Ad T1

চ্যাম্পিয়নস লিগ

‘সুপারম্যান’ রাইসের নতুন ইতিহাস

স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশ : ০৯ এপ্রিল ২০২৫, ২৩: ৫৫
ডেকলান রাইসের গোলের উচ্ছ্বাস
ডেকলান রাইস- যেন এক সুপারম্যান! আর্সেনালের সমর্থকদের কাছে তার চেয়েও যেন বেশি কিছু এই ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার। ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবলে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু যেন এখন এই ইংলিশ ফুটবলার। হবেই বা না কেন? তার অতিমানবীয় পারফরম্যান্সে ফুটবলপ্রেমীদের চোখ যেন চড়কগাছ হওয়ার জোগাড়। অবিশ্বাস্য রকমের চোখধাঁধানো বাঁকানো শটে রিয়াল মাদ্রিদের জাল কাঁপিয়ে যে নায়ক বনে গেছেন রাইস। জাদুকরি ফ্রি-কিকে রবার্তো কার্লোসের ক্যারিয়ারের সোনালি সময়ের স্মৃতিই যেন মনে করিয়ে দিলেন। এমিরেটস স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে বসা রবার্তো কার্লোসের যেন বিশ্বাসই হচ্ছিল না ব্যাপারটা। ভিডিও দেখে অনেকে এমন প্রশ্নও ছুড়ে দিতে পারেন, রিয়ালের ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি কি গ্যালারির আসন ছেড়ে মাঠে নামলেন কখন? কিন্তু নান্দনিক ফুটবলের ঝলকের ঘোর কাটলে বুঝতে অসুবিধা হবে না কারোর জন্যই। আগুনে পারফরম্যান্সটা উপহার দিয়েছেন ডেকলান রাইস, কার্লোস নন!

প্রথমার্ধে আর্সেনালের মাঠে সমানতালে লড়াই করে গেছে রিয়াল মাদ্রিদ। বিরতির আগ পর্যন্ত গোলের দেখা মেলেনি তাই। বিরতির পর ম্যাচের চিত্রনাট্য পাল্টে যায় হুট করেই। চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে ডেকলান রাইস যে গোলা ছুড়লেন, তাতে হতবাক ‘চ্যাম্পিয়ন লিগের রাজা’রাও। ১৭ মিনিটের আক্রমণের ঝড়ে তিন গোল হজম করে বিধ্বস্ত হয়েছে কোচ কালো আনচেলত্তির শিষ্যরা। আর্সেনালের মাঠে রিয়াল অসহায় আত্মসমর্পণ করেছে ৩-০ গোলে। গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়া গোলবারের সামনে চীনের প্রাচীর হয়ে না দাঁড়ালে টুর্নামেন্টের ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা গোল হজম করে ফেলতে পারতো আরও অন্তত কয়েকটি। সৌভাগ্য বলতে হয় রিয়ালের। নইলে আরো বড় ব্যবধানে উড়ে যাওয়ার লজ্জায় পড়তে হতো ভিনিসিয়ুস জুনিয়র-কিলিয়ান এমবাপ্পেদের।

রিয়ালের নাস্তানাবুদ হওয়ার ম্যাচে ফ্রি কিক থেকে জোড়া গোল এনে দিয়ে ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবলের এ এলিট টুর্নামেন্টে নয়া ইতিহাস লিখেছেন রাইস। প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে চ্যাম্পিয়নস লিগের নকআউটে ফ্রি কিক থেকে পেয়েছেন দুই গোল। তার আগে রিভালদো, ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো, নেইমার, হাকিম জিয়েশরা ফ্রি কিক থেকে জোড়া গোল পেয়েছেন বটে, তবে নকআউট পর্বে নয়।

জমজমাট লড়াইয়ে কিছুতেই যেন ম্যাচের ডেডলক ভাঙতে পারছিল না কোনো দল। কিন্তু লড়াইয়ের ৫৮ মিনিটে বদলে যায় ম্যাচের গতিপথ। আর্সেনালের পক্ষে ফ্রি কিকের বাঁশি বাজান মাঠের রেফারি। সুযোগ কাজে লাগিয়ে ফুটবল দুনিয়াকে চমকে দেন ডেকলান রাইস। তার ক্ষিপ্রগতির বাঁকানো শট নিচু হয়ে আশ্রয় খুঁজে নেয় অতিথি রিয়ালের জালে। কোর্তোয়া বল রুখতে চেষ্টার কোনো ত্রুটি রাখেননি। কিন্তু ঝাঁপ দিয়েও লাভ হয়নি। বল আটকানোর জন্য কিছুই করতে পারেননি। আসলে কোর্তোয়ার করারও কিছু ছিল না। পেশাদার ফুটবল ক্যারিয়ারে এই প্রথম সরাসরি ফ্রি কিকে গোল পেলেন রাইস।

এতেও যেন গোলের ক্ষুধা মিটছিল না রাইসের। ম্যাচের ৭০ মিনিটে ফের ফ্রি কিক পেয়ে যায় আর্সেনাল। ২৮ বছরের রাইস আবার দেখান নৈপুণ্য। তার পা ছোঁয়া দুর্বার শট ওপরের পোস্ট ঘেঁষে জড়ায় জালে। এবারও বল ক্লিয়ার করতে সব রকম চেষ্টা করেছেন। কিন্তু রিয়াল গোলবারের অতন্দ্র প্রহরী এ যাত্রায়ও হন পরাস্ত। গোল হজম করে হতভম্ব হয়ে পড়া রিয়াল আর লড়াইয়ে ফিরতে পারেনি। তবে বিবর্ণ রিয়ালকে পেয়ে জয়ের ব্যবধান আরও বাড়িয়ে নেয় আর্সেনাল। ৭৫ মিনিটে লুইস-স্কেলির পাস থেকে পাওয়া বল জালে পাঠান স্প্যানিশ মিডফিল্ডার মিকেল মেরিনো। রিয়ালের দুর্দশার ষোলোকলা পূর্ণ হয়েছে ইনজুরি টাইমের চতুর্থ মিনিটে। দ্বিতীয় হলুদ কার্ড (লাল কার্ড) দেখে মাঠ ছাড়েন স্প্যানিশ জায়ান্টের তারকা এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গা।
Ad
এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত