ট্রাম্পের নোবেল-খায়েস, কে কী বলছেন

আমার দেশ অনলাইন
প্রকাশ : ০৪ আগস্ট ২০২৫, ২২: ০৭
ছবি: স্কাই নিউজ

আন্তর্জাতিক মর্যাদার আকাঙ্ক্ষা, প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা এবং সম্ভবত কিছুটা উস্কানি; নোবেল শান্তি পুরস্কারের প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আগ্রহের পেছনে রয়েছে বিভিন্ন কারণ।

জিও নিউজের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, গত ৩১ জুলাই হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট সাংবাদিকদের বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়ার সময় অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে।

বিজ্ঞাপন

লিভিট বলেন, গত জানুয়ারিতে ক্ষমতায় ফিরে আসার পর থেকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট অনেকগুলো শান্তি চুক্তি বা যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতা করেছেন। ভারত ও পাকিস্তান, কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ড, মিশর ও ইথিওপিয়া, রুয়ান্ডা ও গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, সার্বিয়া ও কসোভোর মধ্যে মধ্যস্থতা করেন তিনি।

প্রেস সেক্রেটারি ইরানের কথাও উল্লেখ করেছেন। বলেন, ট্রাম্প ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলার নির্দেশ দিয়েছিলেন। লিভিটের মতে, এসব পদক্ষেপ বিশ্ব শান্তিতে অবদান রাখার প্রমাণ বহন করে।

তবে তিনি ইউক্রেন যুদ্ধের কথা উল্লেখ করেননি। যদিও ট্রাম্প তার দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম দিনেই যুদ্ধ শেষ করে শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। সেই সঙ্গে গাজায় যুদ্ধের কথাও উল্লেখ করেননি লেভিট।

পাকিস্তান-ইসরাইল

কোনো কোনো বিদেশি নেতা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে শান্তিরক্ষী হিসেবে বর্ণনা করেন। পাকিস্তান ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত করেছে। একই কাজ করেছেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।

আইনপ্রণেতা, মন্ত্রী, নির্দিষ্ট কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, সাবেক পুরস্কার জয়ী এবং কমিটির সদস্যদের মধ্যে লাখ লাখ মানুষ নোবেল কমিটির কাছে মনোনয়ন প্রস্তাব জমা দিতে পারেন।

কেস ওয়েস্টার্ন রিজার্ভ ইউনিভার্সিটি স্কুল অব লয়ের সহকারী অধ্যাপক আনাত অ্যালন-বেক ট্রাম্পের নাম নোবেল কমিটির কাছে জমা দিয়েছেন। তিনি এএফপিকে বলেন, ‘গাজা থেকে ইসরাইলি জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে তার অসাধারণ নেতৃত্ব এবং কৌশলগত প্রতিভার কারণেই এই পদক্ষেপ নিয়েছেন।’

ট্রাম্পকে নোবেল দেওয়া ঠিক হবে কিনা

অনেকের মতে, আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলায় বিঘ্ন ঘটিয়েছেন এমন কাউকে নোবেল দেওয়ার সিদ্ধান্ত সঠিক নয়। মার্কিন ইতিহাস ও রাজনীতি গবেষক এমা শর্টিসের মতে, ‘ট্রাম্প অবশ্যই নোবেল শান্তি পুরস্কারের যোগ্য নন।’

তবে ট্রাম্প তার সাথে একমত নন। গত ফেব্রুয়ারিতে হোয়াইট হাউজে তিনি বলেন, ‘আমি এটার যোগ্য, তবে তারা আমাকে কখনই এই পুরস্কার দেবে না।’

এছাড়া, গত জুন মাসে ট্রাম্প তার সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে আক্ষেপ করে বলেছিলেন, ‘আমি যাই করি না কেন, রাশিয়া-ইউক্রেন এবং ইসরাইল-ইরানসহ, ফলাফল যাই হোক না কেন, আমি নোবেল শান্তি পুরস্কার পাব না।’

আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অধ্যাপক গ্যারেট মার্টিন এএফপিকে বলেন, ট্রাম্প বিশেষভাবে প্রশংসা এবং পুরস্কারের প্রতি অনুরাগী একজন ব্যক্তি। কাজেই তিনি এই গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিকে স্বাগত জানাবেন এটাই স্বাভাবিক।

মার্টিন আরো বলেন, ২০০৯ সালে যখন সাবেক প্রেসিডেন্ট ওবামা নোবেল পুরস্কার পান, তখন থেকেই নিজেকে ওবামার বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়েছেন।

৩৩৮ জন প্রার্থী

এর আগে আরো তিনজন মার্কিন প্রেসিডেন্ট এই সম্মানে ভূষিত হয়েছেন। তারা হচ্ছেন- থিওডোর রুজভেল্ট, উড্রো উইলসন এবং জিমি কার্টার।

ভিয়েতনাম যুদ্ধের অবসানে সহায়তা করার প্রচেষ্টার জন্য ১৯৭৩ সালে হেনরি কিসিঞ্জারকেও এই পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল।

নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীতদের সম্পূর্ণ তালিকা গোপন রাখা হয়; স্পনসরদের ব্যক্তিগত ঘোষণা ছাড়া। তবে মোট সংখ্যা জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয়। চলতি বছর ২০২৫ সালে ৩৩৮ জন মনোনীত প্রার্থী রয়েছেন।

আরএ

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিষয়:

আমার দেশ
এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত