Ad T1

শতবর্ষী মুন্সীগঞ্জ শেখরনগরের বাইতুস সালাম জামে মসজিদ

মুহাম্মাদ ইয়ামিন
প্রকাশ : ০৯ মে ২০২৫, ১২: ৩৬

মসজিদ আল্লাহতায়ালার ঘর। আল্লাহর ঘরে মুসল্লিরা ইবাদত করেন। রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য মসজিদ নির্মাণ করল, আল্লাহ তার জন্য জান্নাতে ঘর নির্মাণ করবেন।’ (মুসলিম : ১২১৮) গোটা পৃথিবীতে অসংখ্য মসজিদ রয়েছে, সব মসজিদই কোনো না কোনোভাবে গড়ে উঠেছে। কোনো কোনো মসজিদ মানুষের আর্থিক সহায়তায়, কোনো মসজিদ মানুষের বুদ্ধি-পরামর্শের মধ্য দিয়ে আবার কোনো মসজিদ দ্বীনদার মুসল্লিদের জায়গাদানের মাধ্যমে গড়ে উঠেছে। এমনই একটি আল্লাহর ঘর সিরাজদীখান শেখরনগরের শতবর্ষী বাইতুস সালাম জামে মসজিদ।

১৯০২ সালে মসজিদটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। যে জায়গার ওপর মসজিদটি তা দান করেন মরহুম জাফর মোড়ল ও অতিসম্প্রতি পুনঃসংস্কারের সময় মসজিদের বারান্দার কিছু অংশ দান করেন মরহুম আব্দুল লতিফ। বর্তমানে মসজিদটি একতলার। এর রয়েছে একটি মূল ফটক। রাস্তার পাশে যে ফটকটি রয়েছে, তার ডানদিকে ও মসজিদের ভেতরে এবং মূল ফটকের ঠিক বাঁপাশে মুসল্লিদের অজুখানা নির্মিত রয়েছে। তিনদিকে মসজিদের ওজুখানা রয়েছে। বারান্দা থেকে মূল মসজিদে প্রবেশ করে দুটি গেট রয়েছে। ভেতর রয়েছে আলোকোজ্জ্বল সুন্দর বাতি। প্রত্যন্ত অঞ্চলে এ মসজিদটি হলেও এর রয়েছে এয়ারকন্ডিশন ব্যবস্থা।

শতবর্ষী এ মসজিদ সম্পর্কে মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা আব্দুল আমীনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আলহামদুলিল্লাহ মসজিদটির শতবছর পূর্ণ হয়েছে। তাই আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। ধীরে ধীরে মসজিদে মুসল্লি বাড়ছে। আগে যা হতো এখন তার চেয়ে বেশি মুসল্লি হয়। মোহাম্মাদ শাহীন আলম সুফল নামের এক স্থানীয় মুসল্লি বলেন, ‘আমি এই মসজিদের মুসল্লি। আমাদের মসজিদের এক শ বছর পূর্ণ হয়েছে, তাই আমরা খুব খুশি।’

এদিকে বিনা বেতনে মসজিদে মুয়াজ্জিন হিসেবে আছেন স্থানীয় এক মুরব্বি হেলাল মোল্লা। তিনি বলেন, ‘এই এলাকার মধ্যে এটাই ছিল একমাত্র মসজিদ। এ মসজিদে দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ এসে নামাজ আদায় করেছেন। আমি এ মসজিদের নিয়মিত মুসল্লি। প্রায় ২৫-৩০ বছর ধরে এখানে নামাজ আদায় করছি। আল্লাহ যেন নামাজ কবুল করেন।’

স্থানীয় মুসল্লি মোহাম্মাদ আজমত মোড়ল বলেন, ‘আমাদের বয়সের চেয়ে মসজিদের বয়স অনেক বেশি। এটা আমাদের বাব-দাদাদের মসজিদ। আমরা ছোট থেকেই মসজিদটি দেখে আসছি ও এখানেই নিয়মিত নামাজ আদায় করছি।’

মসজিদটিতে মুসল্লিরা নিয়মিত নামাজ আদায় করেন ও জুমার দিন মুসল্লি হয় প্রায় ১৫০ জনেরও অধিক। ছোট ছোট বাচ্চাও জুমার দিন মসজিদটিতে আনন্দের সঙ্গে নামাজ পড়ে। মসজিদটিতে সকালে মক্তবে পড়ানো হয়। সেখানে প্রায় ২৫-৩০ জনের মতো শিক্ষার্থী রয়েছে।

ইমাম সাহেবের থাকার জন্য দোতলায় একটি কক্ষ রয়েছে। মসজিদটির দোতলায় দাঁড়ালে দেখা যায় মসজিদের চারদিকে সবুজের সমারোহ। নারিকেল, আম, কাঁঠাল ও অন্যান্য ফল-ফুলের গাছসহ চারপাশে সবুজের শামিয়ানা।

এদিকে শতবর্ষপূর্তি উপলক্ষে স্থানীয় যুবকরা একটি ওয়াজ ও দোয়া মাহফিলের পরামর্শ করছেন। যেখানে হকপন্থি দেশের প্রখ্যাত ওলামায়ে কেরামদের আমন্ত্রণ করা হবে বলে জানা যায়।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত