ইরান-সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীদের হাতে আটক জাতিসংঘের ৫৯ কর্মীর মধ্যে কয়েকজনকে বিশেষ আদালতে পাঠানোর ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। মঙ্গলবার মহাসচিবের মুখপাত্র স্টেফান দুজারিক এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানান।
মে ২০২৪ থেকে হুথিরা তাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় জাতিসংঘসহ স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থার কর্মীদের একাধিক দফায় গ্রেফতার করে আসছে। বিদ্রোহীরা রাজধানী সানা সহ ইয়েমেনের বৃহৎ অংশ নিয়ন্ত্রণে রেখেছে।
দুজারিক বলেন, “হুথি কর্তৃপক্ষের দ্বারা জাতিসংঘ কর্মীদের বিশেষ অপরাধ আদালতে তলবের ঘটনাকে মহাসচিব তীব্র নিন্দা জানাচ্ছেন।” কতজনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে—এ প্রশ্নে তিনি জানান, “৫৯ জনের মধ্যে কয়েকজনকে বিশেষ আদালতে পাঠানো হয়েছে, যা আমাদের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক।”
তিনি আরও বলেন, আটক ব্যক্তিরা সকলেই ইয়েমেনি নাগরিক এবং তাদের অনেককে বছরের পর বছর বিনা বিচারে, যোগাযোগহীন অবস্থায় রাখা হয়েছে—যা আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন। জাতিসংঘের পক্ষ থেকে হুথিদের প্রতি এ তলব আদেশ বাতিল এবং জাতিসংঘ, এনজিও ও কূটনৈতিক সম্প্রদায়ের সকল আটক ব্যক্তিকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
হুথিরা জাতিসংঘ কর্মীদের যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ করেছে, তবে জাতিসংঘ এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।
জাতিসংঘ মানবাধিকার হাইকমিশনার ভলকার টার্ক জানিয়েছেন, তার এক সহকর্মীকে ‘তার কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মনগড়া গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে’ হুথিদের বিশেষ আদালতে হাজির করা হয়েছে। তিনি বলেন, “এটি সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য এবং মানবাধিকারের গুরুতর লঙ্ঘন।” তারও দাবি—আটক সব জাতিসংঘ কর্মী ও অন্যান্য সংস্থার কর্মীদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে।
মানবাধিকার সংস্থার অভিযোগ, হুথিরা তাদের বিচারব্যবস্থা ব্যবহার করছে সাংবাদিক, এনজিও ও বিরোধীদের দমন-পীড়নের অস্ত্র হিসেবে। গত মাসে একটি হুথি আদালত ইসরাইল, যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে ১৭ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেয় বলে বিদ্রোহীদের গণমাধ্যমে জানানো হয়।
এসআর

