এলডিসি গ্রাজুয়েশন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক
স্টাফ রিপোর্টার
২০২৬ সালে বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণ নিয়ে সংশ্লিষ্ট শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ ক্ষেত্রে পূর্ণগতিতে এগিয়ে যেতে সম্ভাব্য সব ধরনের চ্যালেঞ্জ বিবেচনায় নিয়ে এখন থেকেই প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। বাণিজ্য নিয়ে ডেডিকেটেড একটা সেল করা হচ্ছে। এ ছাড়া সার্বক্ষনি তদারকি করার জন্য একটি উচ্চ পর্যায়ের মনিটরিং কমিটিও করা হবে।
বৈঠক শেষে মঙ্গলবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানানো হয়। এদিন প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এলডিসি বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে বৈঠক হয়। সেখানে আরও উপস্থিত ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদ, পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন, শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর প্রমুখ।
চ্যালেঞ্জ থাকলেও ২০২৬ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে এলডিসি থেকে উত্তরণের ক্ষেত্রে পিছিয়ে আসার সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার অর্থনীতি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী। তিনি বলেন, এলডিসির উড়োজাহাজ এখন আকাশে উড়ছে। ইমারজেন্সি ল্যান্ডিংয়ের সুযোগ নেই।
বৈঠকে এলডিসি উত্তোরণের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, কোন কোন বিষয়ে আমরা শক্ত অবস্থানে আছি এবং কোন কোন বিষয়ে আরও শক্ত হতে হবে তা চিহ্নিত করেছি। পর্যালোচনায় আমরা সন্তুষ্ট। আমাদের প্লেন চলবে, ক্রাশ করার কোন সম্ভাবনা তেমন নেই।
এলডিসি উত্তোরণের পরে যাতে দেশের কোন সমস্যা না হয় সেই জন্য পূর্বপ্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, সেখানে আমাদের কর্মসংস্থান ও বেসরকারি খাতের ওপর চাপ আসতে পারে। তা মোকাবিলায় বৈঠকে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, আমাদের নীতিমালায় সম্ভাব্য দুর্যোগ কি হতে পারে তা তালিকাভুক্ত করেছি। সেইভাবে প্রস্তুতি থাকবে। একটি উচ্চ পর্যায়ে কমিটি হচ্ছে, যারা সার্বক্ষণিক এটাকে তদারকি করবে। পর্যবেক্ষক কমিটিতে সরকারি কর্মচারীর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বিশেষজ্ঞ, বেসরকারি খাত এবং সম্ভাব্য ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এমন খাত থেকে লোক নেব।
বাংলাদেশ থেকে দুর্বল অর্থনীতির দেশ এলডিসি উত্তরণ করেছে দাবি করে তিনি বলেন, সম্প্রতি ভুটান এলডিসি উত্তরণ করেছে। ওরা পারলে আমরা পারব না কেন? সে আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে। দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্র সামোয়া এলডিসি উত্তরণ করেছে। তাই আমাদের উত্তরণ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই।
এলডিসি উত্তরণ থেকে পেছানোর দাবি প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, এটা অবান্তর। আমরা এখন যে ডিউটি ফ্রি এক্সেস ২০২৬ সালে বন্ধ হয়ে যাবে না। আমাদের এরই মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ২০২৯ সাল পর্যন্ত প্রস্তাব দিয়েছে। অস্ট্রেলিয়া, জাপান, যুক্তরাজ্য, চীন আমাদের চলমান সুযোগ অব্যাহত রাখার কথা জানিয়েছে। ব্যবসায়ীদের চিন্তা এরই মধ্যে কাটিয়ে উঠেছি। এটা দৃষ্টিভঙ্গি ও বোঝার অভাব।
সম্ভাব্য দুর্যোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা আছে। আমাদের বাণিজ্যের জন্য আলাদা কোন সংস্থা নেই। এটার জন্য এরই মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ডেডিকেটেড একটা সেল থাকবে, যারা শুধু ট্রেডের বিষয়ে কাজ করবে। তারা বদলি হবে না। আমরা শক্ত একটা ট্রেড নেগোসিয়েটিং বডি রেডি করব। সন্দেহের জায়গায় কাজ শুরু করে দিয়েছি।
এলডিসি উত্তরণ হলে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পে কোন ক্ষতির শিকার হবে না মন্তব্য করেন ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী। এলডিসি উত্তরণ করলে বাংলাদেশ কি সুবিধা পাবে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আপনি সুবিধা পাওয়ার জন্য করবেন কেন? সুবিধা সৃষ্টি করে নেবেন। ভিক্ষার মানসিকতা থাকবে কেন? এটাতো আমাদের কলোনিয়াল হ্যাংওভার। আমরা সুবিধা তৈরি করে নেব। বিনিয়োগ সম্মেলন করলাম। প্রধান উপদেষ্টা এরই মধ্যে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক হাব হবে। আমি যদি সব সময় ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে ঘুরি, তাহলে কীভাবে অর্থনৈতিক হাব হবে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের প্রধান চ্যালেঞ্জ হচ্ছে সুশাসন বলে জানান আনিসুজ্জমান চৌধুরী। দুর্নীতি বন্ধে সরকার উদ্যোগ নিয়েছে একই সঙ্গে ব্যবসার সুবিধার জন্য সরকারের নানান কর্মসূচির কথা তুলে ধরেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা একাধিকবার বলেছেন কম সংস্কার হলে ডিসেম্বরে নির্বাচন বেশি হলে আগামী বছরের জুনে নির্বাচন, কম এবং বেশি সংস্কারের প্যারা মিটার সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, পুরো বিষয়টি নির্ভর করবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে চলা রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপের ওপর। দলগুলো যেসব বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাবেন, সেটার ওপর নির্ভর করবে আমরা কতটুকু সংস্কার করতে যাচ্ছি।
পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক সরকার কীভাবে দেখছে, এটা কি প্রো-পাকিস্তানি কূটনীতি নাকি স্বাভাবিক কূটনীতি এমন প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব বলেন, দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রধান উপদেষ্টার ফরেন পলিসি হচ্ছে সার্কের পুনরুজ্জীবিত করা এবং সার্কভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন। পাকিস্তান সার্কভুক্ত দেশ, তাদের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন চাচ্ছি। ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন চাচ্ছি। ভুটান ও নেপালের সঙ্গেও চাচ্ছি। গত সপ্তাহে সিদ্ধান্ত এসেছে আমরা নেপালের জন্য একটা অর্থনৈতিক অঞ্চল করব। এটার জন্য উত্তরবঙ্গে জমি দেখছি। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রীর সঙ্গে দুই দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট সব বিষয়ে আলোচনা হবে। আমাদের পররাষ্ট্র নীতি হচ্ছে প্রো-বাংলাদেশ। কূটনীতিতে বাংলাদেশের স্বার্থ যতটুকুভাবে অক্ষুণ্ন রাখা যায় তা করছি। এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা নিবিড়ভাবে কাজ করছেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির (বিএমটিএফ) সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) সুলতানুজ্জামান মো. সালেহ উদ্দিন এবং তার বাবা মো. কমর উদ্দিনের বিদেশ গমন নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
২ ঘণ্টা আগেদেশে ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সময়ের মধ্যে দায়েরকৃত রাজনৈতিকভাবে হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের জন্য মন্ত্রণালয় পর্যায়ে গঠিত কমিটি কর্তৃক ইতোমধ্যে সুপারিশকৃত মামলাসমূহের তালিকা আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ওয়েবসাইটে প্রকাশ করবে স্বরাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রণালয়।
২ ঘণ্টা আগেপোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগদান শেষে ঢাকার উদ্দেশে রোম ছেড়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
৪ ঘণ্টা আগেউপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেছেন, আমাদের দেশে আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে গৃহকর্মীদের অধিকার সুরক্ষিত হচ্ছে না। শিক্ষায় পশ্চাৎপদের কারণে গৃহকর্মীরা তাদের কর্মক্ষেত্রে নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হন।
৫ ঘণ্টা আগে