সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেট (আইএস)–এর এক বন্দুকধারীর হামলায় দুইজন মার্কিন সেনা সদস্য এবং একজন মার্কিন বেসামরিক দোভাষী নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ড (সেন্টকম)। হামলায় আরও তিনজন মার্কিন সেনা আহত হয়েছেন। অভিযানে হামলাকারী বন্দুকধারীও সংঘর্ষে নিহত হয়। খবর বিবিসির।
মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ড জানায়, নিহতদের পরিচয় তাদের নিকটাত্মীয়দের অবহিত না করা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার জন্য গোপন রাখা হবে। এক্স (সাবেক টুইটার)-এ দেওয়া এক পোস্টে সেন্টকম জানায়, হামলাটি একজন আইএস বন্দুকধারীর মাধ্যমে সংঘটিত হয়েছে। পেন্টাগনের এক কর্মকর্তা জানান, প্রাথমিক মূল্যায়নে ধারণা করা হচ্ছে হামলাটি ইসলামিক স্টেট গোষ্ঠীই পরিচালনা করেছে।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংগঠন সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস দাবি করেছে, হামলাকারী ব্যক্তি সিরিয়ার নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ছিলেন। তবে এখন পর্যন্ত কোনো গোষ্ঠী এই হামলার দায় স্বীকার করেনি এবং বন্দুকধারীর পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।
পেন্টাগনের মুখপাত্র শন পার্নেল জানান, সিরিয়ার মধ্যাঞ্চলের পালমিরায় সৈন্যরা একটি গুরুত্বপূর্ণ নেতার সঙ্গে সংঘর্ষ পরিচালনা করছিলেন, সে সময় এই হামলা ঘটে। তিনি বলেন, ঘটনার তদন্ত চলছে। পেন্টাগনের আরেক কর্মকর্তা জানান, হামলাটি এমন একটি এলাকায় হয়েছে যা বর্তমানে সিরিয়ার রাষ্ট্রপতির নিয়ন্ত্রণে নেই।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন, এটি যুক্তরাষ্ট্র ও সিরিয়ার বিরুদ্ধে “আইএসআইএসের একটি আক্রমণ” এবং এর জন্য “খুবই গুরুতর প্রতিশোধ” নেওয়া হবে। তিনি আরও জানান, আহত তিন মার্কিন সেনা বর্তমানে ভালো আছেন।
সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, এই হামলায় দুইজন সিরিয়ান সার্ভিস কর্মীও আহত হয়েছেন। সিরিয়ার সরকার এক বিবৃতিতে হামলার নিন্দা জানিয়ে নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছে।
মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথ এক বিবৃতিতে বলেন,“আপনি যদি বিশ্বের যে কোনো প্রান্তে আমেরিকানদের লক্ষ্য করেন, তবে আপনাকে জেনে রাখতে হবে—মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আপনাকে খুঁজে বের করবে এবং নির্মমভাবে হত্যা করবে।”
এক্স-এ দেওয়া এক পোস্টে সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদ আল-শাইবানি হামলার নিন্দা জানিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।
প্রসঙ্গত, গত মাসে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা হোয়াইট হাউসে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন, যেখানে তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও সিরিয়ার সম্পর্ককে একটি “নতুন যুগে” প্রবেশ করার কথা বলেন। সম্প্রতি সিরিয়া আইএসের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক জোটে যোগ দিয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সহযোগিতার অঙ্গীকার করেছে।

