Ad T1

মার্কেটিং পড়ুয়াদের করণীয় ও সফল ক্যারিয়ারের দিকনির্দেশনা

ড. মো. আব্দুল মোমেন
প্রকাশ : ১০ এপ্রিল ২০২৫, ১৭: ১০

‎বাংলাদেশে মার্কেটিং পেশার গুরুত্ব দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ই-কমার্স, টেলিকম, এফএমসিজি এবং ডিজিটাল মার্কেটিং শিল্পে দক্ষ পেশাজীবীদের চাহিদা বাড়ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষে মার্কেটিং পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের জন্য প্রস্তুতির সময়। একাডেমিক জ্ঞান অর্জনের পাশাপাশি ব্যবহারিক দক্ষতা বাড়ানো জরুরি। সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণ করলে তারা সহজেই গ্রামীণফোন, বিকাশ, শপআপ, প্রাণ-আরএফএল-এর মতো প্রতিষ্ঠানে ক্যারিয়ারের সুযোগ তৈরি করতে পারে।

‎একাডেমিক ভিত্তি : তাত্ত্বিক জ্ঞান শক্তিশালী করা।

‎একজন দক্ষ মার্কেটার হওয়ার জন্য প্রথমেই একাডেমিক ভিত্তি শক্তিশালী করা প্রয়োজন। বাংলাদেশের পার্সপেকটিভে লেখা প্রফেসর ড. আব্দুর রাজ্জাক এবং ড. আব্দুল মোমেন এবং ড. সিয়ামা সুলতানা রচিত ‘Introduction to Marketing’ বইটি মার্কেটিং শিক্ষার্থীদের জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রিসোর্স। এ ছাড়া, Philip Kotler-এর ‘Principles of Marketing’ এবং David Aaker, Kevin Keller-এর ব্র্যান্ডবিষয়ক বইগুলোও সহায়ক হতে পারে।

‎‎শুধু বই পড়লেই হবে না, বাস্তব মার্কেটিং পরিস্থিতি বোঝার জন্য গ্রামীণফোন, স্কয়ার, কোকাকোলা বাংলাদেশের মতো প্রতিষ্ঠানের মার্কেটিং কৌশল বিশ্লেষণ করা দরকার।

‎কমিউনিকেশন ও প্রেজেন্টেশন দক্ষতা : ভবিষ্যতের প্রস্তুতি।

‎বাংলাদেশের ব্যবসায়িক পরিবেশে সফল হতে হলে শক্তিশালী কমিউনিকেশন দক্ষতা প্রয়োজন। উদাহরণস্বরূপ, বিকাশ কীভাবে গ্রাহকদের কাছে নিজেদের ব্র্যান্ড উপস্থাপন করে বা দারাজ কাস্টমারদের সঙ্গে ইন্টারঅ্যাকশনের মাধ্যমে বিশ্বাস তৈরি করে, তা বোঝা দরকার।

‎‎এ ক্ষেত্রে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস ক্লাব, বিতর্ক ক্লাব বা মার্কেটিং ফেস্টিভ্যালে অংশগ্রহণ করা সহায়ক হতে পারে।

‎ডিজিটাল মার্কেটিং ও অনলাইন বিজনেস : ব্যবহারিক অভিজ্ঞতা অর্জন।

‎বর্তমানে বাংলাদেশে ই-কমার্স ও ডিজিটাল মার্কেটিং অন্যতম দ্রুত বর্ধনশীল খাত। দারাজ, পিকাবো, চালডালের মতো কোম্পানিগুলো কীভাবে SEO, Facebook Ads এবং Influencer Marketing ব্যবহার করে, তা বোঝা গুরুত্বপূর্ণ।

‎প্রথম বর্ষ থেকেই শিক্ষার্থীরা ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেস (Fiverr, Upwork) থেকে ডিজিটাল মার্কেটিং, কনটেন্ট রাইটিং বা সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং শেখার চেষ্টা করতে পারে। এ ছাড়া, Facebook-এ ছোটখাটো অনলাইন বিজনেস শুরু করেও হাতে-কলমে মার্কেটিং শেখা সম্ভব।

‎ইন্টার্নশিপ ও নেটওয়ার্কিং ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে সংযোগ স্থাপন :

‎শুধু পড়াশোনা করলেই হবে না, প্রফেশনাল ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করাও গুরুত্বপূর্ণ। প্রথম বর্ষ থেকেই গ্রামীণফোন NEXTGEN, BAT Battle of Minds, Unilever Future Leaders League-এর মতো প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করলে ইন্ডাস্ট্রির অভিজ্ঞদের সংস্পর্শে আসা যায়।

‎এ ছাড়া, বড় মার্কেটিং সংস্থা যেমন : Grey Advertising, Asiatic JWT, Ogilvy Bangladesh-এর মতো প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্নশিপের সুযোগ খোঁজা উচিত। LinkedIn ও BDJobs-এ প্রোফাইল তৈরি করে বিভিন্ন কোম্পানির সঙ্গে কানেকশন তৈরি করা দরকার।

‎ সঠিক প্রস্তুতি এখনই নিন :

‎একজন ফার্স্ট ইয়ার মার্কেটিং শিক্ষার্থী যদি শুধু একাডেমিক পড়াশোনার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে, তাহলে ভবিষ্যতে প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকা কঠিন হয়ে যাবে। বাস্তব মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি বোঝা, ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে কানেকশন তৈরি করা এবং ব্যবহারিক অভিজ্ঞতা অর্জন করা হলে ভবিষ্যতে ক্যারিয়ার সম্ভাবনাময় হবে। শেখা, অনুশীলন এবং বাস্তব অভিজ্ঞতার মাধ্যমে আজকের শিক্ষার্থীই আগামী দিনের সফল মার্কেটার হয়ে উঠতে পারে।

  • সহকারী অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান, মার্কেটিং বিভাগ

‎জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত