অবরুদ্ধ যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকায় শান্তি প্রতিষ্ঠায় মিসরের শারম আল-শেখে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে আমেরিকা, মিসর, কাতার ও তুরস্ক। সোমবার চার দেশের রাষ্ট্রপ্রধান এ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। কিন্তু যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও গাজায় ফিলিস্তিনিদের লক্ষ্য করে আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে ইসরাইলি সেনারা।
মঙ্গলবার গাজা শহরের শুজাইয়া মহল্লায় ইসরাইলি সেনাদের গুলিতে ছয় ফিলিস্তিনি নিহত হন। ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) পক্ষ থেকে জানানো হয়, তারা সেনাদের খুব কাছাকাছি চলে এসেছিলেন। ইসরাইলি বাহিনীর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, চুক্তি অনুযায়ী আইডিএফ নিয়ন্ত্রিত অবস্থানে গাজার বাসিন্দারা যেতে পারেন না।
অন্য ঘটনায় আরো তিনজন নিহতের তথ্য জানায় আলজাজিরা। এছাড়া জাবালিয়ায় ইসরাইলি বাহিনীর গুলিতে বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনি আহত হন। তবে আহতের নির্দিষ্ট সংখ্যা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। একই সঙ্গে দক্ষিণ গাজার খান ইউনুসে আরো দুই ফিলিস্তিনি আহত হন।
গাজায় ফিলিস্তিনিদের লক্ষ্য করে আক্রমণের নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘের ফিলিস্তিনবিষয়ক বিশেষ দূত ফ্রান্সেসকা আলবানেজ। মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, ইসরাইলের যুদ্ধবিরতির সংজ্ঞা অনুসারে বিরোধীপক্ষের অস্ত্রবিরতি হবে আর তারা অব্যাহত রাখার অর্থ যদি শান্তি হয়, তবে তা অপমানজনক ও তামাশাজনক। সবার চোখ ফিলিস্তিনিদের দিকে রয়েছে। ইসরাইলকে অবশ্যই ন্যায়বিচার, নিষেধাজ্ঞা ও বয়কটের মুখোমুখি করতে হবে, যতক্ষণ না দখলদারিত্ব, জাতিগত বিদ্বেষ ও গণহত্যা শেষ না হয় এবং সব অপরাধের বিচার না হয়।
অপর এক পোস্টে তিনি বলেন, একে তারা শান্তি বললেও ফিলিস্তিনিদের জন্য এটি ভয়াবহ জাতিগত বিদ্বেষ হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। ফিলিস্তিনের প্রতি সবার দৃষ্টি রাখা উচিত। বিশ্বের মানুষ মুখ ফিরিয়ে থাকতে পারে না। নেলসন ম্যান্ডেলার কথা আমাদের মনে রাখা উচিত। তিনি বলেছিলেন, প্রত্যেকে মুক্ত না হলে কেউই মুক্ত হতে পারেন না।
এর মধ্যে মঙ্গলবার সকালে উত্তর গাজার জাবালিয়ায় ইসরাইল সমর্থিত অস্ত্রধারী গ্রুপগুলোর সঙ্গে ফিলিস্তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গোলাগুলি হয়েছে। তবে এতে কেউ হতাহত হয়েছেন কি না, তা জানা যায়নি।
এদিকে মঙ্গলবার আলজাজিরাকে গাজার সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল বলেন, যুদ্ধবিরতির পর অন্তত ২৫০ ফিলিস্তিনির লাশ ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কার করতে গিয়ে আমরা ভারী যন্ত্রপাতির অভাব অনুভব করছি। ১০ হাজারের বেশি লোক ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন এবং আমাদের কাছে তাদের উদ্ধারের কোনো সরঞ্জাম নেই।
এর আগে সোমবার মিসরের শারম আল-শেখে গাজায় যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদুল ফাত্তাহ আল-সিসি, কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আলসানি এবং তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোয়ান।


ইসরাইলের আরো ৪ জিম্মির লাশ হস্তান্তর করল হামাস
গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তির দ্বিতীয় ধাপ শুরুর ঘোষণা ট্রাম্পের