ্চতার হতে যাচ্ছে। এতে কাঠের স্ট্রাকচার, বোর্ড এবং থার্মোকল (শোলা) দিয়ে বানানো হচ্ছে। বানানোর কাজটি করছেন চারুকলার সাবেক ও বর্তমান কয়েকজন শিল্পী।

চারুকলা ঘুরে দেখা যায়, ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানিয়ে তরমুজের ফালি, বাঘ, ইলিশ মাছ ও পালকির মোটিফ প্রস্তুত রয়েছে। ৩৬ জুলাই টাইপোগ্রাফি ও মুগ্ধর পানির বোতলের কাজ এখনো চলমান রয়েছে।

এছাড়াও, আগুনে পুড়ে আংশিক ক্ষতি হওয়া শান্তির পায়রা মোটিফটি নিয়েও কাজ করছে শিল্পীরা। সেটির কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে।

নতুন করে ফ্যাসিবাদের মোটিফ বানানোর বিষয়ে চারুকলার ১৯৮৯-৯০ শিক্ষাবর্ষের প্রাক্তন শিক্ষার্থী শহিদুল ইসলাম শহীদ বলেন, গতকাল শনিবার রাত থেকেই আমরা থার্মোকল (শোলা) দিয়ে পুনরায় ফ্যাসিবাদের মুখাবয়ব বানানোর কাজ শুরু করি। ইতোমধ্যে এটি বানানোর কাজ প্রায় ৫০ শতাংশের কাছাকাছি গেছে। আশা করছি, আজ রাতের মধ্যেই এটি শেষ হবে।

মোটিফটি গঠন সম্পর্কে তিনি বলেন, ১৬ ফিট উচ্চতার এই মোটিফটি নিচে কাঠের স্ট্রাকচার, পরে বোর্ড এবং উপরে মুখাবয়বে শোলা ব্যবহার করা হয়েছে। চারুকলার সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা এই কাজগুলো দ্রুতগতিতে করছে।

মোটিফ বানানোর এই কর্মযজ্ঞে কর্মরত মোহা. বুলবুল বলেন, যেই মোটিফটি পুড়ে গেছে ওটা বানাতে ২০ দিনেরও বেশি সময় লেগেছিলো। নতুন করে মোটিফটি বানাতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি, আজকে রাতের মধ্যে শেষ করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। আশা করছি, রাতের মধ্যে কাজ শেষ হবে এবং আমরা কালকে শোভাযাত্রায় দিতে পারবো।

এবিষয়ে চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আজহারুল ইসলাম শেখ বলেন, মোটিফটি এখনো র্নিমাণের কাজ চলছে। এখনো কাজ শেষ হয়নি। শেষ না হওয়া পর্যন্ত এখনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি মোটিফটি শোভাযাত্রায় যাবে কিনা। কাজ শেষ হলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এর আগে ১২ এপ্রিল রাতে চারুকলা অনুষদ প্রাঙ্গণে আনন্দ শোভাযাত্রার অগ্রগতি পরিদর্শনকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ বলেন, আমরা একটি উদ্যোগ নিয়েছিলাম, সেখানে বাধা এসেছে। এ ধরনের কাজে কিছু বাধা আসেই, ষড়যন্ত্র থাকবেই। আল্লাহর ওপর ভরসা করে এসব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে শত্রুর মুখে ছাই দিয়ে আমরা এগিয়ে যাব। এতে সবার সহযোগিতা কামনা করছি। আমরা এই মুহূর্তে একটি জাতীয় দায়িত্ব পালন করে আসছি। এসময় সবাইকে প্রশাসনের পাশে থাকার আহ্বান জানান তিনি।