টানা দুই বছর আগ্রাসনের মুখে থাকা গাজা উপত্যকায় শান্তি প্রতিষ্ঠায় আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২৯ সেপ্টেম্বর ২০ দফা পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন। এর অংশ হিসেবে ফিলিস্তিনি এ ভূখণ্ডে আন্তর্জাতিক অন্তর্বর্তী প্রশাসনের প্রধান হিসেবে ইতোমধ্যে ব্রিটেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের নাম সামনে এসেছে।
নতুন করে গত সপ্তাহে টনি ব্লেয়ারের অধীনে গাজার অন্তর্বর্তী সরকারের কিছু সদস্যের নামসহ এর কার্যক্রমের খসড়া পরিকল্পনা ফাঁস হয়। পরিকল্পনায় যেসব সদস্যের নাম এসেছে তাদের মধ্যে বেশিরভাগই ধনকুবের ও ব্যবসায়ী। কিন্তু পরীক্ষিত ‘নিরপেক্ষ’ ফিলিস্তিনিদের নাম এতে নেই।
ইসরাইল, মিসর ও আমেরিকার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে এ প্রশাসন কাজ করবে। খসড়া পরিকল্পনা অনুসারে, গাজা আন্তর্জাতিক অন্তর্বর্তী কর্তৃপক্ষ (গিটা) নামের এ প্রশাসন ফিলিস্তিনি এ ভূখণ্ডে অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য সর্বোচ্চ রাজনৈতিক ও আইনি ক্ষমতা চর্চা করবে।
খসড়া পরিকল্পনায় চারজন সম্ভাব্য সদস্যের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তবে এদের কেউই ফিলিস্তিনি নন।
এদের একজন সিগরিড কাগ, যিনি মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রক্রিয়ার কাজে জাতিসংঘের বিশেষ সমন্বয়ক। এছাড়া অন্য তিনজনকে ‘প্রশাসন ও অর্থনৈতিক কার্যকলাপে দক্ষ নেতৃস্থানীয় আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
বাকি তিনজন হলেন আবরাহাম অ্যাকোর্ড পিস ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী আরিয়ে লাইটস্টোন, মিসরের বিলিওনিয়ার টেলিকম ব্যবসায়ী নাজিব সাওয়াইরিস ও আমেরিকান ধনকুবের মার্ক রোয়ান।
পরিকল্পনায় অবশ্য জানানো হয়নি এ ধরনের দায়িত্বের জন্য তাদের কাছে প্রস্তাব করা হয়েছিল কি না।
আবরাহাম অ্যাকোর্ড পিস ইনস্টিটিউটের দায়িত্ব ছাড়াও আরিয়ে লাইটস্টোন একজন ব্যবসায়ী ও ইহুদি ধর্মীয় রাব্বি। আমেরিকা ও ইসরাইলের প্রচেষ্টায় অবরুদ্ধ উপত্যকায় ত্রাণ সরবরাহের জন্য প্রতিষ্ঠিত এনজিও গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) কার্যকলাপের সঙ্গে তিনি যুক্ত ছিলেন। এ এনজিওর ত্রাণকেন্দ্র থেকে খাবার নিতে গিয়ে ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় দুই হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আবরাহাম অ্যাকোর্ড পিস ইনস্টিটিউটের দায়িত্বশীল হিসেবে ইসরাইলের সঙ্গে আরব দেশগুলোর কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠায় তিনি তৎপরতা চালাচ্ছেন।
ধনকুবের নাজিব সাওয়াইরিস মিসরের টেলিকম প্রতিষ্ঠান ওরাসকমের মালিক। তার বাবা উনাসি সাওয়াইরিস এটি প্রতিষ্ঠা করেন। নাজিবের মোট সম্পদের পরিমাণ বর্তমানে ১০ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি।
৭১ বছর বয়সি এ ব্যবসায়ীর বহু আগে থেকেই টনি ব্লেয়ারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। ২০২০ সালে নাজিবের ছেলে আনসির বিয়েতে অতিথি ছিলেন ব্লেয়ার। ২০০১ সালে আফগানিস্তানে আমেরিকা-ব্রিটেনের আগ্রাসনের পর দেশটির ‘পুনর্গঠনে’ নাজিব অংশ নেন। বর্তমানেও তিনি ব্লেয়ারের সঙ্গে গাজা পুনর্গঠনে অংশ নিচ্ছেন।
এছাড়া ৬৩ বছর বয়সি আমেরিকান ইহুদি ধনকুবের মার্ক রোয়ান অ্যাপলো গ্লোবাল ম্যানেজমেন্টের সিইও। আমেরিকান সংবাদমাধ্যম সিএনএন তার কোম্পানি সম্পর্কে বলেছে, ‘এটি প্রাইভেট ইক্যুইটির শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে এক দানব, যেকোনো মূল্যে গলাকাটা মুনাফা অর্জন করা যে শিল্পের চরিত্র।’


ইন্দোনেশিয়ায় স্কুল ভবন ধসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫০
অস্ত্র সমর্পণে সম্মত হওয়ার বিষয়ে গণমাধ্যমের খবর বানোয়াট: হামাস