আমার দেশ জনপ্রিয় বাংলা নিউজ পেপার

ঈদের সকালের সাজ

সুবানা হাসিন
ঈদের সকালের সাজ

ঈদের সকালে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো, বাইরে ঘুরতে যাওয়া, রান্নাঘরের কাজ গোছানো এবং মেহমান সামলানোয় ব্যাপৃত থাকতে হয়। এসবের মাঝে আবার সাজপোশাক থাকা চাই ফিটফাট। ঈদকে ঘিরে সাজ নিয়ে মেয়েদের বেশ প্রস্তুতি থাকে। পোশাক বাছাই আর নিত্যনতুন ট্রেন্ডের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হয়। ঈদের সকালে প্রাণবন্ত ও সূক্ষ্ম সাজ আপনাকে করে তুলতে পারে আলাদা। সেজন্য খুব যে জাঁকজমকপূর্ণ সাজে থাকতে হবে তা নয়। পোশাকের পাশাপাশি সাজেও স্বস্তি থাকতে হবে। ঈদের সকালে সাজসজ্জা কেমন হবে, তার পরামর্শ দিয়েছেন জারা’স বিউটি লাউঞ্জ অ্যান্ড ফিটনেস সেন্টারের কর্ণধার ফারহানা রুমি।

ঈদের আগে যত্ন

বিজ্ঞাপন

ঈদের দিন নিজেকে সুন্দর ও আকর্ষণীয় করে তুলতে আগেই কিছু কাজ করে রাখা দরকার। ফেসিয়াল, চুলে নতুন কাট, মেনিকিউর, পেডিকিউর, ভুরু প্লাক, হেয়ার ট্রিটমেন্ট প্রভৃতি। এতে সৌন্দর্যটা ফুটে ওঠে খুব সুন্দরভাবে। মসৃণ ত্বকে যত্নের প্রয়োজন হয় না, এমন ভাবার কোনো কারণ নেই। সৌন্দর্যের যত্ন না নিলে সমস্যায় পড়তে হয়। তাই ঈদের সময় এমনিতেই ব্যস্ত সময় কাটে, তার মধ্যেও নিজেকে আগে থেকে গুছিয়ে রাখতে হবে। নিজেকে সাজাতে হবে স্নিগ্ধ ও সুন্দর করে।

সকালে উজ্জ্বল থাকুন

ঈদের দিনের সকালটা যেহেতু নানা কাজের মধ্য দিয়ে কাটাতে হয়, তাই আরামদায়কভাবে কাজ করতে সুবিধা হয়, এমন পোশাক বেছে নেওয়া ভালো। এ ক্ষেত্রে সালোয়ার-কামিজ হতে পারে ভালো পছন্দ। এ সময়ে একটু রঙচঙে সালোয়ার-কামিজ পরতে পারেন। উজ্জ্বল রঙের পোশাকের সঙ্গে পরিমিত সাজ দেখতে ভালো লাগবে। হালকা রঙের ঢিলেঢালা পোশাক পরলে কাফতান সেরা পছন্দ। এ ছাড়া ওয়ানপিস টপস অথবা আরামদায়ক কুর্তিও বেছে নিতে পারেন। ঈদের সকালে এমন পোশাকে পরুন যাতে নিজেকে অনেক সতেজ লাগে।

সকালে স্নিগ্ধ সাজে

সকালের সাজে প্রাধান্য পায় স্নিগ্ধ ও শুভ্র সৌন্দর্য। সব দিক মাথায় রেখে ঈদের সকালের সাজ হতে হবে। পোশাকের সঙ্গে সঙ্গে মেকআপও বেছে নিতে হবে হালকা। এজন্য সকালের সাজে ছিমছাম ভাবটা বজায় রাখতে হবে। এ সময় নিজেকে যতটা সম্ভব হালকা ও ন্যাচারাল লুক দিতে হবে। হালকা ফাউন্ডেশন দিয়ে শুরু করতে পারেন সকালের সাজ। ত্বকের টোন বুঝে ফাউন্ডেশন ব্যবহার করতে হবে। ফাউন্ডেশন ব্যবহারের পর হালকা কনট্যুরিং করে নিতে হবে। এতে ত্বকে সতেজতা আসবে। এর ওপর পাউডার ও কনসিলারে ফিনিশিং করতে হবে। এ ছাড়া আরো সহজভাবে সাজতে চাইলে ঘরের প্রতিদিনের মেকআপ দিয়ে সেজে নেওয়া যেতে পারে। এর জন্য অবশ্যই মনে রাখতে হবে, মেকআপের আগে কিছুক্ষণ বরফ ব্যবহার করতে হবে মুখে। তারপর মুখে ময়েশ্চারাইজার, সানস্ক্রিন ও প্রাইমার ব্যবহার করতে হবে। বিবি বা সিসি ক্রিম ব্যবহার করে একটা ন্যাচারাল লুক এনে লুস পাউডার ব্যবহার করতে পারেন। এমনই হালকা সাজে আপনি হয়ে উঠবেন অনন্য।

চোখের সাজ

প্রথমে চোখ পরিষ্কার করে তাতে কনসিলার বা প্রাইমার ব্যবহার করতে হবে। তারপর ড্রেসের সঙ্গে মিলিয়ে চোখের পাতায় হালকা পিচ কালারের একটি আইশ্যাডো দিয়ে চোখের বেস তৈরি করতে হবে। চোখের আউটার কর্নারে একটু ডিপ কফি বা আপনার ড্রেসের সঙ্গে মিল রেখে একটি আইশ্যাডো কালার দিয়ে ব্লেন্ড করে নিতে পারেন। চোখে কাজলের লাইনার দিতে পারেন। চোখে কাজল না দিয়ে বরং আইলাইনার ব্যবহার করতে পারেন সকালের সাজে। আইলাইনার দিতে চাইলে ওয়াটারলাইন বরাবর চিকন করে লাইন করে দিন। মাশকারা দিতে পারেন হালকা করে। চোখের সাজের ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। চোখের সাজের ক্ষেত্রে কখনো নন-ব্র্যান্ড প্রোডাক্ট ব্যবহার করবেন না। এছাড়া ভুরু আঁকতে পারেন। একটু মোটা ভুরুর ট্রেন্ডটাই এখন চলছে। ভুরুর শেষের অংশটাকে আগে এঁকে নিতে পারেন।

ঠোঁটের সাজ

ঈদে ঠোঁটের সাজে বৈচিত্র্য আনা যেতেই পারে। সকালের সাজে ঠোঁটে ন্যুড কালারের যেকোনো শেডে লিপকালার কিংবা গ্লস দিতে পারেন। পরিষ্কার ত্বকের ওপর ন্যুড রঙের লিপস্টিক লাগিয়ে এর ওপরে লিপগ্লসও লাগাতে পরেন।

ঠোঁটে ম্যাট লিপস্টিক লাগিয়ে নিতে পারেন। ঠোঁটের সাজ হালকা রাখলে চেহারায় স্নিগ্ধভাব আসে। ঠোঁটের ওপর লিপলাইনারের ব্যবহার চলছে। লিপস্টিক ও লিপলাইনার দুটি মিলিয়েই নানাভাবে ঠোঁট সাজাতে পারবেন। ঠোঁটের সাজের ক্ষেত্রে উজ্জ্বল রঙ ব্যবহার করতে চাইলে পার্পেল, মেরুন, লাল, বেগুনি ও গোলাপি রঙ ব্যবহার করতে পারেন।

চুলের সাজ

ঈদে পোশাক বা মেকআপের মতো চুলের সাজের ট্রেন্ডও পরিবর্তিত হয়। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক ফ্যাশন ধারা সে ক্ষেত্রে বেশ প্রভাব ফেলে। এর সঙ্গে যোগ হয় আমাদের দেশীয় প্রেক্ষাপট আর নিজস্বতা। ঈদ উৎসবে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ও জনপ্রিয় স্টাইলই বেশি দেখা যায়। বেণি, খোঁপা আর পনিটেইল—এই তিনটি হেয়ার স্টাইলে বিভিন্ন ভেরিয়েশনের মাধ্যমে বৈচিত্র্যময় নতুন লুক আনা সম্ভব। সকালে চুল বেণি করে পেছনের দিকে আঁটোসাঁটোভাবে বেঁধে রাখতে পারেন। পেছন দিকে ফিতা দিয়ে একটু ভিন্নভাবে নকশা করতে পারেন। চাইলে ঝুঁটি করে নিতে পারেন। পরিপাটিভাবে চুল না আঁচড়িয়ে বরং খানিকটা এলোমেলো ভাব রাখা যেতে পারে। দিনের শুরুতে এভাবে চুলের স্টাইল করে নিয়ে একটু ‘ক্যাজুয়াল’ থাকলেই ভালো লাগবে। এভাবে চুল বাঁধলে চুল ঘনও দেখাবে। যাদের চুল ছোট, তারা ঈদের দিন সকালে চুল সামনে থেকে টুইস্ট করে ছেড়ে রাখতে পারেন। আর যাদের চুল মিডিয়াম ও লম্বা, তারা পাঞ্চ ক্লিপের সাহায্যে পনিটেইল করতে পারেন। আবার মেসি হেয়ার বান করলেও কিন্তু দেখতে খুবই এলিগেন্ট লাগবে। চুল লম্বা হলে নিচের দিকে কার্ল করে নিতে পারেন, সামনে বেণি বা টুইস্ট করে নিতে পারেন। চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে সকালে গোসলের সময় চুলে শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহার করতে হবে, এরপর সিরাম। এই সময়ে চুল খোলা রাখতে পারেন। সেক্ষেত্রে স্ট্রেইট করে আয়রন করে নিলে ভালো দেখাবে। তবে যে হেয়ার স্টাইলই করুন না কেন, নিজের স্বস্তি ও স্বাচ্ছন্দ্যের বিষয়টিতে সবার আগে প্রাধান্য দিতে হবে।

Google News Icon

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন