বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) বিভিন্ন বিভাগে সম্প্রতি কয়েকজন প্রভাষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এতে প্রতিষ্ঠানটির দীর্ঘ দিনের ঐতিহ্য ভঙ্গ করে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠেছে। দুটি বিভাগে মেধা তালিকায় শীর্ষে থাকা প্রার্থীদের বাদ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের স্ত্রী ও মেয়েকে এ পদে নিয়োগ দেওয়াb হয়েছে। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট অ্যালামনাইদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তবে অন্য বিভাগগুলোতে নিয়োগের ক্ষেত্রে নিয়মের ব্যত্যয় হয়নি বলে জানা গেছে।
সূত্রমতে, ২২ নভেম্বর বুয়েটের অফিস আদেশের মাধ্যমে বিভিন্ন বিভাগে প্রভাষক নিয়োগের বিষয়টি জানানো হয়। এতে বলা হয়- বুয়েটের সিন্ডিকেটের ১৯ নভেম্বর অনুমোদনক্রমে সিলেকশন বোর্ডের নির্বাচিত প্রার্থীদেরকে শারীরিক উপযুক্ততার প্রমাণপত্র দাখিল এবং চরিত্র ও পূর্ব পরিচয় সম্পর্কে পুলিশের তদন্ত রিপোর্টে নির্দোষ প্রমাণ সাপেক্ষে অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ প্রদান করা হলো।
অভিযোগে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ঐতিহ্য অনুযায়ী মেধা তালিকা অনুযায়ী শিক্ষক পদে নিয়োগের সুযোগ পেতেন। কিন্তু এবার সেই ঐতিহ্য ভঙ্গ করে স্বজনপ্রীতিকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।
সূত্রমতে, বিশ্ববিদ্যালয়টির সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে স্নাতকে ৩ দশমিক ৭৩ সিজিপিএ প্রাপ্ত একজন প্রার্থীকে প্রভাষক পদের জন্য নির্বাচন করা হয়েছে। তিনি একই বিভাগের সহকারী অধ্যাপকের স্ত্রী বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অথচ ওই বিভাগের সিজিপিএ ৩ দশমিক ৯০ থেকে ৪ দশমিক শূন্য পর্যন্তসহ কয়েকজন মেধাবী আবেদনকারীকে নির্বাচিত করা হয়নি।
অন্যদিকে, পানি সম্পদ কৌশল বিভাগ (ডব্লিউআরই) বিভাগে দুটি প্রভাষক শূন্যপদ ছিল। এতে আবেদনকারী ১৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী প্রথম এবং দ্বিতীয় স্থান অধিকারী উভয় প্রার্থীরই সিজিপিএ ৩ দশমিক ৯৪ ছিল, ফলাফলের পার্থক্য প্রায় কাছাকাছি। এক্ষেত্রে প্রথম স্থান অধিকারী প্রার্থীকে শিক্ষক পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে ১৮তম ও ১৯তম ব্যাচের দ্বিতীয় স্থান অধিকারী প্রার্থীকে পাশ কাটিয়ে ১১তম ব্যাচ থেকে তৃতীয় স্থান অধিকারীকে নির্বাচন করা হয়েছে।
জানা গেছে, নির্বাচিত তৃতীয় স্থান অধিকারী প্রার্থী বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপকের মেয়ে এবং কম্পিউটার সাইন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপকের স্ত্রী।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন অ্যালামনাই জানান, বুয়েটের ইতিহাসে শিক্ষক নিয়োগে এবারের মতো স্বজনপ্রীতির ঘটনা ঘটেনি। আগেও স্বজনরা নিয়োগ পেয়েছেন, সেক্ষেত্রে মেধাতালিকায় শীর্ষে থাকাদের বাদ দেয়া হয়নি। এবারের নিয়োগ নিয়মানুযায়ী বৈধ হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক ঐতিহ্য ভঙ্গ করা হয়েছে। এতে ভবিষ্যতে আরো দুর্নীতির দ্বার উন্মোচিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এই নিয়োগ নিয়ে মেধাবীদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে এবং অ্যালামনাই গ্রুপগুলোতে তীব্র সমালোচনা হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবু বোরহান মোহাম্মদ বদরুজ্জামান আমার দেশকে বলেন, শিক্ষক নিয়োগে নিয়মবহির্ভূত কিছুই করা হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে স্বজনপ্রীতির কোনো প্রশ্নই আসে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।


ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ জনবল সংকটে ইসরাইলি সেনাবাহিনী
ভাগ্যের পরিবর্তন হচ্ছে না চা শ্রমিকদের