Ad T1

ফিলিস্তিনে গণহত্যা : বিশ্ববিবেক জাগ্রত হোক

সফিউল ইসলাম
প্রকাশ : ১০ এপ্রিল ২০২৫, ১২: ৪৯

শত শত বছর ধরে রক্ত ঝরছে ফিলিস্তিন ঘিরে। ১৯৪৮ সালে ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর থেকে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে বারবার গণহত্যা চালিয়েছে ইসরাইল সরকার। ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করে অবৈধভাবে ক্রমেই সম্প্রসারণ করা হয়েছে ইসরাইল রাষ্ট্রের সীমানা। বর্তমানে ইসরাইলের বর্বরতার কারণে ফিলিস্তিনিদের টিকে থাকা অসম্ভব হয়ে উঠেছে সেখানে। ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরাইলের সীমাহীন বর্বরতার পরপরও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ভূমিকা শুধু বিবৃতি এবং নিন্দার মধ্যে সীমাবদ্ধ। প্রশ্ন ওঠে, বিশ্ববিবেক কি আজও জীবিত, নাকি এটি শুধুই ক্ষমতার রাজনীতির শিকার?

পশ্চিমতীর ১৯৬৭ সাল থেকে ইসরাইলের দখলে। সেখানে রয়েছে নামেমাত্র একটি ফিলিস্তিন সরকার। বাকি ছিল গাজা। সেই গাজাও আজ ধ্বংসস্তূপ। ইসরাইল গাজাকে শুধু মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিয়েই ক্ষান্ত নয় বরং এখন তারা সেখানকার সব মানুষ মেরে ফেলতে চাইছে। যুদ্ধবিরতির মধ্যে ফিলিস্তিনিরা উদ্বাস্তু শিবির থেকে ফিরে এসেছিল ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া বসতভিটায়। কিন্তু তারপরও রক্ষা নেই তাদের। ইসরাইল প্রতিদিন বোমা হামলা চালিয়ে হত্যা করছে তাদের। একদিকে বোমা হামলা চালিয়ে হত্যা করছে, অন্যদিকে অবরোধ করে ক্ষুধাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে তাদের ধুঁকে ধুঁকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। জাতিসংঘ, ওআইসি, আরব লীগসহ বিশ্বে যত সংস্থা আছে, সব যেন আজ অসহায় ইসরাইলের কাছে।

যুগ যুগ ধরে চলা ইসরাইলের বর্বরতার বিরুদ্ধে যখনই ফিলিস্তিনিরা কোনো আক্রমণ চালিয়েছে, তখনই ইসরাইল তাদের বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছে সর্বশক্তি দিয়ে। আর পশ্চিমারা ইসরাইলকে প্রতিবার সমর্থন দেয় ইসরাইলের আত্মরক্ষার অধিকার বলে।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বিভিন্ন অঞ্চলে মানবাধিকারের জন্য কড়া অবস্থান গ্রহণ করে, কিন্তু ফিলিস্তিনের ক্ষেত্রে তাদের নীতি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দ্বিমুখী। যুক্তরাষ্ট্রসহ কিছু পশ্চিমা শক্তি ইসরাইলকে সব ধরনের সামরিক ও অর্থনৈতিক সহায়তা দিয়ে আসছে। অন্যদিকে, মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন আরব দেশগুলোর ভূমিকাও অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। তারা ফিলিস্তিনিদের ত্রাণ দিয়ে সহায়তা করে কিন্তু ইসরাইলের গণহত্যা বন্ধে কোনো পদক্ষেপ নেয় না। ফিলিস্তিনের রক্তগঙ্গার সামনে বিশ্ববিবেক কতটা কার্যকর, তা আজ একটি বড় প্রশ্ন। একদিকে মানবাধিকারের বুলি আওড়ানো হয়, অন্যদিকে ফিলিস্তিনের রক্তাক্ত বাস্তবতা উপেক্ষা করা হয়।

ফিলিস্তিন সমস্যার সমাধানের জন্য ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের জন্য পৃথক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আজ যদি ফিলিস্তিনের জন্য বিশ্ব একত্র না হয়, তাহলে ভবিষ্যতে আরো অনেক জাতি এমন দুঃসহ পরিণতির শিকার হবে। এখন সময় এসেছে এই রক্তগঙ্গার সামনে নীরবতা ভাঙার, অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর এবং বিশ্ববিবেককে আবার জাগানোর।

লেখক : শিক্ষার্থী, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ

ফেনী সরকারি কলেজ

বিষয়:

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত