ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের মধ্যেই মস্কো থেকে জ্বালানি তেল আমদানি অব্যাহত রেখেছিল ভারত। এর জেরে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দেশটির ওপর অতিরিক্ত শুল্ক চাপিয়ে দেন। ট্রাম্পের শুল্কের প্রভাবে রাশিয়ার বদলে ভারত নতুন করে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে তেল আমদানি করার দিকে ঝুঁকছে।
বৃহস্পতিবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, মধ্যপ্রাচ্যের সৌদি আরব, কুয়েত, ইরাক এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে তেলের ট্যাংকার বুকিং বাড়িয়েছে ভারত। রাশিয়ার তেলশিল্পের ওপর আমেরিকার নিষেধাজ্ঞার পরপরই এ বুকিং বাড়ানো শুরু করে দিল্লি। এ থেকে মনে করা হচ্ছে, ভারত মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে অধিক হারে তেল আমদানি করতে যাচ্ছে।
খবের বলা হয়, জ্বালানি তেলের বাজারের অংশীদাররা শুরু থেকেই ভারতের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করছে। আজ থেকে রাশিয়ার তেল রপ্তানিকারী কোম্পানিগুলোর ওপর আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা শুরুর পর ভারত কী পদক্ষেপ নেয়, তা বোঝার চেষ্টা করা হচ্ছে।
আমেরিকান সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ জ্বালানি তেলবাহী জাহাজের ব্রোকারদের তথ্য দিয়ে জানায়, সৌদি আরব, কুয়েত, ইরাক এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে আরব সাগরের মধ্য দিয়ে জ্বালানি তেল আমদানি করতে ১২টি ট্যাংকার বুক করেছে দিল্লি। এর আগের মাসে চারটি ট্যাংকার বুক করেছিল ভারত, যা দেশটির মধ্যপ্রাচ্য থেকে তেল আমদানির পরিমাণে বিশাল পরিবর্তন।
ব্রোকাররা জানান, ভারতীয় আমদানিকরারকরা জ্বালানি তেল সরবরাহের জন্য আরো বেশি ট্যাংকার বুক করার চেষ্টা করছেন। অবশ্য জাহাজ রিজার্ভ করার প্রকাশ্য তথ্যেই প্রকৃত চিত্র উন্মোচন হয়নি। ব্যক্তিগতভাবে তেল আমদানির জন্য অনেক জাহাজ রিজার্ভ করা হচ্ছে।
তবে বিপুলভাবে জাহাজ রিজার্ভ করার সংখ্যা বাড়ায় একই সঙ্গে পরিবহনের খরচও বাড়িয়ে তুলছে। মধ্যপ্রাচ্য থেকে জ্বালানি তেল আমদানি করতে দৈনিক জাহাজ বুকিংয়ের হার গত পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ বেড়েছে। ফলে তেল সরবরাহের জন্য জাহাজ পেতে অন্যান্য দেশগুলোর ওপরও চাপ তৈরি হয়েছে।
এদিকে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু জানিয়েছে, আমেরিকার ৫০ শতাংশ শুল্কারোপের পর রাশিয়া থেকে ভারতের তেল আমদানি উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। গত বছরের সেপ্টেম্বরের তুলনায় চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে মস্কো থেকে দিল্লির তেল আমদানিমূল্যের দিক থেকে ২৯ শতাংশ ও পরিমাণের দিক থেকে ১৭ শতাংশ কমেছে।
আমেরিকার নিষেধাজ্ঞার পরিপ্রেক্ষিতে ভারত ও চীনের রাশিয়া থেকে তেল আমদানি কমিয়ে দেওয়ার জেরে রুশ তেলের দাম পড়ে গেছে। সোমবার ব্লুমবার্গ জানায়, আগের সপ্তাহের চেয়ে রাশিয়ার উরালস ক্রুড তেলের দাম প্রতি ব্যারেলে ৩৬ দশমিক ৬১ ডলার কমে গেছে। সাধারণত উরালস ক্রুড ১২-১৩ ডলার ডিসকাউন্টে বিক্রি হতো। নতুন করে নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়ে ২০২৩ সালের চেয়ে এখন ৪০ ডলার কমে এ তেল বিক্রি হচ্ছে।


বেড়েছে সবজির দাম, কমেছে ডিম মুরগি ও পেঁয়াজের