Ad T1

জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্ট মতে

হাসিনা পৃথিবীর নিকৃষ্টতম ও ঘৃণিত শাসক: সালাহউদ্দিন

এস এম ইউসুফ আলী, ফেনী
প্রকাশ : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২০: ১৯
আপডেট : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২০: ১৯

বিএনপির কেন্দ্রীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্ট মতে ফ্যাসিস্ট হাসিনা পৃথিবীর নিকৃষ্টতম ও ঘৃণিত শাসক ছিলেন।

শেখ হাসিনা ও তার দল আওয়ামী লীগ ও নেতাকর্মীরা গণহত্যায় জড়িত এটা এখন বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত ও প্রমাণিত।

আওয়ামী লীগের ইতিহাস পলায়নের ইতিহাস। তার পিতাও স্বাধীনতার ঘোষণা না দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার ইতিহাস। আওয়ামী লীগের ইতিহাস গণতন্ত্র হত্যার ইতিহাস। ৬৯ সালেও মাত্র ১৭ ঘণ্টায় একদলীয় বাকশাল কায়েমের করেছিলেন তার পিতা।

পরবর্তীতে শেখ হাসিনাও ক্ষমতায় এসে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে দিনের ভোট রাতে এবং আমি আর ডামি নির্বাচনের নামে একদলীয় স্বৈরশাসন কায়েম করেছিলেন। তাকে এদেশের মানুষ পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছেন।

সরকারের উপদেষ্টাদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে আনুন।মানুষ সংস্কার বুঝেনা, তারা পরিবার বুঝেন।অতএব, সংস্কার সংস্কার করে সময় ক্ষেপণ করবেন না।আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখুন।

রোববার দ্রব্য মূল্যের উর্ধ্বগতিরোধ, আইনশৃঙ্খলার উন্নতি, পতিত স্বৈরাচারের দোসরদের বিচার ও দ্রুত নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণাসহ চার দফা দাবিতে ফেনীর মিজান ময়দানে জেলা বিএনপির জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখবেন দলটির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক সাংসদ জয়নাল আবেদীন ভিপি, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হারুনুর রশিদ, কেন্দ্রীয় কমিটির গ্রাম বিষয়ক সম্পাদক বেলাল আহমেদ, সহ-প্রশিক্ষণ সম্পাদক রেহেনা আক্তার রানু, সদস্য আবদুল লতিফ জনি, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাড. মেজবাহ উদ্দিন, জালাল উদ্দীন মজুমদার, অ্যাড. শাহানা আক্তার শানু, আবু তালেব, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মশিউর রহমান বিপ্লব।

ফেনী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শেখ ফরিদ বাহারের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলাল উদ্দিন আলাল, যুগ্ম-আহবায়ক অধ্যাপক এম এ খালেক, যুগ্ম-আহবায়ক গাজী হাবিব উল্যাহ মানিক।এসময় তাঁরা বলেন,৭১ সালে আমরা যে উদ্দেশ্যে দেশ স্বাধীন করেছিলাম তার চার মাসের এক নেতার এক দেশ বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ কায়েম করে তা নস্যাৎ করা হয়েছিল। এবারও স্বৈরাচারী শেখ হাসিনাকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করে নির্বাচনের কথা বলতে হচ্ছে।এজন্য ডিসেম্বরের পর আর কোনো সময় দেওয়া সম্ভব নয়।

সংস্কার করে নির্বাচনকে বিলম্বিত করা যাবে না।যতক্ষণ পর্যন্ত জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে না।আমরা রাজপথ ছেড়ে যাবো না।

এখন যারা মুখে ধর্মের কথা বলে, তাদের অন্তরে মুনাফেকি। বিএনপিকে কেউ ভয় দেখাবেন না। প্রয়োজন হলে আবারও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশ ফেলে আমাদের নেতাকর্মীরা রাজপথে নামতে প্রস্তুত রয়েছে। গত ১৬ বছর যারা জীবন দিয়েছেন, তাদের ৯০ ভাগই বিএনপির। স্বৈরাচারদের পক্ষে কেউ মামলায় লড়বেন না। করলে তাদেরকেও চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা হবে।

ফেনীতেও হাসিনার সন্ত্রাসী নিজাম হাজারী,আলাউদ্দিন নাসিম, মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী আমাদের অনেক নেতাকর্মীকে গুম, খুন ও নির্যাতন করেছে। তাদেরকে দেশে ফিরিয়ে এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার পতনের মধ্য দিয়ে আবারও প্রমাণিত হয়েছে। দুনিয়াতে মহান আল্লাহর বিচার হয়েছে।এখন শেখ হাসিনা ও ফেনীর নিজাম হাজারীসহ আওয়ামী খুনিদের দ্রুত বিচার ও নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। তবে,কিছুতেই স্থানীয় নির্বাচন, জাতীয় নির্বাচনের আগে নয়।

আয়না ঘরে যে চেয়ারে বসিয়ে হাসিনা বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের নির্যাতন করেছে।সেই চেয়ারে বসিয়েই ওই ফ্যাসিস্টকে একই কায়দায় উচিত শিক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক।যারা সংস্কার চাচ্ছেন,তাদের উদ্দেশ্য করে বিএনপি নেতারা বলেন, আপনার আমাদের নেতা তারেক রহমানের সঙ্গে বসেন।সংস্কার কাকে বলে তিনি দেখিয়ে দিবেন।

দেশে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হচ্ছে। জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত এর সমাধান সম্ভব নয়।বিগত ১৭ বছরের গুম-খুনের নায়িকা স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার অনেক হিসাব বাকি রয়েছে। এখনও তার দোসররা প্রশাসনের বিভিন্ন পদে বসে আছে। এদের খুঁজে বের করতে হবে।না হলে দেশ স্বৈরাচারমুক্ত করা সম্ভব হবে না।

একটি দল জুলাই বিপ্লবে বিএনপির অবদানকে ছোট দেখার অপচেষ্টা করছে।অথচ,ওই দলটি বিএনপির সঙ্গে নির্বাচন করে ১৮টি আসন পেয়েছিল,আর এককভাবে করে পেয়েছিল মাত্র ৩টি আসন।আমরা তাদেরকে বলবো পূর্বের কথা মনে রেখে সামনে চলার চেষ্টা করবেন।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের উদ্দেশ্য করে তারা বলেন, 'তোমরা যে আকাঙ্ক্ষা নিয়ে মাঠে নেমেছিলে সেখান থেকে সরে গিয়ে দল গঠন ও সংস্কার নিয়ে ব্যস্ত। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি ও দেশের মানুষের কথা ভুলতে বসেছো।

ফেনী জেলা বিএনপির যুগ্ম-সদস্য সচিব আনোয়ার হোসেন পাটোয়ারীর সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য রাখেন ছাগলনাইয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক নুর আহমদ মজুমদার, যুগ্ম আহ্বায়ক এয়াকুব নবী, সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফজলুর রহমান বকুল, সদস্য সচিব আমান উদ্দিন কায়সার সাব্বির, পৌর বিএনপির আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন বাবুল,সদস্য সচিব এড.মেজবাহ উদ্দিন ভূইয়া,জেলা যুবদলের আহ্বায়ক নাসির উদ্দীন খন্দকার,সদস্য সচিব নাঈম উল্যাহ চৌধুরী বরাত,জেলা মহিলা দলের সভাপতি জুলেখা আক্তার ডেইজি,জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি সাইদুর রহমান জুয়েল, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সালাউদ্দিন মামুন, সাধারণ সম্পাদক মোর্শেদ আলম,পরশুরাম উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবদুল হালিম মানিক প্রমুখ।

তৃণমূলের এসব নেতারা তাদের বক্তব্যে যেখানে আওয়ামী লীগ, সেখানেই প্রতিরোধ। শহীদ জিয়ার একটি সৈনিক বেঁচে থাকতে আওয়ামী শয়তানদের এদেশে ফিরে আসতে পারবে না। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতা হত্যাকাণ্ডে জড়িত আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের দ্রুত বিচারের মাধ্যমে ফাঁসির দাবিসহ বিভিন্ন সেক্টরে ঘাপটি মেরে থাকা স্বৈরাচারের দোসরদের চিহ্নিত করে ফেনী থেকে তাড়িয়ে দেওয়া ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের রেখে যাওয়া অস্ত্র উদ্ধারের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি জোর আহ্বান জানান।

এমএস

Ad
এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত