ড. মোহাম্মদ ওবায়দুল্লাহ
উত্তরাধিকার আইনে নারীর বৈষম্য নিয়ে উত্থাপিত বিষয়টি ইসলাম ও মুসলিমবিরোধীদের একটি অমূলক ও ভ্রান্ত অভিযোগ। যুগে যুগে এ প্রশ্নটি যেমন তর্ক-বিতর্কে রূপ নিয়েছে, তেমনি শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানকে নস্যাৎ করতে তৎপর তথাকথিত সুশীলরা কৌশল বুঝে বিষয়টি সময়ে সময়ে সামনে এনেছে; বিশেষ শ্রেণিকে উসকে দিয়েছে। আমি দেখেছি উচ্চশিক্ষিত ব্যক্তিটিও বিষয়টি না বোঝার ভান করে; বিতর্ক করতে পছন্দ করে। কোরআন ও সুন্নাহর প্রমাণ তুচ্ছ করে, যুক্তিকে অগ্রাহ্য করে বাহ্যিক শুধু একটি বিষয়কে প্রাধান্য দেয়। তা হলো ‘পুত্র-কন্যার দ্বিগুণ পায়’। দুঃখজনক হলেও সত্য, তারা আল-কোরআনের আয়াতগুলো যেমন পাঠ করেনি, তেমনি ফিকহি বিশ্লেষণও অধ্যয়ন করেননি।
শুরুতেই দেখে নেওয়া যাক, আল-কোরআন এ বিষয়টিকে কীভাবে উল্লেখ করেছে? মোটাদাগে, আল-কোরআনের চতুর্থ সুরা আন-নিসায় পাঁচটি আয়াতে তথা ৭, ১১, ১২, ৩৩ এবং ১৭৬ নম্বর আয়াতগুলোয় ইসলামি উত্তরাধিকার আইন সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত কিন্তু পরিপূর্ণ মূলনীতির আলোচনা করা হয়েছে। আপাতদৃষ্টিতে এ বিষয়গুলোর দিকে তাকালে মনে হবে ক্ষেত্রে ক্ষেত্রে নারীদের পুরুষের তুলনায় কম অংশ দেওয়ার মাধ্যমে বৈষম্য সৃষ্টি করা হয়েছে। কিন্তু সূক্ষ্ম দৃষ্টিতে বিচার করলে তার উত্তর এই আয়াতগুলোর মধ্যেই এবং বর্ণনার আশপাশে বর্ণিত হয়েছে, যা প্রায়ই কেউ আলোচনায় আনেন না। উদাহরণস্বরূপ আমরা বলতে পারি, উত্তরাধিকার বিষয়ে আলোচনা শুরুর আগে বিয়ে-সংক্রান্ত আলোচনা স্থান পেয়েছে। সেখানে স্ত্রীদের মোহর পরিশোধ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং তা সন্তুষ্টচিত্তেই করতে হবে। [আয়াত ৪ : ৪] এটি নারীদের অধিকার এবং মালিকানাও তার।
তদুপরি, কিছু অবস্থা আছে, যেখানে পুরুষরা উত্তরাধিকারী হন না কিন্তু নারীরা হন। এ বিষয়টা আমরা কতটুকু জানি? সে অবস্থাগুলো হলো : (১) নানি (মায়ের মা) উত্তরাধিকারী হতে পারেন কিন্তু দাদা (বাবার বাবা) সব সময় উত্তরাধিকারী নন, (২) মৃত ব্যক্তি মারা যাওয়ার সময় যদি মা থাকেন এবং বাবা না থাকেন, তাহলে মা এ সম্পত্তির মালিক হবেন এবং বাবা না থাকার কারণে বাবার দিকের কোনো পুরুষ এ সম্পত্তির ভাগ পাবে না, (৩) সন্তানহীন ব্যক্তির সম্পত্তিতে তার বাবা-মা না থাকলে এবং একমাত্র বোন থাকলে সম্পত্তির একক মালিক হতে পারেন, কিন্তু ভাই তা পান না বরং অন্যদের সঙ্গে শেয়ার করতে হয়, (৪) ছেলের মেয়েরা কিছু ক্ষেত্রে উত্তরাধিকারী হন কিন্তু চাচাতো ফুফাতো ভাইয়েরা কোনো ভাগ পান না, (৫) নারীরা অনেক ক্ষেত্রেই নির্দিষ্ট অংশপ্রাপ্ত কিন্তু পুরুষদের কিছু পরিস্থিতিতে ‘আসাবা’ (নির্দিষ্ট অংশ না পেয়ে অবশিষ্টাংশ পাওয়া) হয়। ফলে, নির্দিষ্ট কোনো অংশ নাও পেতে পারেন।
এখন যুক্তি না মানলেও একটি যুক্তি দিই। দেখুন প্রকৃতিগতভাবে একজন পুরুষ যা করতে পারেন, তা একজন স্ত্রী নাও করতে পারেন। আবার একজন স্ত্রী যা করতে পারেন, তা একজন নারী নাও করতে পারেন। তাই বলে কি তাদের মধ্যে সমতা নেই। আছে। এই কিছু ক্ষেত্রে পারা না পারা একে অন্যের মধ্যে যেমন সমতা নিয়ে এসেছে, ঠিক তেমনি শরয়ি বিধানের ক্ষেত্রেও তাই করা হয়েছে।
স্ত্রীর মোহর, ভরণপোষণই শুধু স্বামীর ওপর বর্তায় না বরং তার নিরাপত্তার দায়িত্বও তাকে নিতে হয় [সুরা আল-বাকারাহ : ২৩৩]। মোহরের পরিমাণটাও নির্ধারণ হবে স্ত্রীর সামাজিক অবস্থা বিবেচনায়। ভাই সম্পত্তির দ্বিগুণ পেয়েই তার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পান না। বরং ওই বোনের প্রয়োজনে ভাইকে দায়িত্ব পালন করতে হয় বাধ্য হয়ে। বোনের প্রয়োজনে ভাইয়ের দায়িত্বপালন বাধ্যতামূলক হলেও বোনের ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য নয়। নারীর কাজ করা বাধ্যতামূলক নয়। তবু তাদের মালিকানার অধিকার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। কিন্তু স্বামীর জন্য তা ফরজ করে দেওয়া হয়েছে। পুরুষকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তার স্ত্রীর, বাবা-মা, সন্তানসন্ততি, ভাই-বোনদের দেখাশোনা করা, তাদের প্রয়োজন মেটানো। ক্ষেত্রবিশেষ নিকট-দূর-আত্মীয় প্রতিবেশীর অধিকার নিশ্চিত করা। এটি তাদের ওপর বাধ্যতামূলক কাজ। অন্যদিকে একজন নারীকে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়নি।
শুধু মালিকানাই যথেষ্ট নয়। বরং তার সঙ্গে নিজের এবং সম্পদের নিরাপত্তাও জরুরি। সম্পদের সুষম ব্যবহার নিশ্চিত করতে না পারলে সে সম্পদ শেষ হয়ে যায়। এগুলোর দায়িত্বও পুরুষদের দেওয়া হয়েছে। নারীরা এসব কষ্ট করা ছাড়াই তার সব অর্থনৈতিক মুক্তি লাভ করেছে বিনিময় ছাড়া। এটিই শরিয়তদাতার বিধান। এ বিধান সুদূরপ্রসারী। যুগ যুগ ধরে হাজার হাজার আইন প্রণয়ন করে আধুনিক সভ্যতা কিংবা রাষ্ট্রব্যবস্থা যেখানে উত্তরাধিকার আইন নিশ্চিত করতে পারেনি, সেখানে এক পৃষ্ঠার দিকনির্দেশনায় তার সুষ্ঠু সমাধান করা হয়েছে। জ্ঞানীদের জন্য এখানেও অনেক শিক্ষা রয়েছে। অহেতুক সৃষ্টিকর্তার সঙ্গে চ্যালেঞ্জ করে শুধু হতভাগারাই বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নষ্ট করতে পারে।
উত্তরাধিকার আইনে নারীর বৈষম্য নিয়ে উত্থাপিত বিষয়টি ইসলাম ও মুসলিমবিরোধীদের একটি অমূলক ও ভ্রান্ত অভিযোগ। যুগে যুগে এ প্রশ্নটি যেমন তর্ক-বিতর্কে রূপ নিয়েছে, তেমনি শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানকে নস্যাৎ করতে তৎপর তথাকথিত সুশীলরা কৌশল বুঝে বিষয়টি সময়ে সময়ে সামনে এনেছে; বিশেষ শ্রেণিকে উসকে দিয়েছে। আমি দেখেছি উচ্চশিক্ষিত ব্যক্তিটিও বিষয়টি না বোঝার ভান করে; বিতর্ক করতে পছন্দ করে। কোরআন ও সুন্নাহর প্রমাণ তুচ্ছ করে, যুক্তিকে অগ্রাহ্য করে বাহ্যিক শুধু একটি বিষয়কে প্রাধান্য দেয়। তা হলো ‘পুত্র-কন্যার দ্বিগুণ পায়’। দুঃখজনক হলেও সত্য, তারা আল-কোরআনের আয়াতগুলো যেমন পাঠ করেনি, তেমনি ফিকহি বিশ্লেষণও অধ্যয়ন করেননি।
শুরুতেই দেখে নেওয়া যাক, আল-কোরআন এ বিষয়টিকে কীভাবে উল্লেখ করেছে? মোটাদাগে, আল-কোরআনের চতুর্থ সুরা আন-নিসায় পাঁচটি আয়াতে তথা ৭, ১১, ১২, ৩৩ এবং ১৭৬ নম্বর আয়াতগুলোয় ইসলামি উত্তরাধিকার আইন সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত কিন্তু পরিপূর্ণ মূলনীতির আলোচনা করা হয়েছে। আপাতদৃষ্টিতে এ বিষয়গুলোর দিকে তাকালে মনে হবে ক্ষেত্রে ক্ষেত্রে নারীদের পুরুষের তুলনায় কম অংশ দেওয়ার মাধ্যমে বৈষম্য সৃষ্টি করা হয়েছে। কিন্তু সূক্ষ্ম দৃষ্টিতে বিচার করলে তার উত্তর এই আয়াতগুলোর মধ্যেই এবং বর্ণনার আশপাশে বর্ণিত হয়েছে, যা প্রায়ই কেউ আলোচনায় আনেন না। উদাহরণস্বরূপ আমরা বলতে পারি, উত্তরাধিকার বিষয়ে আলোচনা শুরুর আগে বিয়ে-সংক্রান্ত আলোচনা স্থান পেয়েছে। সেখানে স্ত্রীদের মোহর পরিশোধ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং তা সন্তুষ্টচিত্তেই করতে হবে। [আয়াত ৪ : ৪] এটি নারীদের অধিকার এবং মালিকানাও তার।
তদুপরি, কিছু অবস্থা আছে, যেখানে পুরুষরা উত্তরাধিকারী হন না কিন্তু নারীরা হন। এ বিষয়টা আমরা কতটুকু জানি? সে অবস্থাগুলো হলো : (১) নানি (মায়ের মা) উত্তরাধিকারী হতে পারেন কিন্তু দাদা (বাবার বাবা) সব সময় উত্তরাধিকারী নন, (২) মৃত ব্যক্তি মারা যাওয়ার সময় যদি মা থাকেন এবং বাবা না থাকেন, তাহলে মা এ সম্পত্তির মালিক হবেন এবং বাবা না থাকার কারণে বাবার দিকের কোনো পুরুষ এ সম্পত্তির ভাগ পাবে না, (৩) সন্তানহীন ব্যক্তির সম্পত্তিতে তার বাবা-মা না থাকলে এবং একমাত্র বোন থাকলে সম্পত্তির একক মালিক হতে পারেন, কিন্তু ভাই তা পান না বরং অন্যদের সঙ্গে শেয়ার করতে হয়, (৪) ছেলের মেয়েরা কিছু ক্ষেত্রে উত্তরাধিকারী হন কিন্তু চাচাতো ফুফাতো ভাইয়েরা কোনো ভাগ পান না, (৫) নারীরা অনেক ক্ষেত্রেই নির্দিষ্ট অংশপ্রাপ্ত কিন্তু পুরুষদের কিছু পরিস্থিতিতে ‘আসাবা’ (নির্দিষ্ট অংশ না পেয়ে অবশিষ্টাংশ পাওয়া) হয়। ফলে, নির্দিষ্ট কোনো অংশ নাও পেতে পারেন।
এখন যুক্তি না মানলেও একটি যুক্তি দিই। দেখুন প্রকৃতিগতভাবে একজন পুরুষ যা করতে পারেন, তা একজন স্ত্রী নাও করতে পারেন। আবার একজন স্ত্রী যা করতে পারেন, তা একজন নারী নাও করতে পারেন। তাই বলে কি তাদের মধ্যে সমতা নেই। আছে। এই কিছু ক্ষেত্রে পারা না পারা একে অন্যের মধ্যে যেমন সমতা নিয়ে এসেছে, ঠিক তেমনি শরয়ি বিধানের ক্ষেত্রেও তাই করা হয়েছে।
স্ত্রীর মোহর, ভরণপোষণই শুধু স্বামীর ওপর বর্তায় না বরং তার নিরাপত্তার দায়িত্বও তাকে নিতে হয় [সুরা আল-বাকারাহ : ২৩৩]। মোহরের পরিমাণটাও নির্ধারণ হবে স্ত্রীর সামাজিক অবস্থা বিবেচনায়। ভাই সম্পত্তির দ্বিগুণ পেয়েই তার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পান না। বরং ওই বোনের প্রয়োজনে ভাইকে দায়িত্ব পালন করতে হয় বাধ্য হয়ে। বোনের প্রয়োজনে ভাইয়ের দায়িত্বপালন বাধ্যতামূলক হলেও বোনের ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য নয়। নারীর কাজ করা বাধ্যতামূলক নয়। তবু তাদের মালিকানার অধিকার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। কিন্তু স্বামীর জন্য তা ফরজ করে দেওয়া হয়েছে। পুরুষকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তার স্ত্রীর, বাবা-মা, সন্তানসন্ততি, ভাই-বোনদের দেখাশোনা করা, তাদের প্রয়োজন মেটানো। ক্ষেত্রবিশেষ নিকট-দূর-আত্মীয় প্রতিবেশীর অধিকার নিশ্চিত করা। এটি তাদের ওপর বাধ্যতামূলক কাজ। অন্যদিকে একজন নারীকে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়নি।
শুধু মালিকানাই যথেষ্ট নয়। বরং তার সঙ্গে নিজের এবং সম্পদের নিরাপত্তাও জরুরি। সম্পদের সুষম ব্যবহার নিশ্চিত করতে না পারলে সে সম্পদ শেষ হয়ে যায়। এগুলোর দায়িত্বও পুরুষদের দেওয়া হয়েছে। নারীরা এসব কষ্ট করা ছাড়াই তার সব অর্থনৈতিক মুক্তি লাভ করেছে বিনিময় ছাড়া। এটিই শরিয়তদাতার বিধান। এ বিধান সুদূরপ্রসারী। যুগ যুগ ধরে হাজার হাজার আইন প্রণয়ন করে আধুনিক সভ্যতা কিংবা রাষ্ট্রব্যবস্থা যেখানে উত্তরাধিকার আইন নিশ্চিত করতে পারেনি, সেখানে এক পৃষ্ঠার দিকনির্দেশনায় তার সুষ্ঠু সমাধান করা হয়েছে। জ্ঞানীদের জন্য এখানেও অনেক শিক্ষা রয়েছে। অহেতুক সৃষ্টিকর্তার সঙ্গে চ্যালেঞ্জ করে শুধু হতভাগারাই বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নষ্ট করতে পারে।
দান-সাদাকাহ মুমিন জীবনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অনুষঙ্গ। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে দান-সাদাকার অনেক ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। তা ছাড়া কোরআনে খাঁটি মুমিনের পরিচয় দিতে গিয়ে মহান আল্লাহ এ অনুষঙ্গটি নিয়ে এসেছেন।
৪ ঘণ্টা আগেকোরআন নাজিলের মাস পবিত্র রমজান মর্যাদার পাশাপাশি ইসলামের বিজয়ের মাস। রমজান এলে গুটিয়ে যাওয়া নয়, বিজয়ের চেতনায় উজ্জীবিত হওয়া উচিত। রমজানে বিজয়ের কিছু স্মরণীয় ঘটনা নিচে তুলে ধরা হলো—
১ দিন আগেগত কয়েক দিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণ ও নিপীড়নের ঘটনা ঘটেছে। এর প্রতিবাদে উত্তাল সারাদেশ। বর্তমানে বাস, ট্রেন, লঞ্চ, অফিস, বাসা-বাড়ি, স্কুল-কলেজ কোথাও নারী ও শিশুর নিরাপত্তা নেই। অথচ ধর্ষণ সম্পূর্ণরূপে হারাম।
১ দিন আগেকোরআনুল কারিম মহান আল্লাহর কালাম, সর্বশ্রেষ্ঠ আসমানি কিতাব। কোরআন মজিদ যে নবীর ওপর নাজিল করা হয়েছে, তিনি সর্বশ্রেষ্ঠ নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)। যে মাসে নাজিল করা হয়েছে সেই রমজানুল মোবারকও সর্বশ্রেষ্ঠ মাস।
১ দিন আগে