রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের মানুষ এখন ভূমিকম্পের ভয়ে আতঙ্কগ্রস্ত। শুক্রবারের ৫ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্প কমবেশি সবাইকে ভালো রকম ভয় ধরিয়ে দিয়েছে। শিশু থেকে বৃদ্ধ—সব বয়সের মানুষই ভূমিকম্পটির জোরালো কাঁপুনি অনুভব করেছে। এই ভয় যেতে না যেতেই রবিবার আবার দুই দফা ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে। ভূমিকম্পের তথ্যউপাত্ত বিশ্লেষণ করে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, বাংলাদেশসহ এ অঞ্চলে একটি বড় ভূমিকম্প অচিরেই আঘাত হানতে পারে এবং এর সময় খুব সন্নিকটে। সেক্ষেত্রে বড় বিপর্যয়ের মধ্যে পড়তে পারে রাজধানী ঢাকা। ঢাকার বিপদ যে স্পষ্ট হচ্ছে, সেই বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। ভূমিকম্পের জন্য সবচেয়ে বড় ঝুঁকি সিলেটের। তবে রাজধানীতে অত্যধিক লোকসংখ্যা ও অপরিকল্পিত ২১ লাখ ভবন-ঘরবাড়ির জন্য সিলেটের চেয়েও ঢাকা বড় বিপদের কারণ হবে।
বাংলাদেশে বড় ভূমিকম্পের এই আশঙ্কা কেন, ঢাকার বিপদ কোন জায়গায়, বাংলাদেশের কোন অঞ্চলে ভূমিকম্পের ঝুঁকি বেশি, আমাদের এখন কী করণীয় এবং যে ভূমিকম্পটি দুদিন আগে সবাইকে প্রবলভাবে নাড়া দিয়ে গেছে, সেটির উৎপত্তিস্থল ঢাকার অদূরে নরসিংদীর মাধবদী কেন—সে সম্পর্কে আলোকপাত করার আগে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের নিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার উৎকণ্ঠা প্রকাশের বিষয়টি পাঠকদের দৃষ্টিতে তুলে ধরতে চাই।
খালেদা জিয়ার দরদি মন
গত ২১ নভেম্বর ছিল সশস্ত্র বাহিনী দিবস। এ উপলক্ষে সেনাকুঞ্জে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। ওই অনুষ্ঠানে তাকে ঘিরেই ছিল সবার আগ্রহ। প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নিয়েছেন এবং একান্তে কিছু কথাবার্তা বলেছেন। জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান, তরুণদের দল এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামসহ রাজনৈতিক নেতা, তিন বাহিনীপ্রধান এবং উপস্থিত বিশিষ্টজনদের প্রায় সবাই তার সঙ্গে কুশলবিনিময় করেছেন। সেনাকুঞ্জের অনুষ্ঠান শেষে তিনি যখন গাড়িতে উঠবেন, তখন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান তাকে বিদায় জানাতে যান। খালেদা জিয়া সেনাপ্রধানের কাছে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের নিয়ে তার উৎকণ্ঠার কথা জানান। তিনি জানতে চান, ভূমিকম্পে আহতদের কী অবস্থা? পুনর্বাসন কার্যক্রম চলছে কি না—চিকিৎসার ব্যবস্থা কতটুকু হয়েছে ইত্যাদি। জেনারেল ওয়াকার ভূমিকম্প বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, সে সম্পর্কে তাকে অবহিত করলে তিনি খুশি হয়ে গাড়িতে ওঠেন।

গত কয়েক বছর খালেদা জিয়ার ওপর দিয়ে ঝড় বয়ে গেছে। অভিযোগ রয়েছে, জেলে তাকে স্লো পয়জনিং করা হয়েছে। জুলাই বিপ্লবের পর তিনি পুরোপুরি মুক্ত হন। তখনো অসুস্থ ছিলেন। মুক্তির আগে তাকে চিকিৎসায় বাধা দেওয়া হয়েছিল। তবে মুক্তির পর লন্ডনে তার চিকিৎসা হয়েছে। এখনো পুরোপুরি সুস্থ নন। তবু দেশ ও দেশের মানুষকে নিয়ে তার এই উৎকণ্ঠা প্রকাশ সবার দৃষ্টি কেড়েছে। তার শারীরিক অবস্থা কতটা খারাপ ছিল, হাতগুলোর দিকে তাকালেই বোঝা যায়। তবু দেখুন বাংলাদেশের মানুষের প্রতি তার কতটা দরদ, কী অপরিসীম ভালোবাসা! অনেকেই মনে করছেন, প্রেসিডেন্ট করার মাধ্যমে তাকে জাতির পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সম্মান জানানো উচিত।
বাংলাদেশে বর্তমানে খালেদা জিয়া একজন সর্বজনশ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব। দল-মত নির্বিশেষে বলা যায় তিনি জাতির অভিভাবকের আসনে রয়েছেন। তিনি দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী। তিনবার প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। দুই মেয়াদে ১০ বছর তিনি দেশ পরিচালনা করেছেন। তার সান্নিধ্যে কাজ করার সৌভাগ্য হয়েছে। সেনাকুঞ্জে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের কাছে তিনি ভূমিকম্প ক্ষতিগ্রস্তদের নিয়ে যে উৎকণ্ঠা প্রকাশ করলেন, এটি তার হঠাৎ কোনো বিষয় নয়। বন্যা, ঘূর্ণিঝড়সহ যখনই দেশে কোনো দৈব দুর্বিপাক কিংবা প্রাকৃতিক দুর্যোগে মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদের সহযোগিতায় তাকে ঝাঁপিয়ে পড়তে দেখেছি। ১৯৯১ সালের প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ের সময় তিনি প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন মাত্র কিছুদিন হয়। তিনি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর চট্টগ্রামে স্থানান্তর করেন এবং সেখান থেকে ঘূর্ণিঝড় পুনর্বাসন কার্যক্রম পরিচালনা করেন। শুধু তাই নয়, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে তিনি সহযোগিতা চান। প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ (সিনিয়র) সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। মার্কিন জেনারেল স্ট্যাকপলের নেতৃত্বে অপারেশন সি অ্যাঞ্জেলের তত্ত্বাবধানে সেদিন ত্রাণ ও উদ্ধার তৎপরতা প্রশংসা অর্জন করেছিল। উত্তরাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যা হলে তিনি বগুড়ায় দপ্তর খুলে সেখান থেকে ত্রাণ তৎপরতা চালান। বিরোধী দলে থাকা অবস্থায় এরশাদ আমলে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় ভয়াবহ টর্নেডোতে পাঁচ শতাধিক মানুষ মারা গিয়েছিল। তিনি খাদ্যবস্তুসহ বিপুল ত্রাণসামগ্রী নিয়ে গিয়েছিলেন। খোলা আকাশের নিচে অসহায় মানুষদের সঙ্গে বসে সানকিতে করে একসঙ্গে খাবার খেয়েছিলেন। এই হলো খালেদা জিয়া, এ জন্যই তার ওপর মানুষের এত ভরসা।
ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল কেন মাধবদী
ভূমিকম্পের আলোচনার শুরুতেই দেখা যাক মাধবদী কেন সংবাদ শিরোনাম? শুক্রবার সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে যে ভূমিকম্প ঢাকাসহ সারা দেশ কাঁপিয়ে দেয়, তার উৎপত্তিস্থল ছিল নরসিংদীর মাধবদী। মাত্র ২০ সেকেন্ড স্থায়ী ছিল এই ভূমিকম্প। এতে বহু ভবনে ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে, শিশুসহ ১০ জন নিহত এবং ৬ শতাধিক মানুষ আহত হয়। ঢাকার মেট্রো স্টেশনের ছয় স্থানে ফাটল চিহ্নিত হয়। এর আগে স্মরণকালের মধ্যে ঢাকার মানুষ ভূমিকম্পের এতবড় ঝাঁকুনির সম্মুখীন হননি।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএসের তথ্য অনুযায়ী ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৫ দশমিক ৫, আর বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যে বলা হয়েছে, ৫ দশমিক ৭ মাত্রার। ইউএসজিএস ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল চিহ্নিত করেছে ঢাকা থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে নরসিংদীর মাধবদীতে। ভূমিকম্পটির কেন্দ্রস্থল ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার গভীরে। অগভীর হওয়ার কারণেই কম্পন তীব্রভাবে অনুভূত হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা ভূমিকম্পটিকে ঢাকার কাছাকাছি এলাকায় রেকর্ড করা বিগত কয়েক দশকের মধ্যে অন্যতম শক্তিশালী কম্পন বলে উল্লেখ করেছেন। তারা সতর্ক করেছেন, এই ঘটনাটি প্রমাণ করে ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকা বড় ধরনের ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে রয়েছে এবং অপরিকল্পিত নগরায়ণের কারণে ঢাকা খুবই ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
মাধবদী ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল হওয়ার কারণ কী? এ সম্পর্কে ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ ও বুয়েটের অধ্যাপক ড. মেহেদি আহমেদ আনসারীর মতে, সুনির্দিষ্ট ভূতাত্ত্বিক কারণ হচ্ছে ওই এলাকাটি গুরুত্বপূর্ণ, সেখানে রয়েছে একটি ফাটল রেখা, অর্থাৎ এলাকাটি ফল্ট লাইনের ওপর অবস্থিত। তার মতে, বাংলাদেশ এমন একটি অঞ্চলে অবস্থিত, যেখানে ভারতীয়, ইউরোশীয় এবং বার্মিজ (ইন্দো-বার্মা)—এই তিনটি প্রধান টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থিত। এই প্লেটগুলো ক্রমাগত একে অন্যের সঙ্গে ধাক্কা খাচ্ছে, যার ফলে প্রচুর শক্তি সঞ্চিত হচ্ছে। এই সঞ্চিত শক্তি হঠাৎ যখন মুক্ত হয়, তখন ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যামন্ট-ডোহার্টি আর্থ অবজারভেটরির সিনিয়র গবেষক ড. মাইকেল স্টেকলার বাংলাদেশসহ একদল ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ নিয়ে সম্প্রতি গবেষণা করে বলেছেন, গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র বদ্বীপের নিচে অবস্থিত ফল্ট লাইনে বরাবর শক্তি জমা হচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. হুয়ায়ুন আখতারের মতে, গত কয়েক শতাব্দী ধরে বড় কোনো ভূমিকম্প না হওয়ায় প্রায় ৮ থেকে ৯ মাত্রার ভূমিকম্প সৃষ্টির মতো শক্তি জমা হয়ে আছে, যা যেকোনো সময় নির্গত হতে পারে। নোয়াখালী থেকে সিলেট পর্যন্ত বিস্তৃত একটি বড় ফাটল রেখা রয়েছে, যার একটি ছোট অংশ নরসিংদীর মধ্য দিয়ে গেছে। মাধবদীর ভূমিকম্পটি সম্ভবত এই স্থানীয় ফাটলরেখা বরাবর প্লেটের সংযোগস্থলের সৃষ্ট চাপের কারণে হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা আরো জানিয়েছেন, মধুপুর ফাটল, যা ঢাকা থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত, সেটিসহ অন্যান্য ফাটল রেখাগুলো সক্রিয় হওয়ায় ঝুঁকি বরাবরই ছিল। মাধবদীর এই ঘটনা প্রমাণ করেছে যে, ৫ বা ৬ মাত্রার ভূমিকম্প ঢাকার আরো কাছাকাছি এলাকা থেকে উৎপন্ন হতে পারে।
ভলকানো ডিসকভারি ডটকমের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭০ সাল থেকে নরসিংদীসহ আশপাশের ১০০ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে ২ থেকে ৫ দশমিক ৫ মাত্রার অন্তত ৮২টি ভূমিকম্প হয়েছে। এ ঘটনাগুলোও ইঙ্গিত দেয় যে, এ অঞ্চলে মাঝারি ধরনের ঝুঁকি বিদ্যমান।
বড় ভূমিকম্পের আশঙ্কা ও ঢাকার বিপদ কেন
ড. আনসারীর মতে, বাংলাদেশে একটি বড় ভূমিকম্প হওয়ার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। ঐতিহাসিক তথ্যবিশ্লেষণ করে তিনি বলেছেন, ৭ মাত্রার ভূমিকম্প সাধারণত ১০০ থেকে ১২৫ বছর এবং ৮ মাত্রার ভূমিকম্প ২৫০ থেকে ৩০০ বছর পরপর ফিরে আসে। যেহেতু ১৯৩০ সালের পর এই অঞ্চলে বড় কোনো ভূমিকম্প হয়নি, তাই যেকোনো মুহূর্তে একটি বড় ঝাঁকুনি হওয়ার প্রবল আশঙ্কা রয়েছে। কখন এই ভূমিকম্পটি আঘাত হানবে, তা বলা মুশকিল, তবে সাম্প্রতিক ছোট কম্পনগুলো বড় ভূমিকম্পের ‘ফোরশেক’ বা আগাম বার্তা হতে পারে। এগুলো আমাদের জন্য আগাম সতর্কবার্তা। এই ঝুঁকির কারণে আমাদের সতর্ক হতে হবে। ঢাকায় প্রায় ২১ লাখ ভবন রয়েছে, যার মধ্যে প্রায় ছয় লাখ ভবন ছয়তলার বেশি উঁচু। এছাড়া অনেক হাইরাইজ বিল্ডিং রয়েছে। এই ভবনগুলোর বেশির ভাগই ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড (বিএনবিসি) মেনে তৈরি হয়নি। ৬ বা ৭ মাত্রার একটি মাঝারি ভূমিকম্প হলেই অপরিকল্পিত ও দুর্বল কাঠামোর কারণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। ড. আনসারীর মতে, ঢাকার ১০০ কিলোমিটারের মধ্যে ৭ বা তার বেশি মাত্রার ভূমিকম্প হলে দুই থেকে তিন লাখ লোক হতাহত এবং নগরীর প্রায় ৩৫ শতাংশ ভবন ধসে পড়তে পারে। এ জন্য অবিলম্বে ২১ লাখ ভবন পরিদর্শন করে সেগুলোর কাঠামোগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। ভবনগুলোর ঝুঁকির মাত্রা অনুযায়ী লাল (অতি ঝুঁকিপূর্ণ), হলুদ (মাঝারি ঝুঁকিপূর্ণ) এবং সবুজ (তুলনামূলক নিরাপদ) এই তিন ভাগে চিহ্নিত করা উচিত। রাজউক চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার রিয়াজুল ইসলাম রিজু ইতোমধ্যে বলেছেন, বিল্ডিং কোড মেনে ভবন তৈরির বিষয়টিই এখন তাদের অগ্রাধিকার। ইতোমধ্যে অতি ঝুঁকিপূর্ণ ৩২১টি ভবন চিহ্নিত করা হয়েছে। রাজউক আরো ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিত করার কাজে হাত দিয়েছে। রাজধানী ঢাকা খুবই ঘনবসতিপূর্ণ একটি মহানগর, প্রায় দুই কোটি মানুষ এখানে বাস করে। গত পাঁচ বছরে ৩৯টি ছোট ও মাঝারি ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল বাংলাদেশে এবং এর ২৮ শতাংশের উৎপত্তিস্থলই ছিল ঢাকার ৮৬ কিলোমিটারের মধ্যে। ফলে ঢাকার ঝুঁকি কতটা বোঝা যায়।
ভূমিকম্পের জন্য চারটি অঞ্চলে বিভক্ত বাংলাদেশ
বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোডের সর্বশেষ সংস্করণ অনুযায়ী চারটি প্রধান অঞ্চলে (সিসমিক জোন) ভাগ করা হয়েছে। এই চার অঞ্চলের মধ্যে জোন-৪ ভূমিকম্পের জন্য সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা। এটি পড়েছে সিলেট-সুনামগঞ্জ-হবিগঞ্জ-মৌলভীবাজার-ময়মনসিংহ ও কিশোরগঞ্জের কিছু অংশ। ভূমিকম্পের জন্য উচ্চঝুঁকিপূর্ণ জোন-৩-এ রয়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরের কিছু অংশ। কুমিল্লা, ফেনী, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি এবং বান্দরবান জেলা। জোন-২ মাঝারি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা। এটি ঢাকা শহরের অধিকাংশ এলাকা এবং টাঙ্গাইল, বগুড়া, দিনাজপুর, পটুয়াখালী ও বরগুনার মতো উপকূলীয় কিছু এলাকা।
সর্বনিম্ন ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হলো—জোন-১। খুলনা, বরিশাল সাতক্ষীরা, বাগেরহাট ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বাকি অংশ। উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ‘ডাউকি ফল্ট’ টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থলের কাছাকাছি অবস্থানের কারণে সিলেট অঞ্চল এবং এর আশপাশ সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত।
লেখক : নির্বাহী সম্পাদক, আমার দেশ
abdal62@mail.com

