আমার দেশ জনপ্রিয় বাংলা নিউজ পেপার

হাদি হত্যাচেষ্টার ঘটনায় আরেক সন্দেহভাজন চিহ্নিত, কে এই জাকির

আমার দেশ অনলাইন
হাদি হত্যাচেষ্টার ঘটনায় আরেক সন্দেহভাজন চিহ্নিত, কে এই জাকির
ফয়সাল করিম মাসুদ ও আলমগীর হোসেনের সঙ্গে জাকির হোসেন ওরফে জিন জাকির (বৃত্ত চিহ্নিত)

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদিকে গুলি করে হত্যাচেষ্টায় জড়িত থাকা সন্দেহভাজন আরেকজনকে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়েছে। সে হাদির নির্বাচনি প্রচারে উপস্থিত থাকত এবং হাদিকে গুলিবর্ষণকারী মূল সন্দেহভাজন দুইজনের সঙ্গে তার যোগাযোগ ছিল।

ডিজিটাল অনুসন্ধানী মিডিয়া দ্য ডিসেন্ট সোমবার সন্দেহভাজন তৃতীয় ব্যক্তির পরিচয় শনাক্ত করে। তার নাম জাকির হোসেন ওরফে ‘জিন জাকির’। তার গ্রামের বাড়ি কুড়িগ্রামের শৌলমারীতে। সে রাজধানীর মিরপুর এলাকায় থাকত।

বিজ্ঞাপন

এদিকে, এই তিনজনকে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ডাকসুর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক ফাতিমা তাসনিম জুমা। গত শনিবার ফেসবুকে হাদির একটি যৌথ ছবি পোস্ট করে এই আহ্বান জানান ইনকিলাব মঞ্চের এই নেত্রী।

ফেসবুকে পোস্ট করা ছবিতে দেখা যায়, হাদির পাশে আরো পাঁচ ছয়জন ব্যক্তি দাঁড়িয়ে রয়েছেন। তাদের মধ্যে তিনজনকে নীল বৃত্ত দিয়ে আলাদাভাবে চিহ্নিত করে দিয়েছেন জুমা।

ছবির ক্যাপশনে তিনি লেখেন, এই তিনজনকে যে কোনো মূল্যে ধরিয়ে দিন। বাংলাদেশের জনতা আপনারাই ইনকিলাব কর্মী, আপনারাই এই ভার হাতে নিন। প্রশাসন কোথায় আমাদের আপডেট দেবে, তা না করে উলটো আমাদের কাছেই আপডেট চাইছে।

ছবিতে গোল চিহ্নিত তিনজনের মধ্যে দুজনের পরিচয় আগেই জানা গেছে। তাদের মধ্যে একজন হাদিকে গুলিবর্ষণকারী মূল সন্দেহভাজন ফয়সাল করিম মাসুদ আর অন্যজন তার বাইকচালক আলমগীর হোসেন।

তাদের উভয়ের মাঝখানে দাঁড়িয়ে থাকা চাপদাড়ি মুখের ব্যক্তিটি জাকির হোসেন। গত বছর অক্টোবর মাসের ১২ তারিখ রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় তার বিরুদ্ধে ডাকাতির মামলা হয়। সেই রাতেই তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এরপর, একই মাসে ২৭ তারিখ কামাল হোসেন নামক এক ব্যক্তি জাকির ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে গাবতলী থানায় আরেকটি ডাকাতির মামলা দায়ের করেন। এর আগে, ১৩ অক্টোবর ডিএমপির ফেসবুক পেজে জাকির হোসেন ও তার দুই সহযোগীর ছবি পোস্ট করা হয়।

ডিএমপির ওই পোস্টে বলা হয়, ১২ অক্টোবর ২০২৪ দিবাগত রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে সংঘটিত চাঞ্চল্যকর ডাকাতি মামলায় সরাসরি জড়িত তিন ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি। ১৩ অক্টোবর ২০২৪ রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করে এই তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে দুই লাখ বিশ হাজার নগদ টাকা, প্রায় চার ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার ও দুটি আইফোন উদ্ধার করা হয়।

ডিএমপি তাদের নাম জানায়- শরীফুল ইসলাম তুষার (৩৫), জাকির হোসেন (৩৭) ও মাসুদুর রহমান (৪৭)। মামলার এজাহারে জাকিরের নাম লেখা রয়েছে ‘জাকির হোসেন ওরফে জিন জাকির’।

ফেসবুকে জুমা সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীদের ছবি চিহ্নিত করে পোস্ট করার পর দ্য ডিসেন্ট গাবতলী থানায় মামলা দায়েরকারী কামাল হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করে। ডিএমপির পেজে প্রকাশিত ছবি এবং জুমার পোস্ট করা হাদিকে গুলিবর্ষণকারী ফয়সাল ও আলমগীরের মাঝখানের ব্যক্তির ছবি পাঠিয়ে তাকে ‘চেনেন কি না’ প্রশ্ন করে দ্য ডিসেন্ট। উত্তরে তিনি ডিসেন্টকে জানান, ছবি দুটিতে থাকা একই ব্যক্তি তার বাসায় ২০২৪ সালে ডাকাতিতে নেতৃত্ব দেন। তার নাম ‘জিন জাকির’ উল্লেখ করে তার বিরুদ্ধে আদাবর থানায় মামলা করার কথা নিশ্চিত করেন কামাল হোসেন।

তিনি বলেন, আমার বাসায় তারা কয়েকজন ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে ঢুকে ডাকাতি করেছিল। এরপর মোহাম্মদপুরে আরেক ডাকাতির ঘটনায় তাদেরকে পুলিশ আটক করলে আমাকে ডেকে নেয় পুলিশ। তখন এই জিন জাকিরকে আমি চিহ্নিত করি।

প্রসঙ্গত, অ্যাডভোকেট ওমর সাদমানীর পিটিশনের প্রেক্ষিতে বিচারপতি আতাউর রহমান ও বিচারপতি আলী রেজার হাইকোর্ট বেঞ্চ গত জুলাই মাসে জাকির হোসেনের জামিন মঞ্জুর করলে ওই মাসেই তিনি কারাগার থেকে বের হন।

এর আগে, ইনকিলাব মঞ্চের সদস্য মোহাম্মদ ওসামা জানান, হাদির ওপর গুলিবর্ষণে জড়িত ব্যক্তিরা প্রায় দুই সপ্তাহ আগে তার নির্বাচনি প্রচার টিমে যুক্ত হয়েছিল। তবে, ওই দুই ব্যক্তিকে মাঝখানে কয়েকদিন প্রচারে দেখা যায়নি। পরে আবার কয়েকদিন আগে তারা ফিরে এসে নির্বাচনি প্রচারের কাজে যুক্ত হয়।

Google News Icon

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন