জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের ৩৫ মাসে বিদ্যুৎ বিল বকেয়া দাঁড়িয়েছে প্রায় ছয় লাখ টাকা। বিপুল অঙ্কের এ বকেয়া বিল নিয়ে বিপাকে পড়েছে মসজিদ কর্তৃপক্ষ।
মসজিদটি ২০২৩ সালের ১৬ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়। উদ্বোধনের প্রায় তিন বছরে বিদ্যুৎ বিলের পরিমাণ লাফিয়ে বাড়লেও মসজিদ পরিচালনা কমিটি বা ইসলামিক ফাউন্ডেশন এখনো তা পরিশোধের উদ্যোগ নেয়নি। ফলে প্রতিনিয়ত বিদ্যুৎ বিভাগের চাপ সইতে হচ্ছে মসজিদের দায়িত্বরত ব্যক্তিদের।
উপজেলা ইসলামিক ফাউন্ডেশন সূত্রে জানা যায়, মাদারগঞ্জ পৌরশহরের বালিজুড়ী বাজারে ২০২৩ সালের ১৬ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে মডেল মসজিদের কার্যক্রম শুরু হয়। মসজিদে আজান, নামাজ ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য একজন পেশ ইমাম, একজন মুয়াজ্জিন এবং দুইজন খাদেম নিয়োগপ্রাপ্ত। তবে শুধু তাদের সম্মানিই ইসলামিক ফাউন্ডেশন বহন করে, মসজিদের অন্যান্য খরচ যেমনÑ পরিচ্ছন্নতা, বিদ্যুৎ বিল ও অন্যান্য পরিচালন ব্যয়, নামাজরত মুসল্লিদের দানের অর্থ দিয়ে চালাতে হয়।
মডেল মসজিদে রয়েছে একাধিক নামাজের কক্ষ, দামি ঝাড়বাতি, শত শত লাইট, ফ্যান ও এসি, নারী-পুরুষ ও প্রতিবন্ধীদের জন্য পৃথক অজুখানা এবং আধুনিক টয়লেটের ব্যবস্থা। অটিজম কর্নার, ইসলামিক বই বিক্রয় কেন্দ্র, ইসলামিক লাইব্রেরি, ইমাম ট্রেনিং সেন্টার, হজ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, ইসলামিক গবেষণা, শিশু ও গণশিক্ষার ব্যবস্থা, দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আবাসন ও অতিথি শালা। রয়েছে মৃতদেহ গোসল ও কফিন বহনের ব্যবস্থা।
উপজেলা ইসলামী ফাউন্ডেশনের ফিল্ড সুপারভাইজার আসাদুল্লাহ সিদ্দিকী বলেন, ২০২৫ সালের নভেম্বর পর্যন্ত মডেল মসজিদের বকেয়া বিদ্যুৎ বিল দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫ লাখ ৭৯ হাজার টাকা। প্রতি মাসে গড়ে ১৫-২০ হাজার টাকা বিদ্যুৎ বিল আসে। কিন্তু মুসল্লিদের দান থেকে প্রতি মাসে আয় হয় মাত্র দুই-তিন হাজার টাকা। বালিজুড়ী বাজারে একাধিক মসজিদ থাকায় এবং বাজার থেকে একটু দূরে মডেল মসজিদ নির্মাণে মুসল্লির সমাগম কম বলে দানের অর্থের পরিমাণও কম।
পল্লী বিদ্যুতের মাদারগঞ্জ জোনাল অফিসের উপমহাব্যবস্থাপক ওবায়দুল্লাহ আল মাসুম বলেন, মডেল মসজিদের বকেয়া বিল পরিশোধের জন্য একাধিকবার চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করা হয়নি। দিন দিন বকেয়া বিলের পরিমাণ আরো বাড়ছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন চৌধুরী জানান, তিনি সদ্য এ উপজেলায় যোগদান করেছেন। মডেল মসজিদের বিপুল অঙ্কের বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে, যা একবারে পরিশোধ করা সম্ভব নয়। মসজিদের আয় বৃদ্ধি এবং বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

