Ad T1

পরিচালকদের ঋণ নেওয়া আরো কঠোর করল বাংলাদেশ ব্যাংক

অর্থনৈতিক রিপোর্টার
প্রকাশ : ১০ মে ২০২৫, ২০: ১৫

নিজ ব্যাংক থেকে পরিচালক ও ব্যাংকসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ঋণ নেওয়া কঠোর করল বাংলাদেশ ব্যাংক। একই সঙ্গে ব্যাংকের নিজস্ব সাবসিডিয়ার প্রতিষ্ঠানে ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন নিতে হবে। গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক এ-সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে।

কোনো ব্যাংকের পরিচালক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা প্রধান নির্বাহী, উল্লেখযোগ্য শেয়ারধারক এমন ব্যক্তিরা ওই ব্যাংক থেকে তার শেয়ারের ৫০ শতাংশ বা ব্যাংক তার টিয়ার–১ মূলধনের ১০ শতাংশের বেশি টাকার ঋণ নিতে পারত না। নতুন প্রজ্ঞাপনে ঋণসীমা একই রেখে পরিচালক ও ব্যাংকসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে আরো অনেককেই যুক্ত করা হয়েছে। এই ঋণের আওতায় আসবে তাদের বেনিফিশিয়ার ওনার, সাবসিডিয়ার প্রতিষ্ঠান, পরিবার, বেনামি প্রতিষ্ঠান ও তাদের সংশ্লিষ্ট অন্য কারো নামের ঋণ।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেন, নতুন প্রজ্ঞাপনে পরিচালক ও ব্যাংকসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ঋণের আওতায় কমিয়ে আনা হয়েছে। আগে যে পরিমাণ ঋণ পরিচালক ও ব্যাংকসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা নিতে পারতেন, এখন তা পরাবেন না। কারণ তাদের সাবসিডিয়ার, পরিবার, বেনামি প্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্ট অন্য কারো নামে ঋণ থাকলে তার হিসাব করে সীমার মধ্যে পরিচালক ও ব্যাংকসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে নিজ ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে হবে।

এ ছাড়া ব্যাংক তার টিয়ার–১ মূলধনের ১০ শতাংশ ঋণ দেওয়ার পর যদি ক্যাপিটাল কমে যায়, তাহলে পরিচালক ও ব্যাংকসংশ্লিষ্ট ব্যক্তির অতিরিক্ত ঋণ কমিয়ে আনতে হবে। এ ধরনের লেনদেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুস্পষ্ট অনুমতি ছাড়া নবায়ন বা পরিবর্তন করা যাবে না।

তা ছাড়া পরিচালকদের ৫০ লাখ টাকার বেশি প্রত্যক্ষ ঋণ অথবা এক কোটি টাকার বেশি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ঋণের সুবিধার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমতি বাধ্যতামূলক। এর মধ্যে যেকোনো নবায়ন, পরিবর্তন বা জামানতের সমন্বয়ও অন্তর্ভুক্ত। আবেদনপত্রের সঙ্গে সিআইবি রিপোর্ট, পর্ষদের অনুমোদন ও সংশ্লিষ্ট পক্ষের তুলনায় ন্যায্য আচরণের প্রমাণপত্র জমা দিতে হবে এবং বিদ্যমান সুবিধার মেয়াদ শেষ হওয়ার কমপক্ষে সাত কার্যদিবস আগে জমা দিতে হবে। নিজ ব্যাংক থেকে ঋণের তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠাতে হবে। আগামী সেপ্টেম্বর থেকে এ তথ্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা দিতে হবে।

এদিকে নিজ ব্যাংকের সাবসিডিয়ার প্রতিষ্ঠানের ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে কঠোর করল বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন থেকে সাবসিডিয়ার প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দিতে হলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন নিতে হবে। এ ছাড়া কোনো ব্যক্তি ব্যাংকসংশ্লিষ্ট হয়েও তা না জানিয়ে ঋণ পরবর্তীতে তা পরিদর্শনে বেরিয়ে এলে দ্রুত সমন্বয় করতে হবে। তা না হলে কঠোর ব্যবস্থা নেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

এ ছাড়া ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার (সিইও) ক্ষেত্রে আরো কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। ব্যাংক তাদের বা তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন বা তাদের সঙ্গে যুক্ত কোনো প্রতিষ্ঠানকে কোনো ধরনের জামানতবিহীন ঋণ বা অগ্রিম দিতে পারবে না। যেহেতু এমডি ও সিইওরা চুক্তিভিত্তিক কর্মকর্তা, তাই তারা কর্মচারী ঋণ প্রকল্পের আওতার বাইরে থাকবেন। যদিও বিদেশি ব্যাংকের দেশীয় প্রধানরা তাদের প্রতিষ্ঠানের নীতিমালা অনুসরণ করতে পারবেন। সাধারণ গ্রাহকের শর্তে ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করা যেতে পারে, তবে তা ইস্যুর কমপক্ষে সাত কার্যদিবস আগে বাংলাদেশ ব্যাংককে জানাতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমতি ছাড়া এমডি–সিইও বা তাদের সহযোগীদের কোনো ধরনের আসল বা স্বীকৃত আয় (সুদ বা মুনাফা) মওকুফ করা যাবে না।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত