আবদুল লতিফ মাসুম
একসময় এদেশে অস্বাভাবিক মৃত্যু মানুষের মনে অস্বাভাবিক আবেগ, উত্তেজনা, ক্ষোভ ও ক্রোধ সৃষ্টি করত। ১৯৫২ সালে ভাষার প্রশ্নে যে অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘটল, তা অবশেষে ওলট-পালট করে দিল পাকিস্তানের ইতিহাস। মানুষের প্রতি মানুষের মমত্ব, ভালোবাসা ও সহানুভূতি এতটাই প্রবল ছিল যে, ঘটনা কিংবা দুর্ঘটনার মৃত্যু নিয়ে মানুষ আহাজারি করত। ভাষা আন্দোলনের পর আমাদের স্বাধীনতার পদে পদে যে মৃত্যু ঘটেছে, তা অনেক বা অসংখ্য ছিল না। একজন মনু মিয়া বা কিশোর মতিউরের রক্ত আমাদের আবেগ উত্তাল করে তুলেছে।
অবশেষে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ লাখ লাখ অস্বাভাবিক মৃত্যুকে আমাদের সামনে স্বাভাবিক, নিস্পৃহ ও আবেগহীন ‘মৃত্যু উপত্যকা’ উপহার দিয়েছে। অল্প শোকে কাতর আর অনেক শোকে পাথর হয়েছে মানুষ। সেই থেকে স্বাভাবিক মৃত্যু যেন অস্বাভাবিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। অবশেষে আমাদের একজন বিদ্বজ্জন দাবি তুলেছিলেন, ‘স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চাই।’ ’৭১-এর পথ ধরে এদেশের আওয়ামী শাসকরা হয়েছে আরও হিংস্র।
তাদের পিতা অনায়াসে পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে আত্মম্ভরিতা করতে পারেন-‘কোথায় সিরাজ শিকদার?’ প্রকাশ্যেই তিনি ঘোষণা দিলেন, ‘লাল ঘোড়া দাবড়ে দেব।’ সেই লাল ঘোড়া অনায়াসে জাসদের ৪০ হাজার নেতাকর্মী হত্যা করল। সেই একই আওয়ামী উত্তরাধিকার আবার যখন চেপে বসল বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সিংহাসনে, তখন আবার শুরু হলো সেই অস্বাভাবিক মৃত্যুর খেলা। কারণে অথবা অকারণে আইনি অথবা বেআইনিভাবে মানুষকে হত্যা করত আইনের লোকেরা, বেআইনি লোকেরা এবং আওয়ামী গুণ্ডাপাণ্ডা ও বাটপাড়-বদমাইশরা; যখন-তখন সামান্য কারণে হত্যা করত বিরোধীদের।
তাদের লাশ পাওয়া যেত ক্ষেত-খামারে, অলি-গলিতে, ঝোপ-ঝাড়ে, অবশেষে খাল-নদীতে। অসংখ্য ইলিয়াস আলীরা গুমের শিকার হলেন। তাদের লাশের সন্ধানও পেলেন না আপনজনেরা। একজন আলেমে দ্বীনকে ভালোবেসে প্রাণ দিল শত শত মানুষ। মাথা না নোয়ানোর অপরাধে প্রাণ দিতে হলো ভালো মানুষদের। আলেমদের ওপর নেমে এলো জুলুমের পর জুলুম। ইসলামকে হেফাজতের জেহাদে কত মানুষ শাহাদাত বরণ করল, আজও তার হিসাব হয়নি।
সেই ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালের গণবিপ্লবের ময়দান সবুজ-শ্যামল বাংলার প্রান্তর রক্তে রক্তে রঞ্জিত হয়েছে বারংবার। সেই মৃত্যু, সেই রক্তপাত ছিল জীবনের জন্য, মৃত্যুর জন্য নয়। সেই আত্মত্যাগ ছিল মৌলিক অধিকারের জন্য, ক্ষমতার জন্য নয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বুকে গুলি নিয়েছিল বেপরোয়া ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ শাসনের বিরুদ্ধে। সে সংগ্রাম ছিল মানবাধিকারের জন্য। সেই স্বৈরাচার বিদায় হয়েছে কবে, তবু কেন আজ আমার ভাইয়ের রক্তে রঞ্জিত হবে আমাদের পরিবার। জীবন রক্ষার অধিকার যাদের হাতে, তাদের হাতে কেন ঘটবে তৌহিদুল ইসলামের মৃত্যু।
তৌহিদুল ইসলামের মৃত্যু অন্যায়, অস্বাভাবিক। কষ্টের কথা আমরা একই সময় আরেকটি মৃত্যুর সংবাদ পাই। সে মৃত্যুটি আইনি বাহিনীর বেআইনি আটকের ফল নয়, বরং ক্ষমতার প্রতিযোগিতার আন্তঃকোন্দলে সংঘটিত পিটিয়ে হত্যাকাণ্ড।
স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উত্থাপিত হয়, এত রক্ত, এত আর্তনাদ, এত আহাজারি আমাদের কি কোনোই পরিবর্তন ঘটায়নি? আমাদের বাহিনী যেমন ছিল তেমনই আছে! এই বাহিনীগুলো অতীতে হামলা, মামলা, গুম, খুন দিয়ে আমাদের জীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছিল।
বন্ধুকযুদ্ধের একই গল্প শুনে শুনে আমরা প্রশ্ন করেছিলাম—এ গল্পের কি কোনো শেষ নেই! কুমিল্লায় নিরাপত্তা হেফাজতে যুবদল নেতা তৌহিদুল ইসলামের মৃত্যু কি সাক্ষ্য দেয়—আমরা যে তিমিরে ছিলাম সেই তিমিরেই আছি! একই প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা যায় রাজনৈতিক নেতৃত্বকে যে, ক্ষমতার দ্বন্দ্বের জন্য প্রাণ দিয়েছে মানুষ—সেই রক্তের আখরে কি শেষ হয়ে যায়নি ক্ষমতার দম্ভ! তাহলে পতিত স্বৈরাচার আর আমাদের মধ্যে পার্থক্য কোথায়? বিগত ১৬ বছর ধরে এদেশে মৌলিক অধিকারের জন্য যারা রক্ত, শ্রম ও ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর থেকেছে, তাদের শীর্ষে ছিল একটি রাজনৈতিক দল—তার নাম বিএনপি।
এই রক্তের দাগ শুকোতে না শুকোতেই ক্ষমতার প্রতিযোগিতায় যদি তৃণমূল পর্যায়ে এ রকম অঘটন ঘটে, তাহলে তা কি দূর্ভগ্যজনক নয়! এই গণঅভ্যুত্থানের পর রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে, কোথাও না কোথাও তার সত্যতা আছে। তাই আমরা দেখি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে কঠোর হতে। বিএনপি নেতৃত্ব এরকম অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে শীর্ষ পর্যায় থেকে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত কম-বেশি দেড় হাজার নেতা-কর্মীকে শাস্তি দিয়েছে।
এসবের কারণ অনুসন্ধান করতে গেলে অবশ্যই আমাদের সমাজ ও রাষ্ট্রের গহিন গভীরে প্রবেশ করতে হবে। আমাদের অতীতের রাজনৈতিক ইতিহাস সুখকর নয়। জন-মনস্তত্ত্বের সেই সমস্যা আমরা উত্তরাধিকারসূত্রে বহন করেই চলেছি। মীর জাফর, রায় দুর্লভ ও ঘসেটি বেগমরা আকাশ থেকে আসেননি। নিকট অতীতের এই দেশে রাজনৈতিক বিশ্বাসঘাতকতার ইতিহাস এখনো আমাদের বিচলিত করে।
রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নেতা-কর্মীদের ‘খাই খাই রব’ দেখে হতাশ হয়েছেন। রাজনৈতিক দলসমূহ স্লোগান দেয়, ‘রক্তের বন্যায় ভেসে যাবে অন্যায়,’—তারাই আবার অন্যায়কে জায়েজ করার জন্য রক্তের বন্যা বইয়ে দিতে দ্বিধা করেন না। রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা এদেশের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডকে ‘অতিমাত্রিক’ বলে মনে করেন। এদেশের একজন হকারও রাজনীতিতে লাফায়, মিছিলে স্লোগান দিতে দিতে নেতা বনে যায়। আওয়ামী লীগের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের ১৯ নম্বর সদস্যও মনে করত, ‘আমিই সরকার।’
পত্রিকায় এসেছিল, রমনা থানার পাতি নেতা রাস্তার উল্টো দিকে গাড়ি চালাচ্ছিলেন—ট্রাফিক পুলিশ তাকে ধরায় তিনি প্রশ্ন করেন, ‘তুই জানিস আমি কে?’ সেই সংস্কৃতি তো আমাদের নয়। এটা অপ্রিয় সত্য, বাংলাদেশের রাজনৈতিক কর্মীরা যে হারে সচেতন, যে হারে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে, মিটিং-মিছিল ও আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন, সে হারে রাজনৈতিক দীক্ষাপ্রাপ্ত নন। রাজনৈতিক কর্মীদের যেভাবে নম্রতা, ভদ্রতা, সভ্যতা এবং সহনশীলতা, সহমর্মিতা ও সহযোগিতার দীক্ষা লাভ করার কথা, তা না করেই তারা নেতা-পাতি নেতা বনে যান। একেই বলে ঘোড়ার আগে গাড়ি জুড়ে দেওয়ার মতো অবস্থা।
একসময় বাংলাদেশের রাজনীতিবিদদের সেবা, সততা, সাহস ও গণমুখী চরিত্রের সুনাম ছিল। আওয়ামী লীগের সৌজন্যে এখন রাজনীতির দুর্বৃত্তায়ন ও বাণিজ্যিকীকরণ ঘটেছে। রাজনৈতিক পদ-পদবি পেলেই বাড়ি, গাড়ি ও নারী সহজ হয়ে যায়। সেজন্যই তৃণমূল পর্যায়ে পদ-পদবির জন্য এত কাড়াকাড়ি। কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলায় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতৃত্বকে নিয়ে যে হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে, তা হয়তো অনুরূপ কারণ থেকেই ঘটেছে। প্রায়ই দেখা যায়, আওয়ামী সংস্কৃতির অবিকল অনুকরণ করছেন আমাদের রাজনৈতিক নেতা-কর্মীরা। আমাদের বুঝতে হবে তাদের সংস্কৃতি আমাদের নয়।
প্রশান্তির কথা এই যে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এই সেদিনও নেতাকর্মীদের সতর্ক করেছেন। তিনি বলেছেন, বিএনপি পুনর্গঠনে ভালো মানুষ দরকার। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর রাজনৈতিক প্রশিক্ষণের প্রয়োজনীয়তা ব্যক্ত করেছেন। উল্লেখ্য, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান আদর্শবাদী রাজনীতিকের মতো রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের প্রশিক্ষণের বা রাজনৈতিক শিক্ষাদীক্ষা দানের ক্রমধারা প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন।
এখন অবস্থাদৃষ্টে একটি মৌলিক প্রশ্ন উত্থাপন করা যায়, আমাদের নাগরিক সাধারণের যাতে এভাবে বাহিনীর হাতে এবং রাজনৈতিক নেতাদের হাতে জীবন দিতে না হয়, সেজন্য কী করা প্রয়োজন? বাংলাদেশ শাসনের জন্য তো আকাশ থেকে নেতা আমদানি করা যাবে না, কবর খুঁড়ে ভালো মানুষদের ফিরিয়ে আনা যাবে না। তাই আমাদের সমাধান আমাদেরই করতে হবে।
এই জনসমুদ্রের মধ্য থেকে এমন সব সৎ ও ভালো মানুষকে এগিয়ে নিতে হবে, যারা রাজনীতিকে সেবা মনে করেন, ব্যবসা নয়। এমন সব লোককে খোঁজ করতে হবে, যারা মানুষকে ভালোবাসেন, ক্ষমতাকে নয়। এমন সব মানুষের কাছাকাছি আমাদের যেতে হবে, যারা নমনীয়তায় বিশ্বাস করেন। সেদিন তারেক রহমান বলেছিলেন, ‘আমাদের ভালো মানুষ দরকার, কারণ এই রাষ্ট্রকে পালিয়ে যাওয়া স্বৈরাচার ধ্বংস করে দিয়েছে, অনেক পেছনে নিয়ে গেছে।
কাজেই আমাদের দলকে যদি পুনর্গঠন করতে হয়, সেরকম মানুষ দরকার। সেরকম মানুষকে বের করে নিয়ে আসাতে হবে। শুধু রাজনৈতিক নেতা-কর্মী নয়, মৌলিক অধিকার রক্ষার শিক্ষা ও দীক্ষা নিতে হবে সব সচেতন মানুষকে। সব মানুষ যদি হয় সুশিক্ষিত, তাহলে সমাজ হয়ে উঠবে অধিকার-সচেতন। যে সমাজ নৈতিকভাবে অপারগ এবং রাজনৈতিকভাবে অসচেতন, তাদের দেশে হত্যার রাজনীতি চলতেই থাকে।
উত্থিত মৌলিক প্রশ্নটির সমাধানের জন্য ব্যক্তি থেকে দল, রাষ্ট্র ও সমাজে কাঙ্ক্ষিত সংস্কার সাধিত হতে হবে। প্রথমত, মন-মগজ ও চিন্তায় ব্যক্তিকে গণতান্ত্রিক মানস অর্জন করতে হবে। মনে রাখতে হবে, গণতন্ত্র একটি শাসন ব্যবস্থা (A System of Governance)। ব্যবস্থাটি অকার্যকর হয়ে পড়বে যদি ব্যক্তি গণতন্ত্রকে জীবনব্যবস্থা (A Way of Life) মনে না করে। ব্যক্তি ও সমষ্টির সমন্বয়সাধন করতে হবে।
এরিস্টটল বলেছেন, রাষ্ট্র একটি নৈতিক প্রতিষ্ঠান। সব নাগরিক সাধারণকে নৈতিকভাবে গড়ে ওঠার জন্য রাষ্ট্রকে একটি পরিকল্পিত উপায়ে নাগরিক সাধারণের সততা ও শুদ্ধাচার নিশ্চিত করতে হবে। দ্বিতীয়ত, রাজনৈতিক দলগুলো প্রত্যাশিত নাগরিকদের দীক্ষিতকরণের তথা মগজ ধোলাইয়ের প্রধান প্রতিষ্ঠান। তাই রাজনৈতিক দলকে পরিকল্পিতভাবে নেতা-কর্মীদের সেবা, সততা, নিষ্ঠা ও কর্তব্যপরায়ণতার প্রায়োগিক প্রশিক্ষণ প্রদান করতে হবে। তাহলে এভাবে কর্মীরা হানাহানিতে-মারামারিতে লিপ্ত হবে না।
তৃতীয়ত, গণতন্ত্র এবং গণতন্ত্রই হবে তৃণমূল থেকে শীর্ষ পর্যন্ত নেতা নির্বাচনের মাধ্যম। কারও দৈর্ঘ্য-প্রস্থ, অর্থ-বিত্ত ও পেশিশক্তি দেখে নেতা নির্বাচন করা যাবে না। কোনো মানুষ যতই গরিব হোক, অথবা নমনীয় হোক, তার ত্যাগ-তিতিক্ষা ও নিষ্ঠাই হবে নেতৃত্বের মানদণ্ড। চতুর্থত, দ্বন্দ্ব-বিদ্বেষ, কোন্দল-আকীর্ণ ও ক্ষমতালোভী নেতা-কর্মীকে পরিহার করতে হবে। পঞ্চমত, যে ব্যক্তি বা নেতা-কর্মী বিভেদের মাঝে ঐক্য প্রতিষ্ঠায় সক্ষম, তাকেই নেতার আসন দিতে হবে।
রাষ্ট্রব্যবস্থায় সংস্কারের মাধ্যমে বাহিনীগুলোর হৃদয় থেকে অমানবিকতার প্রেতাত্মা দূর করতে হবে। রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের মন-মগজ থেকে ক্ষমতা ও অর্থের লোভ দূর করতে হবে। ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থান তথা গণবিপ্লব আমাদের সামনে মানবিক, রাষ্ট্রিক ও দলীয় পর্যায়ে সংস্কারের যে নতুন আবহ ও নতুন উদ্যম সৃষ্টি করেছে, তা হেলেফেলে বিসর্জন দেওয়া যাবে না। ওই দুটো মৃত্যুই যেন হয় অন্যায় অপকর্মের শেষ পেরেক। বিপ্লব তথা গণঅভ্যুত্থানের চেতনা জনমনে চির জাগরূক থাকুক।
একসময় এদেশে অস্বাভাবিক মৃত্যু মানুষের মনে অস্বাভাবিক আবেগ, উত্তেজনা, ক্ষোভ ও ক্রোধ সৃষ্টি করত। ১৯৫২ সালে ভাষার প্রশ্নে যে অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘটল, তা অবশেষে ওলট-পালট করে দিল পাকিস্তানের ইতিহাস। মানুষের প্রতি মানুষের মমত্ব, ভালোবাসা ও সহানুভূতি এতটাই প্রবল ছিল যে, ঘটনা কিংবা দুর্ঘটনার মৃত্যু নিয়ে মানুষ আহাজারি করত। ভাষা আন্দোলনের পর আমাদের স্বাধীনতার পদে পদে যে মৃত্যু ঘটেছে, তা অনেক বা অসংখ্য ছিল না। একজন মনু মিয়া বা কিশোর মতিউরের রক্ত আমাদের আবেগ উত্তাল করে তুলেছে।
অবশেষে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ লাখ লাখ অস্বাভাবিক মৃত্যুকে আমাদের সামনে স্বাভাবিক, নিস্পৃহ ও আবেগহীন ‘মৃত্যু উপত্যকা’ উপহার দিয়েছে। অল্প শোকে কাতর আর অনেক শোকে পাথর হয়েছে মানুষ। সেই থেকে স্বাভাবিক মৃত্যু যেন অস্বাভাবিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। অবশেষে আমাদের একজন বিদ্বজ্জন দাবি তুলেছিলেন, ‘স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চাই।’ ’৭১-এর পথ ধরে এদেশের আওয়ামী শাসকরা হয়েছে আরও হিংস্র।
তাদের পিতা অনায়াসে পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে আত্মম্ভরিতা করতে পারেন-‘কোথায় সিরাজ শিকদার?’ প্রকাশ্যেই তিনি ঘোষণা দিলেন, ‘লাল ঘোড়া দাবড়ে দেব।’ সেই লাল ঘোড়া অনায়াসে জাসদের ৪০ হাজার নেতাকর্মী হত্যা করল। সেই একই আওয়ামী উত্তরাধিকার আবার যখন চেপে বসল বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সিংহাসনে, তখন আবার শুরু হলো সেই অস্বাভাবিক মৃত্যুর খেলা। কারণে অথবা অকারণে আইনি অথবা বেআইনিভাবে মানুষকে হত্যা করত আইনের লোকেরা, বেআইনি লোকেরা এবং আওয়ামী গুণ্ডাপাণ্ডা ও বাটপাড়-বদমাইশরা; যখন-তখন সামান্য কারণে হত্যা করত বিরোধীদের।
তাদের লাশ পাওয়া যেত ক্ষেত-খামারে, অলি-গলিতে, ঝোপ-ঝাড়ে, অবশেষে খাল-নদীতে। অসংখ্য ইলিয়াস আলীরা গুমের শিকার হলেন। তাদের লাশের সন্ধানও পেলেন না আপনজনেরা। একজন আলেমে দ্বীনকে ভালোবেসে প্রাণ দিল শত শত মানুষ। মাথা না নোয়ানোর অপরাধে প্রাণ দিতে হলো ভালো মানুষদের। আলেমদের ওপর নেমে এলো জুলুমের পর জুলুম। ইসলামকে হেফাজতের জেহাদে কত মানুষ শাহাদাত বরণ করল, আজও তার হিসাব হয়নি।
সেই ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালের গণবিপ্লবের ময়দান সবুজ-শ্যামল বাংলার প্রান্তর রক্তে রক্তে রঞ্জিত হয়েছে বারংবার। সেই মৃত্যু, সেই রক্তপাত ছিল জীবনের জন্য, মৃত্যুর জন্য নয়। সেই আত্মত্যাগ ছিল মৌলিক অধিকারের জন্য, ক্ষমতার জন্য নয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বুকে গুলি নিয়েছিল বেপরোয়া ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ শাসনের বিরুদ্ধে। সে সংগ্রাম ছিল মানবাধিকারের জন্য। সেই স্বৈরাচার বিদায় হয়েছে কবে, তবু কেন আজ আমার ভাইয়ের রক্তে রঞ্জিত হবে আমাদের পরিবার। জীবন রক্ষার অধিকার যাদের হাতে, তাদের হাতে কেন ঘটবে তৌহিদুল ইসলামের মৃত্যু।
তৌহিদুল ইসলামের মৃত্যু অন্যায়, অস্বাভাবিক। কষ্টের কথা আমরা একই সময় আরেকটি মৃত্যুর সংবাদ পাই। সে মৃত্যুটি আইনি বাহিনীর বেআইনি আটকের ফল নয়, বরং ক্ষমতার প্রতিযোগিতার আন্তঃকোন্দলে সংঘটিত পিটিয়ে হত্যাকাণ্ড।
স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উত্থাপিত হয়, এত রক্ত, এত আর্তনাদ, এত আহাজারি আমাদের কি কোনোই পরিবর্তন ঘটায়নি? আমাদের বাহিনী যেমন ছিল তেমনই আছে! এই বাহিনীগুলো অতীতে হামলা, মামলা, গুম, খুন দিয়ে আমাদের জীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছিল।
বন্ধুকযুদ্ধের একই গল্প শুনে শুনে আমরা প্রশ্ন করেছিলাম—এ গল্পের কি কোনো শেষ নেই! কুমিল্লায় নিরাপত্তা হেফাজতে যুবদল নেতা তৌহিদুল ইসলামের মৃত্যু কি সাক্ষ্য দেয়—আমরা যে তিমিরে ছিলাম সেই তিমিরেই আছি! একই প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা যায় রাজনৈতিক নেতৃত্বকে যে, ক্ষমতার দ্বন্দ্বের জন্য প্রাণ দিয়েছে মানুষ—সেই রক্তের আখরে কি শেষ হয়ে যায়নি ক্ষমতার দম্ভ! তাহলে পতিত স্বৈরাচার আর আমাদের মধ্যে পার্থক্য কোথায়? বিগত ১৬ বছর ধরে এদেশে মৌলিক অধিকারের জন্য যারা রক্ত, শ্রম ও ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর থেকেছে, তাদের শীর্ষে ছিল একটি রাজনৈতিক দল—তার নাম বিএনপি।
এই রক্তের দাগ শুকোতে না শুকোতেই ক্ষমতার প্রতিযোগিতায় যদি তৃণমূল পর্যায়ে এ রকম অঘটন ঘটে, তাহলে তা কি দূর্ভগ্যজনক নয়! এই গণঅভ্যুত্থানের পর রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে, কোথাও না কোথাও তার সত্যতা আছে। তাই আমরা দেখি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে কঠোর হতে। বিএনপি নেতৃত্ব এরকম অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে শীর্ষ পর্যায় থেকে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত কম-বেশি দেড় হাজার নেতা-কর্মীকে শাস্তি দিয়েছে।
এসবের কারণ অনুসন্ধান করতে গেলে অবশ্যই আমাদের সমাজ ও রাষ্ট্রের গহিন গভীরে প্রবেশ করতে হবে। আমাদের অতীতের রাজনৈতিক ইতিহাস সুখকর নয়। জন-মনস্তত্ত্বের সেই সমস্যা আমরা উত্তরাধিকারসূত্রে বহন করেই চলেছি। মীর জাফর, রায় দুর্লভ ও ঘসেটি বেগমরা আকাশ থেকে আসেননি। নিকট অতীতের এই দেশে রাজনৈতিক বিশ্বাসঘাতকতার ইতিহাস এখনো আমাদের বিচলিত করে।
রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নেতা-কর্মীদের ‘খাই খাই রব’ দেখে হতাশ হয়েছেন। রাজনৈতিক দলসমূহ স্লোগান দেয়, ‘রক্তের বন্যায় ভেসে যাবে অন্যায়,’—তারাই আবার অন্যায়কে জায়েজ করার জন্য রক্তের বন্যা বইয়ে দিতে দ্বিধা করেন না। রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা এদেশের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডকে ‘অতিমাত্রিক’ বলে মনে করেন। এদেশের একজন হকারও রাজনীতিতে লাফায়, মিছিলে স্লোগান দিতে দিতে নেতা বনে যায়। আওয়ামী লীগের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের ১৯ নম্বর সদস্যও মনে করত, ‘আমিই সরকার।’
পত্রিকায় এসেছিল, রমনা থানার পাতি নেতা রাস্তার উল্টো দিকে গাড়ি চালাচ্ছিলেন—ট্রাফিক পুলিশ তাকে ধরায় তিনি প্রশ্ন করেন, ‘তুই জানিস আমি কে?’ সেই সংস্কৃতি তো আমাদের নয়। এটা অপ্রিয় সত্য, বাংলাদেশের রাজনৈতিক কর্মীরা যে হারে সচেতন, যে হারে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে, মিটিং-মিছিল ও আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন, সে হারে রাজনৈতিক দীক্ষাপ্রাপ্ত নন। রাজনৈতিক কর্মীদের যেভাবে নম্রতা, ভদ্রতা, সভ্যতা এবং সহনশীলতা, সহমর্মিতা ও সহযোগিতার দীক্ষা লাভ করার কথা, তা না করেই তারা নেতা-পাতি নেতা বনে যান। একেই বলে ঘোড়ার আগে গাড়ি জুড়ে দেওয়ার মতো অবস্থা।
একসময় বাংলাদেশের রাজনীতিবিদদের সেবা, সততা, সাহস ও গণমুখী চরিত্রের সুনাম ছিল। আওয়ামী লীগের সৌজন্যে এখন রাজনীতির দুর্বৃত্তায়ন ও বাণিজ্যিকীকরণ ঘটেছে। রাজনৈতিক পদ-পদবি পেলেই বাড়ি, গাড়ি ও নারী সহজ হয়ে যায়। সেজন্যই তৃণমূল পর্যায়ে পদ-পদবির জন্য এত কাড়াকাড়ি। কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলায় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতৃত্বকে নিয়ে যে হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে, তা হয়তো অনুরূপ কারণ থেকেই ঘটেছে। প্রায়ই দেখা যায়, আওয়ামী সংস্কৃতির অবিকল অনুকরণ করছেন আমাদের রাজনৈতিক নেতা-কর্মীরা। আমাদের বুঝতে হবে তাদের সংস্কৃতি আমাদের নয়।
প্রশান্তির কথা এই যে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এই সেদিনও নেতাকর্মীদের সতর্ক করেছেন। তিনি বলেছেন, বিএনপি পুনর্গঠনে ভালো মানুষ দরকার। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর রাজনৈতিক প্রশিক্ষণের প্রয়োজনীয়তা ব্যক্ত করেছেন। উল্লেখ্য, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান আদর্শবাদী রাজনীতিকের মতো রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের প্রশিক্ষণের বা রাজনৈতিক শিক্ষাদীক্ষা দানের ক্রমধারা প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন।
এখন অবস্থাদৃষ্টে একটি মৌলিক প্রশ্ন উত্থাপন করা যায়, আমাদের নাগরিক সাধারণের যাতে এভাবে বাহিনীর হাতে এবং রাজনৈতিক নেতাদের হাতে জীবন দিতে না হয়, সেজন্য কী করা প্রয়োজন? বাংলাদেশ শাসনের জন্য তো আকাশ থেকে নেতা আমদানি করা যাবে না, কবর খুঁড়ে ভালো মানুষদের ফিরিয়ে আনা যাবে না। তাই আমাদের সমাধান আমাদেরই করতে হবে।
এই জনসমুদ্রের মধ্য থেকে এমন সব সৎ ও ভালো মানুষকে এগিয়ে নিতে হবে, যারা রাজনীতিকে সেবা মনে করেন, ব্যবসা নয়। এমন সব লোককে খোঁজ করতে হবে, যারা মানুষকে ভালোবাসেন, ক্ষমতাকে নয়। এমন সব মানুষের কাছাকাছি আমাদের যেতে হবে, যারা নমনীয়তায় বিশ্বাস করেন। সেদিন তারেক রহমান বলেছিলেন, ‘আমাদের ভালো মানুষ দরকার, কারণ এই রাষ্ট্রকে পালিয়ে যাওয়া স্বৈরাচার ধ্বংস করে দিয়েছে, অনেক পেছনে নিয়ে গেছে।
কাজেই আমাদের দলকে যদি পুনর্গঠন করতে হয়, সেরকম মানুষ দরকার। সেরকম মানুষকে বের করে নিয়ে আসাতে হবে। শুধু রাজনৈতিক নেতা-কর্মী নয়, মৌলিক অধিকার রক্ষার শিক্ষা ও দীক্ষা নিতে হবে সব সচেতন মানুষকে। সব মানুষ যদি হয় সুশিক্ষিত, তাহলে সমাজ হয়ে উঠবে অধিকার-সচেতন। যে সমাজ নৈতিকভাবে অপারগ এবং রাজনৈতিকভাবে অসচেতন, তাদের দেশে হত্যার রাজনীতি চলতেই থাকে।
উত্থিত মৌলিক প্রশ্নটির সমাধানের জন্য ব্যক্তি থেকে দল, রাষ্ট্র ও সমাজে কাঙ্ক্ষিত সংস্কার সাধিত হতে হবে। প্রথমত, মন-মগজ ও চিন্তায় ব্যক্তিকে গণতান্ত্রিক মানস অর্জন করতে হবে। মনে রাখতে হবে, গণতন্ত্র একটি শাসন ব্যবস্থা (A System of Governance)। ব্যবস্থাটি অকার্যকর হয়ে পড়বে যদি ব্যক্তি গণতন্ত্রকে জীবনব্যবস্থা (A Way of Life) মনে না করে। ব্যক্তি ও সমষ্টির সমন্বয়সাধন করতে হবে।
এরিস্টটল বলেছেন, রাষ্ট্র একটি নৈতিক প্রতিষ্ঠান। সব নাগরিক সাধারণকে নৈতিকভাবে গড়ে ওঠার জন্য রাষ্ট্রকে একটি পরিকল্পিত উপায়ে নাগরিক সাধারণের সততা ও শুদ্ধাচার নিশ্চিত করতে হবে। দ্বিতীয়ত, রাজনৈতিক দলগুলো প্রত্যাশিত নাগরিকদের দীক্ষিতকরণের তথা মগজ ধোলাইয়ের প্রধান প্রতিষ্ঠান। তাই রাজনৈতিক দলকে পরিকল্পিতভাবে নেতা-কর্মীদের সেবা, সততা, নিষ্ঠা ও কর্তব্যপরায়ণতার প্রায়োগিক প্রশিক্ষণ প্রদান করতে হবে। তাহলে এভাবে কর্মীরা হানাহানিতে-মারামারিতে লিপ্ত হবে না।
তৃতীয়ত, গণতন্ত্র এবং গণতন্ত্রই হবে তৃণমূল থেকে শীর্ষ পর্যন্ত নেতা নির্বাচনের মাধ্যম। কারও দৈর্ঘ্য-প্রস্থ, অর্থ-বিত্ত ও পেশিশক্তি দেখে নেতা নির্বাচন করা যাবে না। কোনো মানুষ যতই গরিব হোক, অথবা নমনীয় হোক, তার ত্যাগ-তিতিক্ষা ও নিষ্ঠাই হবে নেতৃত্বের মানদণ্ড। চতুর্থত, দ্বন্দ্ব-বিদ্বেষ, কোন্দল-আকীর্ণ ও ক্ষমতালোভী নেতা-কর্মীকে পরিহার করতে হবে। পঞ্চমত, যে ব্যক্তি বা নেতা-কর্মী বিভেদের মাঝে ঐক্য প্রতিষ্ঠায় সক্ষম, তাকেই নেতার আসন দিতে হবে।
রাষ্ট্রব্যবস্থায় সংস্কারের মাধ্যমে বাহিনীগুলোর হৃদয় থেকে অমানবিকতার প্রেতাত্মা দূর করতে হবে। রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের মন-মগজ থেকে ক্ষমতা ও অর্থের লোভ দূর করতে হবে। ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থান তথা গণবিপ্লব আমাদের সামনে মানবিক, রাষ্ট্রিক ও দলীয় পর্যায়ে সংস্কারের যে নতুন আবহ ও নতুন উদ্যম সৃষ্টি করেছে, তা হেলেফেলে বিসর্জন দেওয়া যাবে না। ওই দুটো মৃত্যুই যেন হয় অন্যায় অপকর্মের শেষ পেরেক। বিপ্লব তথা গণঅভ্যুত্থানের চেতনা জনমনে চির জাগরূক থাকুক।
বেশ কিছুদিন হলো ভারতের সেনাপ্রধান বাংলাদেশ সম্পর্কে একটি অযাচিত মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, নির্বাচিত সরকার এলে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের উন্নতি হবে। এ সম্পর্কে সর্বপ্রথম যে প্রশ্নটি ওঠে, তা হলো-একটি রাষ্ট্রের সেনাপ্রধান কি অন্য রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের ব্যাপারে কথা বলতে পারেন?
১৪ ঘণ্টা আগেপ্রভাবশালী ব্রিটিশ সাময়িকী দি ইকোনমিস্টের তালিকায় ২০২৪ সালে বর্ষসেরা দেশ হয়েছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় স্থানে ছিল সিরিয়া। সিরিয়ার বাশার আল-আসাদ এবং বাংলাদেশের শেখ হাসিনা, এই দুই কুখ্যাত শাসকের পতনের মধ্যে একটি মৌলিক পার্থক্য আছে।
১৬ ঘণ্টা আগেগত ৫ ফেব্রুয়ারি বুধবার দিবাগত রাতে বাংলাদেশের ইতিহাসে এক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটে গেল। বাংলাদেশের ফ্যাসিবাদবিরোধী ও স্বাধীনতার অতন্দ্র প্রহরী দেশপ্রেমিক ছাত্র-জনতা ভেঙে দিয়েছে ফ্যাসিবাদের আঁতুড়ঘর হিসেবে পরিচিত ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়ি।
১৭ ঘণ্টা আগে২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছিল বৈষম্যবিরোধী একটি বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে। পরে ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বিভিন্ন মহল থেকে রাষ্ট্র সংস্কারের দাবি উঠেছিল। কিন্তু সেই সংস্কার কীভাবে হবে, কারা করবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন ছিল।
১৮ ঘণ্টা আগে