Ad T1

চ্যাম্পিয়নস লিগ

প্রথম ইউরোপিয়ান মুকুটের খোঁজে 'ফারমার্স লিগ' টিম পিএসজি

স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশ : ০৯ মে ২০২৫, ০২: ০০
আপডেট : ০৯ মে ২০২৫, ০৯: ২৮

পিছিয়ে ছিল আর্সেনাল। ব্যবধানটা ছিল এক গোলের। এটাও যে কোনো অংশে কম নয়, সেটা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে গানাররা। তবে কোচ মিকেল আর্তেতার শিষ্যদের শুরুটা ছিল দুর্দান্ত। কিন্তু গোলের জন্য মরিয়া হয়ে খেললেও সুবিধা করতে পারেনি ইংলিশ জায়ান্ট ক্লাবটি। বেশ কিছু সুযোগও তৈরি করেছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্য সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে পারেনি।

পিএসজি গোলবারের অতন্দ্র প্রহরী জিয়ানলুইজি দোন্নারুম্মার বীরত্বে মুখ থুবড়ে পড়েছে অতিথি দলের সব আক্রমণ। সঙ্গে স্বাগতিক প্রতিপক্ষ পিএসজি ফের তাদের নাস্তানাবুদ করে ছেড়েছে। ম্যাচের দুই অর্ধেই গোল আদায় করে নেয় তারা। কিন্তু পাল্টা জবাবে গোলের জন্য হন্যে হয়ে খেলেও খেলায় প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখতে পারেনি লন্ডনের ক্লাবটি। চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালের ফিরতি লেগে জয়ের দেখাও মেলেনি তাদের ভাগ্যে। ফরাসি চ্যাম্পিয়নদের কাছে ফের হার মেনেছে তারা। বুধবার রাতে নিজেদের মাঠ পার্ক দেস প্রিন্সেসে দ্বিতীয় লেগে ফ্যাবিয়ান রুইস ও আশরাফ হাকিমির গোলে পিএসজি জিতেছে ২-১ ব্যবধানে।

প্রথম লেগে অবশ্য এমিরেটস স্টেডিয়াম থেকে ১-০ গোলের জয়ে ইউরোপের সেরাদের আসরের ফাইনালে এক পা দিয়েই রেখেছিল প্যারিসের জায়ান্ট ক্লাবটি। দ্বিতীয় লেগে হার এড়ালেই হতো। কিন্তু নাহ! সে পথে হাঁটেনি তারা। জয় দিয়েই নিজেদের শেষ চারের মিশনে পর্দা টেনেছে পিএসজি। দুই লেগ মিলিয়ে ৩-১ গোলের জয়ে টুর্নামেন্টটির শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচের টিকিট কেটেছে কোচ লুইস এনরিকের শিষ্যরা।

এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে নাম লিখেছে 'ফারমার্স লিগ' তকমা পাওয়া পিএসজি। ২০২০ সালে প্রথমবার ফাইনালে উঠলেও শিরোপা হাতছাড়া করে তারা। জার্মান জায়ান্ট বায়ার্ন মিউনিখ তাদের স্বপ্ন গুঁড়িয়ে দিয়েছিল সেবার। প্রথমবারের মতো ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট নিজেদের করে নেওয়ার স্বপ্নটা সত্যি করে নিতে তিনবারের ইউরোপ চ্যাম্পিয়ন ইন্টার মিলানের মুখোমুখি হবে ফরাসি ক্লাবটি। দুদলের মহারণের ফাইনাল ম্যাচটি বায়ার্নের ঘরের মাঠ অ্যালিয়াঞ্জ অ্যারিনায় গড়াবে আগামী ৩১ মে রাত ১টায়।


ইউরোপের শ্রেষ্ঠত্ব কখনো ধরা দেয়নি আর্সেনালের হাতে। তবে সুযোগ যে আসেনি, ব্যাপারটা ঠিক তেমন নয়। চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ের সুবর্ণ সুযোগ প্রথমবারের মতো এসেছিল গুনে গুনে ঠিক ১৯ বছর আগে। কিন্তু ২০০৫-০৬ মৌসুমের মহাদেশীয় শিরোপা হাতছানি দিয়ে ডাকলেও লাভ হয়নি। সেন্ট-ডেনিসে সুযোগটা আসলে কাজে লাগাতে পারেনি গানাররা। স্তেদে ডি ফ্রান্সে তাদের হৃদয় ভেঙে দিয়েছিল বার্সেলোনা। সেবার আর্সেনাল ইউরোপের এলিট টুর্নামেন্টের শিরোপা থেকে বঞ্চিত হয়েছে ফ্রান্সের রাজধানীতে। এবার আর্সেনাল শেষ চার থেকে বিদায় নিল সেই ‘অপয়া’ প্যারিস থেকেই।


ম্যাচের ডেডলক ভাঙতে পিএসজিকে অপেক্ষায় থাকতে হয়েছে ২৭ মিনিট পর্যন্ত। লিড এনে দেন রুইস। ফ্রি কিক থেকে উড়ে বল চলে আসে বক্সে। বুক দিয়ে বল নামিয়ে ক্ষিপ্রগতির শটে জাল কাঁপান মাঝ-মাঠের এ স্প্যানিশ তারকা। গানার গোলরক্ষক বল রুখবেন কী, স্পর্শই করতে পারেননি। চ্যাম্পিয়নস লিগে এই প্রথম গোলের দেখা পেলেন রুইস। বিরতির পর মাঠে নেমেই আক্রমণে গতি বাড়ায় আর্সেনাল। ৬৪ মিনিটে গোলের সুযোগও তৈরি করেন বুকায়ো সাকা। তবে এক হাতে তার গোল প্রচেষ্টা রুখে দেন 'সুপারম্যান' দোন্নারুম্মা।

লড়াইয়ের ৭২ মিনিটে ওসমান দেম্বেলের সঙ্গে বল দেওয়া-নেওয়া করে স্বাগতিকদের আরো এগিয়ে দেন হাকিমি। ম্যাচের ৭৬ মিনিটে ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা তৈরি করেন সাকা। মারকিনিওসকে বল দখলের লড়াইয়ে পরাস্ত করে লিয়ান্দ্রো ত্রোসা পাস দেন সাকারের কাছে। প্রথমবার না পারলেও দ্বিতীয় শটে বল ঠিকই জালে পাঠান নাইজেরিয়ান বংশোদ্ভূত এ ইংলিশ ফরোয়ার্ড। ৮০ মিনিটে সাকা পেয়ে ছিলেন গোলের সুবর্ণ সুযোগ। সামনে ফাঁকা গোলপোস্ট পেলেও দৌড়ের গতি আর স্নায়ুচাপ সামাল দিতে না পেরে গোলবারের ওপর দিয়ে উড়িয়ে মারেন। গোলের এই সুযোগের সঙ্গে ফাইনালে উঠার সুযোগও হাতছাড়া করে রাজ্যের হতাশায় ডুবে যায় সফরকারী আর্সেনাল।


একনজরে ফল

প্রথম লেগ
আর্সেনাল ০-১ পিএসজি

ফিরতি লেগ
পিএসজি ২-১ আর্সেনাল

দুই লেগ মিলিয়ে ৩-১ গোলে জিতে ফাইনালে পিএসজি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত