Ad

এবি ব্যাংকের এমডির পদত্যাগ

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮: ৪০
তারিক আফজাল

বেসরকারি খাতের এবি ব্যাংকের এমডি তারিক আফজাল কানাডা থেকে পদত্যাগ করেছেন। ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে রোববার (৮ ডিসেম্বর) ইমেইলে তিনি পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন। তিনি ব্যাংকটির চেয়ারম্যান বরাবর এই পদত্যাগপত্র পাঠান। ব্যাংকটির শীর্ষ পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ব্যাংকের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, দীর্ঘ ছুটি শেষে আজ (৮ ডিসেম্বর) আফজালের যোগদান করার কথা ছিলো। যোগদান না করে তিনি পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন। সেখানে শারীরিক নানা অক্ষমতার কথা উল্লেখ করেছেন। তারিক আফজাল ২০১৮ সালে ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর হিসেবে এবি ব্যাংকে যোগদান করেন। ২০১৯ সালের ৮ জুলাই তিনি প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড ম্যানেজিং ডিরেক্টর হন।

২০১৮ সালে এবি ব্যাংকে উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) হিসেবে নিয়োগ পান তারিক আফজাল। পরের বছরই তিনি পদোন্নতি পেয়ে ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হন। এরপর আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক উপকমিটির সদস্য হয়ে তিনি রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে ওঠেন।

সূত্র জানা যায়, তারিক আফজাল এবি ব্যাংকের এমডি হিসেবে যোগ দেয়ার পরও ব্যাংকটি ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। বরং ব্যাংকটির আর্থিক অবস্থা আরও দুর্বল হয়েছে। কারণ ব্যাংকটির অনিয়মের বিষয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যবস্থা নিতে গেলে সেখানে রাজনৈতিক প্রভাব খাটান তারিক আফজাল।

১৯৮১ সালে প্রতিষ্ঠিত দেশের প্রথম বেসরকারি ব্যাংকটি গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১০ হাজার ১১৫ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে। তথ্য বলছে, এটি এবি ব্যাংকের মোট বিতরণ করা ৩২ হাজার ৬২৫ কোটি টাকা ঋণের ৩১ শতাংশ। খেলাপি ঋণ বৃদ্ধির ফলে সামগ্রিকভাবে ব্যাংকটির ৮ হাজার ৪১ কোটি টাকার মতো নিরাপত্তা সঞ্চিতির ঘাটতি তৈরি হয়েছে। যদিও বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ ছাড়ের কারণে সেই প্রভিশন ঘাটতি দেখাতে হচ্ছে না।

এ ছাড়াও ঝুঁকি বিশ্লেষণ করে বাংলাদেশ ব্যাংক গত বছর এবি ব্যাংককে ‘লাল’ তালিকায় রাখে। পরে একে একটি ভালো ব্যাংকের সাথে একীভূত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে ব্যাংকের গ্রাহকরা আতঙ্কিত হয়ে আমানত তুলে নেন। ফলে এবি ব্যাংক এখন তারল্য সংকটে পড়েছে। তারল্য সংকটের কারণে বিধিবদ্ধ তারল্য সংরক্ষণে (এসআলআর) রাখতে ব্যর্থ হয়েছে।

চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত এবি ব্যাংক থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে ২ হাজার ৯৩০ কোটি টাকা। আমানত উত্তোলনের চাপ মেটানোর জন্য এবি ব্যাংক এসএলআর হিসেবে রাখা সরকারি সিকিউরিটিজ বন্ধক রেখে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে রেপো সহায়তা নেয়। রেপো হিসেবে গত ৩১ আগস্ট ধারের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ২১৬ টাকা। এতে করে ব্যাংকটির ৩ হাজার ৬৫২ কোটি টাকার এসএলআর ঘাটতি তৈরি হয়েছে।

ষ্পেশাল রেপো রেট ধরে ব্যাংকটির ওপর জরিমানা আরোপ হয়েছে ৯৮ কোটি ২৯ লাখ টাকা। ব্যাংকের আর্থিক বিবরণী অনুসারে, গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এবি ব্যাংকের মোট আমানত ছিল ৩২ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা। গত বছরের ডিসেম্বর শেষে তা ছিল ৩৫ হাজার ৪৩৮ কোটি টাকা।

ad
এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত