পরিপাটি ঘরবাড়ি আমাদের সবারই পছন্দ। আমরা সবাই কমবেশি ঘরবাড়ির সবকিছুই গুছিয়ে রাখি, পরিষ্কার করে রাখি; শুধু বাথরুম নিয়ে ভাবি না, সাজানোর কথা মাথায় থাকে না। ভালো দেখে একটা কমোড আর বেসিন লাগিয়ে দিলেই মনে করি—‘ব্যস হয়ে গেল। দায়িত্ব শেষ।’ বরং এই অংশটিরই সঠিক সাজসজ্জা ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা প্রয়োজন।
আপনার বাড়ির প্রতিটি ঘরই মনের মাধুরী মিশিয়ে সাজিয়েছেন। লিভিং রুম থেকে বেডরুম, কিছুই বাদ যায়নি। আধুনিক ফার্নিচার, টেক্সচার্ড ওয়াল, ফ্লোরের ডিজাইন—সবকিছুই একদম ঠিকঠাক। আর বাথরুম? এই অংশ নিয়েও ভাবতে হবে। তা না হলে পুরো বাড়ির সাজসজ্জার সঙ্গে বাথরুম একদমই বেমানান লাগবে। অন্যসব ঘরের মতো বাথরুমেরও রয়েছে নিজস্ব একটা অবয়ব। দেয়ালের রঙ, ফ্লোরের টাইলস ও বেসিনের আকারেও মেলে রুচির পরিচয়।
বাথরুমের ডিজাইন
বাথরুমের ডিজাইনে প্রথমেই খেয়াল রাখতে হবে, প্রাকৃতিক আলো-বাতাস যেন ঠিকমতো চলাফেরা করতে পারে। শুকনা আর ভেজা অংশ সবসময় আলাদা রাখুন। সিঙ্ক, টয়লেট, শাওয়ার—এই তিনটি এরিয়া সমান গুরুত্ব দিয়ে বাথরুম তৈরি করতে হবে। তাই বলে ত্রিভুজ ডিজাইন করবেন না। এই তিনটি পার্ট এক লাইনে রাখুন, তাহলে আপনার প্লামিংয়ের খরচ অনেকটা কমে যাবে। বেসিন দরজার কাছাকাছি রাখতে পারেন। বাথরুম ছোট হলে কিংবা বড় থাকলেও পেডেস্টাল সিঙ্ক ব্যবহার করতে পারেন। এতে জায়গা বাঁচবে। সিঙ্কের ওপরে বড় মাপের আয়না রাখতে পারেন। আয়নায় ছোট বাথরুমকেও কিছুটা বড় দেখাবে। সিঙ্কের সঙ্গে রাখতে পারেন ছোট্ট একটা ক্যাবিনেট। প্রসাধনী ও শেভিং কিট এখানে রাখতে পারেন।
টয়লেট ও শাওয়ার জোন
দরজা থেকে বেশ দূরে রাখবেন টয়লেট ও শাওয়ার জোন। বাথরুম খুললেই যেন কমোড দেখা না যায়, সেদিক খেয়াল রাখতে হবে। তাই সিঙ্কের পাশে একটা ছোট পার্টিশন লাগাতে পারেন। অনেকেই এখন সাসপেন্ডেড কমোড আর কনসিলড সিসটার্ন ব্যবহার করেন। এতে বেশ জায়গা বেঁচে যায়। তাছাড়া কারো নজরে পড়ে না। তারপরই থাকবে শাওয়ার এরিয়া। এই জায়গাটা অন্তত ইঞ্চিখানেক সিমেন্ট দিয়ে বাথরুম ফ্লোর গার্ড করে নিতে পারেন। এতে পানি শাওয়ার এরিয়ার বাইরে যেতে পারবে না। আর যদি আপনার বাথরুম বড় হয়, তবে রাখতে পারেন বাথটাব। শাওয়ার কার্টেন বা কাচের শাওয়ার কিউবিকল লাগাতে পারেন মাঝে। এতে পানি বাইরে ছিটে আসবে না। এই এরিয়ায় সাবান-শ্যাম্পু-তেল রাখার জন্য একটা তাক রাখুন।
মানানসই অ্যান্টি-স্কিড সির্যামিক টাইলসের ব্যবহার
বাথরুমে পানির ব্যবহার সবচেয়ে বেশি হয়। তাই ফ্লোর ও দেয়ালে অ্যান্টি-স্কিড সির্যামিক টাইলস ব্যবহার করলে সহজে পরিষ্কার করা যাবে, পিচ্ছিলও হবে না। বাজারে নানা রঙ ও ডিজাইনের টাইলস পাওয়া যায়। এখন ওয়াল টু ওয়াল টাইলস খুব জনপ্রিয় এবং দেখতেও বেশ। বাথরুমকে সুন্দর দেখাতে রঙিন টাইলস ব্যবহার করতে পারেন। নীল ও সবুজ রঙ মন ভালো রাখবে। মোনোটনি ব্রেক করতে হলে হালকা ও গাঢ় রঙের টাইলস মিশিয়ে লাগান। এছাড়া টেক্সচার্ড ওয়াল তো আছেই। সুতরাং খুব সহজেই আপনার বাথরুমকে বৈচিত্র্যময় করে তুলতে পারেন।

