বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) ছাত্রদলের সদ্য ঘোষিত আংশিক কমিটি গঠনে ২০ লাখ টাকা লেনদেনের অভিযোগ তুলেছেন পদবঞ্চিত সভাপতি প্রার্থী মো. ইমরান হোসাইন। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
ইমরান হোসাইন অভিযোগ করেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ-সভাপতি মুসা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আদনান, তাইজুলসহ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক নাসির হোসেনের সম্পৃক্ততায় অর্থের বিনিময়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমার অভিযোগ-কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের দায়িত্বপ্রাপ্ত টিম লিডার সহ-সভাপতি মুসা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আদনান, তাইজুলসহ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক নাসির হোসেনসহ বেশ কয়েকজন দায়িত্বশীল প্রভাব বিস্তার করেছেন।
কমিটির জন্য সহ-সভাপতি এমএম মুসা আমার কাছে সরাসরি টাকা চায়, বলে টাকা ১০ লাখ দিলেই তুমি সভাপতি। আমি জানায় যে আমি ছাত্র রাজনীতি করবো সাধারণ শিক্ষার্থীদের কণ্ঠস্বর হয়ে কাজ করবো শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শের রাজনীতি চায় যেটা আমার পারিবারিকভাবেই পেয়ে আসছি তাই আমি এহেন প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয় তবুও তিনি আমাকে বারবার বুঝান সভাপতি হলে নিয়োগ ব্যাণিজ্য করবা, টেন্ডারগুলো নিবো ইতোপূর্বে দেখছো না কাম্পাসে লন্ড্রির দোকান পর্যন্ত এখনকার আহ্বায়ক খাচ্ছেন, ছোট খাটো অনেক টেন্ডারও পাচ্ছে, ভিসিতো আমার কাম্পাসের স্যার তার সাথে যোগাযোগ করে দিবো তাকে তুমি সাপোর্ট দিবা বাকিটা আমি দেখবো। আমাকে বলে আমরা যে এসেছি তোমাদের কমিটি দিতে এখানে আসা থাকা খরচতো লাগবে নিজের টাকা দিয়ে তো আর তোমায় সভাপতি বানাতে পারি না। সেটার কথা বিবেচনা করে আমার কষ্টে অর্জিত টাকা যেটা আমি কোচিং চালিয়ে প্রাইভেট পড়িয়ে উপার্জন করেছি সেখান থেকে কয়েক ধাপে ২ লাখ টাকা তার হাতে দিয়েছিলাম।
তিনি আরো বলেন, এতেও সে সন্তুষ্ট না হয়ে পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের মধ্যে জামায়াতপন্থি ও আওয়ামীপন্থি কিছু প্রভাবশালী এবং অবৈধ নিয়োগের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী এমন ব্যক্তি এবং নারী কেলেঙ্কারিতে জড়িত শিক্ষকদের সাথে গড়ে ওঠা ঘনিষ্ঠতার সুযোগে ২০ লাখ টাকারও বেশি লেনদেন হয়েছে এবং তার বিনিময়ে তাদের পছন্দের মানুষদের কমিটি দিতে হবে এমন কথায় কমিটও হয়।
এমন অভিযোগ উঠে এসেছে ত্যাগী নেতাকর্মীদের এবং বিভিন্ন পেজ, গ্রুপের কাছ থেকে। এই কমিটি যে প্রশাসনের আনা সেটা আপনারা ইতোমধ্যে জেনেছেন কারণ সাধারণ শিক্ষার্থীরা যখন তাদের দাবি আদায়ে ভিসি কে প্রশাসনকে অবরুদ্ধ করতে চায় তখন তারাই ঢাল হয়ে দাঁড়িয়ে ভিসিকে ভবন থেকে নিয়ে নিয়ে যায় যেটা বিভিন্ন পেজে লেখালেখির মাধ্যমে আমরা জানি। এই দুর্নীতি ও দপ্তর-বাণিজ্যের ফলে নবগঠিত কমিটিতে তিনজন ছাত্রলীগপন্থি সভাপতি ইয়ামিন, সহ-সভাপতি তুহিন রানা, প্রচার সম্পাদক মাসুদ রানা এবং বিতর্কিত অতীত থাকা কয়েকজন ব্যক্তি এবং নেশাগ্রস্থ ব্যক্তিকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি এম এম মুসা বলেন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলে আমরা রানিং ছাত্রদের রেখেছি। আমার বিরুদ্ধে যে ২০ লাখ টাকার অভিযোগ তুলেছে তা মিথ্যা। ছাত্রদলের কমিটিতে পদ না পাওয়ার কারণে এই মিথ্যা অভিযোগ। সে যদি আমার বিরুদ্ধে ২০ লাখ কেন ২০ টাকার লেনদেনের প্রমাণ দিতে পারে আপনারা খতিয়ে দেখবো।
উল্লেখ; গত ২৭ নভেম্বর ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি মো. রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি মাধ্যমে নতুন কমিটি প্রকাশিত হয়।

