জুলাই বিপ্লবের অগ্রসেনানী শরীফ ওসমান হাদি বৃহস্পতিবার রাতে মারা গেছেন। তার মৃত্যুতে শোকে স্তব্ধ পুরো বাংলাদেশ। ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে রাতেই সারা দেশ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। দেশের গণমাধ্যমের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে উঠে এসেছে হাদির খবর। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা বেশ গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করেছে হাদির সংবাদ।
আলজাজিরা শিরোনাম করেছে-কে ছিলেন ওসমান হাদি; তার মৃত্যুতে কেন জ্বলছে বাংলাদেশ?
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা বিদ্রোহের একজন বিখ্যাত নেতা ছিলেন ৩২ বছর বয়সি এই হাদি। তিনি ইনকিলাব মঞ্চ বা ‘বিপ্লবের প্ল্যাটফর্ম’-এর মুখপাত্র হিসেবে কাজ করতেন। এছাড়া ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে আসন্ন নির্বাচনে বিজয়নগর এলাকার ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য হিসেবে দাঁড়ানোর পরিকল্পনা করছিলেন। ১২ ডিসেম্বর হত্যাচেষ্টায় আহত হওয়ার পর সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
প্রতিবেদনে আরো এসেছে, হাদি ভারতের একজন স্পষ্ট সমালোচক ছিলেন। যেখানে গত বছর বিদ্রোহের পর বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পালিয়ে যান। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে এর বিস্তর প্রভাব রয়েছে।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, হাদির মৃত্যুর খবর প্রকাশের পর, বৃহস্পতিবার ঢাকা এবং দেশের অন্যান্য স্থানে সহিংস বিক্ষোভ শুরু হয় এবং শুক্রবারও তা অব্যাহত ছিল। কর্তৃপক্ষ হাদির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হওয়ায় বিক্ষোভকারীরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং আইন মন্ত্রণালয়ের প্রধানদের পদত্যাগ দাবি করেছে। এছড়া এসময় বিক্ষোভকারীরা বন্দুকধারীদের ফিরিয়ে দেওয়ারও দাবি করছে, কেননা অনেকেরই বিশ্বাস তারা ভারতে পালিয়ে গেছে।
আলজাজিরার প্রতিবেদক তানভীর চৌধুরী বলেন, ‘বিক্ষোভকারীদের বেশিরভাগই ছাত্র, তবে সমাজের সকল স্তরের মানুষ এবং কিছু রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীরাও এখানে যুক্ত হয়েছেন। তাদের মূল স্লোগান -আমরা ওসমান হাদির হত্যাকারীর বিচার চাই। তারা বলছে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বন্দুকধারীকে বিচারের আওতায় আনতে হবে, নাহলে তারা প্রতিবাদ চালিয়ে যাবে।"
শুক্রবার আল জাজিরার প্রতিবেদক চৌধুরী জানিয়েছেন, ‘জনগণের মধ্যে ভারত-বিরোধী মনোভাব তীব্র। তারা মনে করে ভারত সবসময় বাংলাদেশের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে। বিশেষ করে নির্বাচনের ঠিক আগে - ভারতে আশ্রয় নেয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন।’
আলজাজিরাতে এসেছে, হাদির মৃত্যুর পর, অনেক বাংলাদেশিই ইন্টারনেটে তাত্ত্বিক তথ্য শেয়ার করছেন যে হামলাকারীরা ভারতে পালিয়ে গেছে। এমনকি বিভিন্ন দলের যুব রাজনীতিবিদ এই দাবিগুলির সমর্থনে পুনরাবৃত্তি করেছেন।
আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

