Ad

ট্রানজিটের বিনিময়ে মারা হয়েছে মানুষ: ডা. জাহিদ

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮: ০৪
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮: ১২

ট্রানজিটের নামে বিগত বছরগুলোতে আমাদেরকে ভুল বুঝানো হয়েছিল মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেছেন, বাংলাদেশ ১৭ বছর ভারতকে শুধু দিয়েই গেছে। বিনিময়ে সীমান্তে মানুষ মারা হয়েছে । বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ভারতীয় আগ্রাসন বিরোধী ১২ দলীয় জোটের এক প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, ‘ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তার টুইটে যে মনোভাব প্রকাশ করেছেন তাতে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। বলা হয়েছিল বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ভারত ট্রানজিট নিলে বাংলাদেশ নাকি সিঙ্গাপুর হবে? অথচ আখাউড়া দিয়ে ভারতের এতো ট্রাক গেলেও বাংলাদেশের অর্থনীতির সূচক নিচের দিকেই নেমেছে।

তিনি আরো বলেন, ভারত আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাশে দাঁড়িয়েছিল, সেজন্য আমরা কৃতজ্ঞ। কিন্তু বিগত বহু বছর তারা কড়ায় গণ্ডায় প্রতিদান আদায় করেছে। আজও ফারাক্কার পানির সমস্যা সমাধান হয়নি। সীমান্তে প্রতিদিন মানুষ মারা হয়। উজানে ভারত বাঁধ খুলে দিয়ে বাংলাদেশে অনাকাঙ্ক্ষিত বন্যার সৃষ্টি করছে। তারা বিনা অজুহাতে পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দেয়।’

ডা. জাহিদ বলেন, অনেক দেশে স্বৈরাচারের দোসরদের বিচার বহু বছর পরেও হয়েছে। সুতরাং আগামীতে সেরকম হবে না, সেটি ভাবার কারণ নেই। আওয়ামী লীগ বাড়ি-ঘর দখল ও গায়েবি মামলা দিয়ে নির্যাতন করেছে।

সালমান এফ রহমানের উদ্দেশে তিনি বলেন, এতো পরিমাণ গুম, খুন ও লুট করেও রক্ষা হয়নি। ভয়ে আপনি নিজের দাঁড়ি কামিয়েছেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। তিনি পরাজিত আওয়ামী লীগকে হুশিয়ার করে বলেন, প্রতিটি কাজের হিসাব আগামী প্রজন্মের কাছে দিতে হবে। কেউ হয়তো নেদারল্যান্ড গেছেন। কলকাতা গেছেন। কেউ চট করে ঢুকার চেষ্টা করছেন। সৎ সাহস থাকলে ঢুকেন, বিচারের মুখোমুখি হোন।

সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন দিতে হবে। নির্বাচন করতে কতদিন লাগে সেটি দেশের মানুষ জানে। আমরা রাষ্ট্র মেরামত করার লক্ষ্যে ৩১ দফা নিয়ে কাজ করছি। যেহেতু পতিত স্বৈরাচার সরকার সাড়ে ১৫ বছরে দেশের সকল গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করেছে। সেজন্যই সকল রাজনৈতিক দলগুলো অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা করছে।

তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে ডা:জাহিদ বলেন প্রধান উপদেষ্টা বলেন এক রকম। আবার তার প্রেস সচিব বলেন আরেক রকম কথা । “ আপনারা কে কথা বলবেন, দায়িত্ব নিয়ে বলুন। না হলে মানুষ বিভ্রান্ত হবে। সব সংস্কার তো আপনারা করতে পারবেন না। কখন নির্বাচন হবে সেটা স্পষ্ট করুন। আপনাদেরকে তো আমরা সবাই মিলে সহযোগিতা করছি “।

তিনি আরো বলেন, মানুষের দুর্বিষহ জীবন। এখান থেকে উত্তরণের জন্য জনগণের নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই। পতিত স্বৈরাচার সরকারের প্রেতাত্মারা এখনো ঘাপটি মেরে আছে। তাদেরকে চিহ্নিত করুন, গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনুন। তবেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে। যারা দেশের ভেতরে ও বাইরে থেকে ষড়যন্ত্র করতে চায়, তাদেরকে দেশবাসী স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলবে ।

সভাপতির বক্তব্যে মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, স্বাধীনতার মাস ডিসেম্বরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আমাদের স্বাধীনতার গৌরব ছিনতাই করতে চায়। বাংলাদেশের অসংখ্য মানুষ যুদ্ধ করে অপরিসীম ত্যাগ স্বীকার করেছে। আমরা নরেন্দ্র মোদির মন্তব্যকে ঘৃণা করি, প্রত্যাখ্যান করি।

১২ দলীয় জোটের প্রধান ও জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দারের সভাপতিত্বে বাংলাদেশ এলডিপির অতিরিক্ত মহাসচিব তমিজউদ্দিন টিটু পরিচালনায় প্রতিবাদ সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান ও জোটের মুখপাত্র শাহাদাত হোসেন সেলিম, জাতীয় দলের চেয়ারম্যান ও জোটের সমন্বয়ক সৈয়দ এহসানুল হুদা, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মুফতি গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, বিকল্পধারা বাংলাদেশের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নুরুল আমিন বেপারী, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সহ-সভাপতি রাশেদ প্রধান, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন মুহাম্মদ ফারুক রহমান, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন পারভেজ, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মাওলানা আব্দুল করিম, ইসলামিক পার্টির মহাসচিব আবুল কাশেম, নয়া গণতান্ত্রিক পার্টির সভাপতি এম এ মান্নান প্রগতিশীল জাতীয়তাবাদী দলের (পিএনপি) ফিরোজ মো. লিটন।

ad
এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত