ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তিন দশকের বেশি সময় ধরে ইরানের পক্ষ থেকে হুমকির বিষয়ে সতর্ক করে আসছেন। তার সতর্কবার্তার পরিপ্রেক্ষিতে গত জুন মাসে তেহরানের পারমাণবিক স্থাপনায় বোমা হামলা করে আমেরিকা। কিন্তু এরপরও নেতানিয়াহু সন্তুষ্ট নন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
রোববার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে নেতানিয়াহুর ফ্লোরিডার মার-এ-লাগো রিসোর্টে সাক্ষাতের কথা রয়েছে। এ বৈঠকে ইরানের বিরুদ্ধে আরো সামরিক পদক্ষেপ নিতে চাপ দেবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এবার ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির ওপর জোর দেওয়া হবে।
যদিও ট্রাম্প জোর দিয়ে বলছেন, গত জুন মাসে ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলার ফলে সেগুলো সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গেছে।
এদিকে, ইসরাইলি কর্মকর্তা ও তাদের মিত্ররা আবার ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধের দামামা বাজাচ্ছেন। তাদের দাবি, তেহরানের ক্ষেপণাস্ত্র সমস্যা জরুরিভাবে সমাধান করা উচিত।
কিন্তু বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরানের সঙ্গে আরেকটি সংঘর্ষ ট্রাম্পের ঘোষিত বৈদেশিক নীতির অগ্রাধিকারের পুরোপুরি বিরুদ্ধে যাবে।
সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল পলিসির সিনিয়র ফেলো সিনা তুসি বলেন, ট্রাম্প যখন ইসরাইল ও আরব রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য জোর দিচ্ছেন, নেতানিয়াহু তখন এ অঞ্চলে সামরিক আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করছেন।
তুসি বলেন, ইরান রাষ্ট্রকে ভেঙে ফেলতে এর বিরুদ্ধে ক্রমাগত যুদ্ধের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘস্থায়ী সম্পৃক্ততা আশা করছে ইসরাইল। ইসরাইলের এ ইচ্ছা তার অপ্রতিরোধ্য আগ্রাসন, আধিপত্য ও সম্প্রসারণবাদের লক্ষ্যের প্রতিফলন।
গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাস্তবায়নে মধ্যস্থতা করার পর থেকে ট্রাম্প নিজেকে শান্তিরক্ষী হিসেবে দাবি করে আসছেন। ইসরাইল প্রায় প্রতিদিন যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করলেও ট্রাম্পের দাবি, তিন হাজার বছরের মধ্যে তিনি প্রথমবারের মতো মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি এনেছেন।
এদিকে সম্প্রতি ট্রাম্প প্রশাসনের প্রকাশিত জাতীয় নিরাপত্তা কৌশলে বলা হয়, মধ্যপ্রাচ্য অংশীদারত্ব, বন্ধুত্ব ও বিনিয়োগের স্থান হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে। এ অঞ্চল এখন আর আমেরিকার অগ্রাধিকার নয়।
ট্রাম্পের মূল্যায়নের যথার্থতা নির্বিশেষে বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের ঘোষণা ইসরাইলকে প্রকাশ্যে ট্রাম্পের বিরোধিতা এড়াতে অন্য ইস্যু খুঁজে বের করতে বাধ্য করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতি প্রচারকারী থিংক ট্যাংক কুইন্সি ইনস্টিটিউটের নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট ত্রিতা পারসি কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আলজাজিরাকে বলেন, ‘সঠিক বা ভুল’ যাই হোক, যেহেতু ট্রাম্প পারমাণবিক সমস্যা সমাধানের ঘোষণা দিয়েছেন, তাই তেহরানের ওপর চাপ বজায় রাখার জন্য ইসরাইল ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রের দিকে মনোনিবেশ করছে।
পারসি বলেন, ইরানের সঙ্গে আরেকটি যুদ্ধে ইসরাইলের সহযোগী হতে যুক্তরাষ্ট্রকে চাপ দিচ্ছেন নেতানিয়াহু। সেজন্য তিনি এবার ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রের দিকে মনোনিবেশ করেছেন, যেহেতু ট্রাম্প পারমাণবিক সমস্যা সমাধানের কথা বলেছেন।
আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন


যুক্তরাষ্ট্রের চেয়েও বেশি ভারতীয় বহিষ্কার সৌদি আরব থেকে
ইরানের বিরুদ্ধে পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র-ইসরাইল-ইউরোপ