ড. মিজানুর রহমান আজহারি
আজ থেকে ঠিক ৫০ বছর পরের কোনো এক স্কুলফেরা দুপুর। সদ্য কৈশোরে পা রাখা আপনার নাতি অথবা নাতনিটা দৌড়ে ছুটে এলো আপনার কাছে। মায়া-মাখানো আহ্লাদি কণ্ঠে সে বলল, ‘দাদু জানো, আজ স্কুলে স্যার আমাদের জুলাই বিপ্লবের গল্প শুনিয়েছেন। সে কী ভয়ানক এক যুদ্ধের কাহিনি! শুনে তো আমার ভীষণ ভয় লেগেছিল! দাদু, আমি শুনেছি, তুমিও নাকি সেই জুলাই বিপ্লবের যোদ্ধা। সেই রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে, মিছিলের সামনে দাঁড়িয়ে আকাশ-বাতাস কাঁপিয়ে স্লোগান তুলেছিলে তুমি। তুমি কেন চোখে কালো চশমা পরো, তা কিন্তু আমি জেনেছি। আম্মু বলেছে, যুদ্ধের ময়দানে পুলিশের ঘাতক বুলেট শাঁ করে এসে লেগেছিল তোমার গায়ে। মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তুমি। ফিনকি দিয়ে বেরিয়ে গেল তাজা রক্ত। তোমার বাঁ চোখটা সেই যে বুজেছিল, আর কোনো দিন সেটা খোলেনি। আচ্ছা দাদু, কীসের নেশা তোমাদের উন্মত্ত করেছিল সেদিন? কীসের প্রেরণা তোমাদের সাহস জুগিয়েছিল ঘাতকের বুলেটের সামনে দাঁড়ানোর? আমায় বলবে সেই দিনগুলোর কথা? কেন তোমার মতো লাখো মানুষ ডরভয়হীন হয়ে নেমে এসেছিলেন যুদ্ধের ময়দানে? আমাকে শোনাবে আবু সাঈদের কথা? মুগ্ধ, ওয়াসিম, প্রিয় আর ছোট্ট রিয়া গোপ—কত কত গল্প জমা তোমার ঝাঁপিতে। বলবে দাদু, সেসব গল্প?’
আপনার চোখ দুটো ভারী হয়ে এলো। বুকের কোন সে অতল থেকে যেন স্মৃতিরা এসে ভর করছে মস্তিষ্কের অন্দরে। নাকে যেন এসে লাগল সেই উত্তপ্ত জুলাই মাসের বারুদের গন্ধ। বয়সের ভারে ন্যুব্জ হয়ে আসা শরীরে যেন হঠাৎ দোল খেয়ে গেল দ্রোহের বাতাস। চোখে যেন জমাট আগুন। ফের কিশোর বা কিশোরীর ডাকে সংবিৎ ফিরে পাবেন আপনি, ‘দাদু, এই দাদু। তুমি শুনছো?’
জানালা দিয়ে বাইরে তাকালেন আপনি। পশ্চিমের খেজুরগাছের ডালে ডালে দুপুরের রোদ খেলা করছে। এখানে-ওখানে ছোটাছুটি করছে কয়েকটি চড়ুই। সেদিকে তাকিয়ে আপনি অস্ফুটে বললেন, ‘একটা মারি। একটাই যায়। বাকিডি যায় না, স্যার।’
সত্যিই তো। সেদিন তো কারও তাড়া ছিল না ঘরে ফেরার। মুক্তির মহোৎসবে যোগ দিতে সেদিন যেন প্রাণে প্রাণে পড়েছিল সাড়া। যদি তা না-ই হবে, কেন ঘাতক পুলিশ বলতে বাধ্য হয়েছিল—‘একটা মারি। একটাই যায়। বাকিডি যায় না।’ কেন বাকিরা ফিরত না ঘরে? কোন সে মহাকর্ষীয় টান, যা তাদের আটকে রেখেছিল বিপদমুখর রাজপথে?
কী নিদারুণ বর্বরতায়, কী অমানবিক পৈশাচিকতায় মেতে উঠেছিল খুনে বাহিনীর দল! নিরস্ত্র জনতাকে লক্ষ করে করে ছোড়া হয়েছিল প্রাণঘাতী বুলেট। রাস্তায় লাশের স্তূপ। বিদ্রোহী জনতা কখনো দখল নেয় রাজপথের, কখনো-বা খেই হারায়। তারা ক্লান্ত হয়, অবসাদ ঘিরে ধরে তাদের শরীর। কিন্তু তারা হাল ছাড়েন না। এক রাজপথ ছেড়ে বেছে নেন অন্য রাজপথ। এক মোড় ছেড়ে অন্য মোড়। আজান হলে পাশের মসজিদে ঢুকে পড়া, কিংবা রাস্তায় দাঁড়িয়ে যাওয়া সারিবদ্ধভাবে।
জালিম কি পরোয়া করে পরকালের? তার কি ভয় থাকে আল্লাহর আজাবের? যদি থাকত, ইয়ামিন মোল্লা নামের ছেলেটাকে, জোহরের নামাজ আদায় করে ফিরছিল সে। জানা যায়, সেদিন সে রেখেছিল নফল রোজাও। কত নৃশংসভাবে তাকে হত্যা করেছিল তারা! ইন্টারনেট-জুড়ে ছড়িয়ে পড়া দৃশ্যে, যখন তাকে ছুড়ে ফেলা হয় সাঁজোয়া যান থেকে, তখনো তো প্রাণ ছিল তার দেহে। তখনো নড়ছিল শরীরটা। ইয়ামিনের কি মনে পড়েছিল মায়ের মুখ? অস্ফুটে সে কি ডাকছিল বাবাকে? অথবা তার কি মনে পড়েছিল ছোট্ট বোনটাকে দিয়ে আসার কথা?
কী যে দুঃসহ ছিল সেই দৃশ্য! এই করুণ দৃশ্য দেখে গলে যাবে পাথরকঠিন হৃদয়ও। কিন্তু মায়া হলো না জালিমের দোসরদের। তারা কী অবলীলায় ছুড়ে ফেলেছিল তার দেহটাকে, যেন সেটা কোনো ময়লার ভাগাড়ে!
লাখ লাখ মানুষ সেদিন ঘরে ফেরেননি, কারণ শহীদ ইয়ামিনদের প্রতি হওয়া জুলুমের বদলা নিতে তারা ইস্পাতদৃঢ় শপথে বলীয়ান হয়েছিলেন। আবু সাঈদ আর মুগ্ধরা তাদের ঘরে ফিরতে দেননি।
সে এক অভূতপূর্ব সম্মিলন সবখানে! এমন দারুণ মৈত্রী, এমন ইস্পাতকঠিন ঐক্য এই জাতি আর দেখেছিল কবে? চেনা নেই, জানা নেই। কিন্তু প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রটিকে বাঁচাতে গুলির সামনে বুক পেতে দিচ্ছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। জাহাঙ্গীরনগরকে বাঁচাতে দৌড়ে যাচ্ছে ঢাবি। ঢাবির তালা ভাঙতে ছুটে আসছে জগন্নাথ। কী সুন্দর! কী প্রাণচাঞ্চল্যকর!
শুধু তো ছাত্রছাত্রীই নন, রাস্তার হকার থেকে রিকশাওয়ালা, বাদাম বিক্রেতা থেকে চা-ওয়ালা, ব্যাংকার থেকে ব্যবসায়ী, কিশোর-যুবা-বৃদ্ধ—ফাগুনের সেই আগুনদিনে সবাই যেন হয়ে উঠেছিলেন এক দেহ এক প্রাণ। সব মিলেমিশে একাকার হয়ে দ্রোহের তপ্ত লাভা যেন শতসহস্রগুণ হয়ে ছড়িয়ে পড়ল দেশময়। প্রবাসে থেকেও দেশপ্রেমিক বাংলাদেশিরা সাধ্যমতো সমর্থন জোগাচ্ছিলেন এই গণআন্দোলনে। উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠায় কাটাচ্ছিলেন একেকটি রাত।
সেই বিপ্লবে প্রাণ জুগিয়েছিল সাহসী সব স্লোগান। ‘তুমি কে আমি কে—রাজাকার রাজাকার; আপস না সংগ্রাম—সংগ্রাম সংগ্রাম’ এ ধরনের কত বৈচিত্র্যময় স্লোগানে মুখর ছিল দ্রোহের জুলাই। সেই রক্তমাখা সময় পঞ্জিকায় ও কণ্ঠে-কণ্ঠে ধ্বনিত হয়েছিল ‘আল্লাহু আকবার’ তাকবিরধ্বনিও।
হয়তো আমরা শতধা দলে বিভক্ত, দলে-উপদলে ছড়ানো-ছিটানো। কিন্তু এই তল্লাটে আমাদের আদি ও প্রকৃত পরিচয়—আমরা মুসলমান। শাহজালালের স্মৃতিধন্য এই উর্বর ভূমিতে মুসলমান পরিচয়টাই আমাদের সবচেয়ে বড় সাইনবোর্ড। জুলাইয়ের জালিম-খেদাও আন্দোলনেও আমাদের একত্র করেছিল এই মুসলিম ভ্রাতৃত্ববোধ। মুসলমান তো মুসলমানের ভাই। তার ভাই যখন আক্রান্ত হচ্ছেন, গুলি খাচ্ছেন, চোখ হারাচ্ছেন, খুন হচ্ছেন—তখন অন্য ভাই কীভাবে ঘরে বসে থাকতে পারেন?
মুগ্ধের ‘পানি লাগবে কারও? পানি? পানি?’ কথাগুলো শুনে ইয়ারমুকের যুদ্ধের কথা মনে পড়ে যায়। আহত তৃষ্ণার্ত সাহাবারা নিজে পানি না পান করে অন্য আহত সাহাবাদের পানি পৌঁছে দিতে বলছিলেন। অবশেষে সবাই তৃষ্ণাকাতর অবস্থায় শাহাদাতের অমিয় সুধা পান করেন।
বিপ্লবের সেই অগ্নিঝরা দিনগুলোয় আমাদের শব্দচয়নেও লেগেছিল মুসলমানিত্বের আলোকচ্ছটা। আমরা অত্যাচার বলিনি; বলেছি, ‘জুলুম।’ নিপীড়ক বলিনি; বলেছি, ‘জালিম।’ অত্যাচারিত বলিনি; বলেছি, ‘মজলুম।’ কোরআন থেকে উঠে আসা শব্দগুলো জুলাই বিপ্লবীদের কণ্ঠস্বরে যেন দিয়েছিল সাহসের ফোয়ারা। কেনই-বা দেবে না, কোরআন তো বরাবর মজলুমের পক্ষেই আওয়াজ তুলেছে—
তোমাদের কী হলো! তোমরা আল্লাহর রাস্তায় সেসব অসহায় নারী-পুরুষ-শিশুদের জন্য লড়াই করছ, যারা বলছে, ‘আমাদের রব, তুমি আমাদের এ জনপদ থেকে বের করে নাও। এই লোকরা জালিম।’ (সুরা নিসা : ৭৫)।
এই দ্রোহদিনে সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত শব্দটিও কোরআন থেকে ধার করা। জুলাই বিপ্লবের সবচেয়ে ভারী ও মর্যাদাপূর্ণ শব্দ সেটি। শব্দটি হলো—শহীদ। এই সহজ শব্দটি একজন সাধারণ মানুষকে দান করেছিল অনন্যতা। এই শব্দের ভারত্বে সাধারণ দিনমজুর হয়ে উঠেছিল আন্দোলনের বিমূর্ত প্রতীক।
‘শহীদ’ শুধুই একটি শব্দ কিংবা মৃত্যুর ধারণা নয়; এটি একটি মর্যাদা। আল্লাহর কাছে সবচেয়ে উঁচু মর্যাদাগুলোর মধ্যে অন্যতম। ফলে শহীদ বা শহীদের ধারণাটি আন্দোলনকারীদের জন্য হয়ে উঠেছিল এক শক্তিশালী প্রেরণা। যারাই সংগ্রামে প্রাণ হারিয়েছেন, তারাই হয়ে উঠেছেন প্রতিরোধের প্রতীক। তাদের আত্মত্যাগ অসংখ্য মানুষকে এই আন্দোলনে যোগ দিতে অনুপ্রাণিত করেছিল। তাদের কল্যাণেই ছাত্রসমাজের একটি আন্দোলন ছাত্র-জনতার আন্দোলন হয়ে দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে।
মৃত্যুর ভয় মানুষের আদিমতম আতঙ্ক। আর সেই আতঙ্ককে পুঁজি করে জালিম শাসকরা তাদের জুলুম চালিয়ে যায় যুগের পর যুগ। তবে যারা পরকালে বিশ্বাসী, আল্লাহর বিচার আর জান্নাত লাভের তামান্না যাদের হৃদয়পটে, তাদের কাছে মৃত্যু জীবনেরই একটা পর্যায় শুধু—আর কিছু নয়। মুসলমানরা মরতে ভয় করে না, কারণ তারা জানে তাদের জন্য অপেক্ষা করে আছে আরও একটা অনন্ত জীবন। সেই অনন্ত জীবনে বিশ্বাসী লাখো মুসলিম জুলাই দ্রোহের সময় মৃত্যুভয়কে জয় করে নেমে এসেছিলেন রাজপথে।
আন্দোলন নিয়ে অনেক সাহিত্য রচিত হচ্ছে। সংস্কৃতিকর্মীরা দিনরাত খেটে তৈরি করছেন জুলাই বিপ্লবের অনেক স্মৃতিগল্প। গান বাঁধা হচ্ছে, নাটিকা তৈরি করা হচ্ছে ইত্যাদি ইত্যাদি। যে যার মতো জুলাইয়ের স্মৃতি সংরক্ষণে কাজ করে যাচ্ছেন। কিন্তু কেন এবং কীভাবে হলো জানি না, একটা বিষয় যেন পুরোদমে আলোচনার বাইরে চলে গেল। কোনো সংস্কৃতিকর্মী, কোনো সুশীল প্রতিনিধি, কোনো বুদ্ধিজীবী, কোনো প্রগতিশীল বোদ্ধামহল অথবা রাষ্ট্রপক্ষের প্রতিনিধিত্বকারী কোনো ব্যক্তিদের দেখলাম না—জুলাই বিপ্লবে আলাদাভাবে ‘মুসলমান সম্প্রদায়ের অবদান’ শীর্ষক কোনো আলোচনা, টকশো, সিরিজ প্রোগ্রাম বা গল্প-সাহিত্য লিখতে।
হ্যাঁ, এই আন্দোলন যারা সফল করেছেন, যারা শহীদ হয়েছেন, যারা আহত হয়েছেন, তাদের সবার একটা পরিচয়—তারা বাংলাদেশি। আবার এটাও কি সত্য নয়, তাদের অধিকাংশের আরও একটা পরিচয় হলো— তারা বাংলাদেশি মুসলিম? ইসলামের প্রেরণাদায়ী অনুষঙ্গগুলো, জুলুম আর জালিমের পার্থক্যরেখাটা, শহীদ আর গাজীর মর্যাদাপূর্ণ অবস্থান—এসব কি এই আন্দোলনে মানুষকে দলে দলে নেমে আসার পেছনে মুখ্য ভূমিকা পালন করেনি? তাহলে জুলাইয়ের সব আলাপ-আলোচনা থেকে, গোলটেবিল বৈঠক থেকে, গল্প-কবিতা থেকে কেন ‘মুসলমান’ পরিচয়টা হারিয়ে যাবে?
আমরা সবাই দেশটার আমূল সংস্কারপ্রত্যাশী। এ দেশ আর এ ভূমি শাহজালালের পুণ্যভূমি হলেও স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরেও এখানে মুসলমানরা বাস করেন তৃতীয় শ্রেণির নাগরিকের মতো। আলিম আর ওলামাদের প্রতি বৈরিতা তো এ দেশের রাজনীতির রন্ধ্রে রন্ধ্রে মেশানো। দাড়ি-টুপিওয়ালাদের নিতান্তই দয়ার চোখে দেখাই যেন এ দেশে ধর্মপ্রাণ মুসলমানের একমাত্র নিয়তি। এসব চিন্তার দর্শনকে পতিত স্বৈরাচার তো অনন্য মাত্রাই দিয়েছিল সর্বস্তরের আলিম, ওলামা, সাধারণ মাদ্রাসাছাত্র, দ্বীন মেনে চলা মানুষজনকে অত্যাচার, নির্যাতন, হেনস্তা, গুম, খুন আর অপহরণের মাধ্যমে। আয়নাঘরের দেয়ালগুলো সাক্ষী—আল্লাহর দ্বীনের কথা বলার অপরাধে কত নিরপরাধ মানুষ সেখানে ধুঁকে ধুঁকে জীবন পার করেছেন। কেউ কেউ চলে গেছেন আল্লাহর কাছে।
অভ্যুত্থান-পরবর্তী রাজনীতিতে আসুক যুগান্তকারী সব পরিবর্তন। অন্যায় আর অরাজকতার পুনরাবৃত্তি না ঘটুক নতুন ভোরের এই বাংলাদেশে। এ দেশের সিংহভাগ মানুষের বিশ্বাস, সংস্কৃতি, মূল্যবোধ আর চিন্তার যথাযথ মূল্যায়ন হোক, এই নতুন দেশ নির্মাণে তারা হয়ে উঠুক সামনের সারির সারথি—দেশের দায়িত্বপ্রাপ্তদের কাছে এটাই প্রত্যাশা।
অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের যে আগুন জ্বালিয়েছিলেন বুয়েটের শহীদ আবরার ফাহাদ, সে আগুন আজ দাবানল হয়ে ভস্ম করে দিচ্ছে সব বৈষম্য, জুলুম ও অবিচার। ৫৬ হাজার বর্গমাইলের প্রতি ইঞ্চি মাটিতে সৃষ্টি করেছে তারুণ্যের গণজোয়ার। তৈরি করেছে হাজারো আবু সাঈদ, মুগ্ধ। দ্রোহে-ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন লাখো তরুণ-তরুণী। দীপ্ত কণ্ঠে তারা শপথ নিচ্ছেন। অন্যায়ের সঙ্গে আপস নয়। ইনসাফ, সুশাসন ও জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্রব্যবস্থা চান তারা। বিষয়টি বেশ আশাজাগানিয়া। আবরার থেকে আবু সাঈদ—ওরাই বাংলাদেশ। ওদের হাতেই নিরাপদ এ দেশের লাল-সবুজের পতাকা।
আজ থেকে ঠিক ৫০ বছর পরের কোনো এক স্কুলফেরা দুপুর। সদ্য কৈশোরে পা রাখা আপনার নাতি অথবা নাতনিটা দৌড়ে ছুটে এলো আপনার কাছে। মায়া-মাখানো আহ্লাদি কণ্ঠে সে বলল, ‘দাদু জানো, আজ স্কুলে স্যার আমাদের জুলাই বিপ্লবের গল্প শুনিয়েছেন। সে কী ভয়ানক এক যুদ্ধের কাহিনি! শুনে তো আমার ভীষণ ভয় লেগেছিল! দাদু, আমি শুনেছি, তুমিও নাকি সেই জুলাই বিপ্লবের যোদ্ধা। সেই রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে, মিছিলের সামনে দাঁড়িয়ে আকাশ-বাতাস কাঁপিয়ে স্লোগান তুলেছিলে তুমি। তুমি কেন চোখে কালো চশমা পরো, তা কিন্তু আমি জেনেছি। আম্মু বলেছে, যুদ্ধের ময়দানে পুলিশের ঘাতক বুলেট শাঁ করে এসে লেগেছিল তোমার গায়ে। মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তুমি। ফিনকি দিয়ে বেরিয়ে গেল তাজা রক্ত। তোমার বাঁ চোখটা সেই যে বুজেছিল, আর কোনো দিন সেটা খোলেনি। আচ্ছা দাদু, কীসের নেশা তোমাদের উন্মত্ত করেছিল সেদিন? কীসের প্রেরণা তোমাদের সাহস জুগিয়েছিল ঘাতকের বুলেটের সামনে দাঁড়ানোর? আমায় বলবে সেই দিনগুলোর কথা? কেন তোমার মতো লাখো মানুষ ডরভয়হীন হয়ে নেমে এসেছিলেন যুদ্ধের ময়দানে? আমাকে শোনাবে আবু সাঈদের কথা? মুগ্ধ, ওয়াসিম, প্রিয় আর ছোট্ট রিয়া গোপ—কত কত গল্প জমা তোমার ঝাঁপিতে। বলবে দাদু, সেসব গল্প?’
আপনার চোখ দুটো ভারী হয়ে এলো। বুকের কোন সে অতল থেকে যেন স্মৃতিরা এসে ভর করছে মস্তিষ্কের অন্দরে। নাকে যেন এসে লাগল সেই উত্তপ্ত জুলাই মাসের বারুদের গন্ধ। বয়সের ভারে ন্যুব্জ হয়ে আসা শরীরে যেন হঠাৎ দোল খেয়ে গেল দ্রোহের বাতাস। চোখে যেন জমাট আগুন। ফের কিশোর বা কিশোরীর ডাকে সংবিৎ ফিরে পাবেন আপনি, ‘দাদু, এই দাদু। তুমি শুনছো?’
জানালা দিয়ে বাইরে তাকালেন আপনি। পশ্চিমের খেজুরগাছের ডালে ডালে দুপুরের রোদ খেলা করছে। এখানে-ওখানে ছোটাছুটি করছে কয়েকটি চড়ুই। সেদিকে তাকিয়ে আপনি অস্ফুটে বললেন, ‘একটা মারি। একটাই যায়। বাকিডি যায় না, স্যার।’
সত্যিই তো। সেদিন তো কারও তাড়া ছিল না ঘরে ফেরার। মুক্তির মহোৎসবে যোগ দিতে সেদিন যেন প্রাণে প্রাণে পড়েছিল সাড়া। যদি তা না-ই হবে, কেন ঘাতক পুলিশ বলতে বাধ্য হয়েছিল—‘একটা মারি। একটাই যায়। বাকিডি যায় না।’ কেন বাকিরা ফিরত না ঘরে? কোন সে মহাকর্ষীয় টান, যা তাদের আটকে রেখেছিল বিপদমুখর রাজপথে?
কী নিদারুণ বর্বরতায়, কী অমানবিক পৈশাচিকতায় মেতে উঠেছিল খুনে বাহিনীর দল! নিরস্ত্র জনতাকে লক্ষ করে করে ছোড়া হয়েছিল প্রাণঘাতী বুলেট। রাস্তায় লাশের স্তূপ। বিদ্রোহী জনতা কখনো দখল নেয় রাজপথের, কখনো-বা খেই হারায়। তারা ক্লান্ত হয়, অবসাদ ঘিরে ধরে তাদের শরীর। কিন্তু তারা হাল ছাড়েন না। এক রাজপথ ছেড়ে বেছে নেন অন্য রাজপথ। এক মোড় ছেড়ে অন্য মোড়। আজান হলে পাশের মসজিদে ঢুকে পড়া, কিংবা রাস্তায় দাঁড়িয়ে যাওয়া সারিবদ্ধভাবে।
জালিম কি পরোয়া করে পরকালের? তার কি ভয় থাকে আল্লাহর আজাবের? যদি থাকত, ইয়ামিন মোল্লা নামের ছেলেটাকে, জোহরের নামাজ আদায় করে ফিরছিল সে। জানা যায়, সেদিন সে রেখেছিল নফল রোজাও। কত নৃশংসভাবে তাকে হত্যা করেছিল তারা! ইন্টারনেট-জুড়ে ছড়িয়ে পড়া দৃশ্যে, যখন তাকে ছুড়ে ফেলা হয় সাঁজোয়া যান থেকে, তখনো তো প্রাণ ছিল তার দেহে। তখনো নড়ছিল শরীরটা। ইয়ামিনের কি মনে পড়েছিল মায়ের মুখ? অস্ফুটে সে কি ডাকছিল বাবাকে? অথবা তার কি মনে পড়েছিল ছোট্ট বোনটাকে দিয়ে আসার কথা?
কী যে দুঃসহ ছিল সেই দৃশ্য! এই করুণ দৃশ্য দেখে গলে যাবে পাথরকঠিন হৃদয়ও। কিন্তু মায়া হলো না জালিমের দোসরদের। তারা কী অবলীলায় ছুড়ে ফেলেছিল তার দেহটাকে, যেন সেটা কোনো ময়লার ভাগাড়ে!
লাখ লাখ মানুষ সেদিন ঘরে ফেরেননি, কারণ শহীদ ইয়ামিনদের প্রতি হওয়া জুলুমের বদলা নিতে তারা ইস্পাতদৃঢ় শপথে বলীয়ান হয়েছিলেন। আবু সাঈদ আর মুগ্ধরা তাদের ঘরে ফিরতে দেননি।
সে এক অভূতপূর্ব সম্মিলন সবখানে! এমন দারুণ মৈত্রী, এমন ইস্পাতকঠিন ঐক্য এই জাতি আর দেখেছিল কবে? চেনা নেই, জানা নেই। কিন্তু প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রটিকে বাঁচাতে গুলির সামনে বুক পেতে দিচ্ছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। জাহাঙ্গীরনগরকে বাঁচাতে দৌড়ে যাচ্ছে ঢাবি। ঢাবির তালা ভাঙতে ছুটে আসছে জগন্নাথ। কী সুন্দর! কী প্রাণচাঞ্চল্যকর!
শুধু তো ছাত্রছাত্রীই নন, রাস্তার হকার থেকে রিকশাওয়ালা, বাদাম বিক্রেতা থেকে চা-ওয়ালা, ব্যাংকার থেকে ব্যবসায়ী, কিশোর-যুবা-বৃদ্ধ—ফাগুনের সেই আগুনদিনে সবাই যেন হয়ে উঠেছিলেন এক দেহ এক প্রাণ। সব মিলেমিশে একাকার হয়ে দ্রোহের তপ্ত লাভা যেন শতসহস্রগুণ হয়ে ছড়িয়ে পড়ল দেশময়। প্রবাসে থেকেও দেশপ্রেমিক বাংলাদেশিরা সাধ্যমতো সমর্থন জোগাচ্ছিলেন এই গণআন্দোলনে। উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠায় কাটাচ্ছিলেন একেকটি রাত।
সেই বিপ্লবে প্রাণ জুগিয়েছিল সাহসী সব স্লোগান। ‘তুমি কে আমি কে—রাজাকার রাজাকার; আপস না সংগ্রাম—সংগ্রাম সংগ্রাম’ এ ধরনের কত বৈচিত্র্যময় স্লোগানে মুখর ছিল দ্রোহের জুলাই। সেই রক্তমাখা সময় পঞ্জিকায় ও কণ্ঠে-কণ্ঠে ধ্বনিত হয়েছিল ‘আল্লাহু আকবার’ তাকবিরধ্বনিও।
হয়তো আমরা শতধা দলে বিভক্ত, দলে-উপদলে ছড়ানো-ছিটানো। কিন্তু এই তল্লাটে আমাদের আদি ও প্রকৃত পরিচয়—আমরা মুসলমান। শাহজালালের স্মৃতিধন্য এই উর্বর ভূমিতে মুসলমান পরিচয়টাই আমাদের সবচেয়ে বড় সাইনবোর্ড। জুলাইয়ের জালিম-খেদাও আন্দোলনেও আমাদের একত্র করেছিল এই মুসলিম ভ্রাতৃত্ববোধ। মুসলমান তো মুসলমানের ভাই। তার ভাই যখন আক্রান্ত হচ্ছেন, গুলি খাচ্ছেন, চোখ হারাচ্ছেন, খুন হচ্ছেন—তখন অন্য ভাই কীভাবে ঘরে বসে থাকতে পারেন?
মুগ্ধের ‘পানি লাগবে কারও? পানি? পানি?’ কথাগুলো শুনে ইয়ারমুকের যুদ্ধের কথা মনে পড়ে যায়। আহত তৃষ্ণার্ত সাহাবারা নিজে পানি না পান করে অন্য আহত সাহাবাদের পানি পৌঁছে দিতে বলছিলেন। অবশেষে সবাই তৃষ্ণাকাতর অবস্থায় শাহাদাতের অমিয় সুধা পান করেন।
বিপ্লবের সেই অগ্নিঝরা দিনগুলোয় আমাদের শব্দচয়নেও লেগেছিল মুসলমানিত্বের আলোকচ্ছটা। আমরা অত্যাচার বলিনি; বলেছি, ‘জুলুম।’ নিপীড়ক বলিনি; বলেছি, ‘জালিম।’ অত্যাচারিত বলিনি; বলেছি, ‘মজলুম।’ কোরআন থেকে উঠে আসা শব্দগুলো জুলাই বিপ্লবীদের কণ্ঠস্বরে যেন দিয়েছিল সাহসের ফোয়ারা। কেনই-বা দেবে না, কোরআন তো বরাবর মজলুমের পক্ষেই আওয়াজ তুলেছে—
তোমাদের কী হলো! তোমরা আল্লাহর রাস্তায় সেসব অসহায় নারী-পুরুষ-শিশুদের জন্য লড়াই করছ, যারা বলছে, ‘আমাদের রব, তুমি আমাদের এ জনপদ থেকে বের করে নাও। এই লোকরা জালিম।’ (সুরা নিসা : ৭৫)।
এই দ্রোহদিনে সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত শব্দটিও কোরআন থেকে ধার করা। জুলাই বিপ্লবের সবচেয়ে ভারী ও মর্যাদাপূর্ণ শব্দ সেটি। শব্দটি হলো—শহীদ। এই সহজ শব্দটি একজন সাধারণ মানুষকে দান করেছিল অনন্যতা। এই শব্দের ভারত্বে সাধারণ দিনমজুর হয়ে উঠেছিল আন্দোলনের বিমূর্ত প্রতীক।
‘শহীদ’ শুধুই একটি শব্দ কিংবা মৃত্যুর ধারণা নয়; এটি একটি মর্যাদা। আল্লাহর কাছে সবচেয়ে উঁচু মর্যাদাগুলোর মধ্যে অন্যতম। ফলে শহীদ বা শহীদের ধারণাটি আন্দোলনকারীদের জন্য হয়ে উঠেছিল এক শক্তিশালী প্রেরণা। যারাই সংগ্রামে প্রাণ হারিয়েছেন, তারাই হয়ে উঠেছেন প্রতিরোধের প্রতীক। তাদের আত্মত্যাগ অসংখ্য মানুষকে এই আন্দোলনে যোগ দিতে অনুপ্রাণিত করেছিল। তাদের কল্যাণেই ছাত্রসমাজের একটি আন্দোলন ছাত্র-জনতার আন্দোলন হয়ে দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে।
মৃত্যুর ভয় মানুষের আদিমতম আতঙ্ক। আর সেই আতঙ্ককে পুঁজি করে জালিম শাসকরা তাদের জুলুম চালিয়ে যায় যুগের পর যুগ। তবে যারা পরকালে বিশ্বাসী, আল্লাহর বিচার আর জান্নাত লাভের তামান্না যাদের হৃদয়পটে, তাদের কাছে মৃত্যু জীবনেরই একটা পর্যায় শুধু—আর কিছু নয়। মুসলমানরা মরতে ভয় করে না, কারণ তারা জানে তাদের জন্য অপেক্ষা করে আছে আরও একটা অনন্ত জীবন। সেই অনন্ত জীবনে বিশ্বাসী লাখো মুসলিম জুলাই দ্রোহের সময় মৃত্যুভয়কে জয় করে নেমে এসেছিলেন রাজপথে।
আন্দোলন নিয়ে অনেক সাহিত্য রচিত হচ্ছে। সংস্কৃতিকর্মীরা দিনরাত খেটে তৈরি করছেন জুলাই বিপ্লবের অনেক স্মৃতিগল্প। গান বাঁধা হচ্ছে, নাটিকা তৈরি করা হচ্ছে ইত্যাদি ইত্যাদি। যে যার মতো জুলাইয়ের স্মৃতি সংরক্ষণে কাজ করে যাচ্ছেন। কিন্তু কেন এবং কীভাবে হলো জানি না, একটা বিষয় যেন পুরোদমে আলোচনার বাইরে চলে গেল। কোনো সংস্কৃতিকর্মী, কোনো সুশীল প্রতিনিধি, কোনো বুদ্ধিজীবী, কোনো প্রগতিশীল বোদ্ধামহল অথবা রাষ্ট্রপক্ষের প্রতিনিধিত্বকারী কোনো ব্যক্তিদের দেখলাম না—জুলাই বিপ্লবে আলাদাভাবে ‘মুসলমান সম্প্রদায়ের অবদান’ শীর্ষক কোনো আলোচনা, টকশো, সিরিজ প্রোগ্রাম বা গল্প-সাহিত্য লিখতে।
হ্যাঁ, এই আন্দোলন যারা সফল করেছেন, যারা শহীদ হয়েছেন, যারা আহত হয়েছেন, তাদের সবার একটা পরিচয়—তারা বাংলাদেশি। আবার এটাও কি সত্য নয়, তাদের অধিকাংশের আরও একটা পরিচয় হলো— তারা বাংলাদেশি মুসলিম? ইসলামের প্রেরণাদায়ী অনুষঙ্গগুলো, জুলুম আর জালিমের পার্থক্যরেখাটা, শহীদ আর গাজীর মর্যাদাপূর্ণ অবস্থান—এসব কি এই আন্দোলনে মানুষকে দলে দলে নেমে আসার পেছনে মুখ্য ভূমিকা পালন করেনি? তাহলে জুলাইয়ের সব আলাপ-আলোচনা থেকে, গোলটেবিল বৈঠক থেকে, গল্প-কবিতা থেকে কেন ‘মুসলমান’ পরিচয়টা হারিয়ে যাবে?
আমরা সবাই দেশটার আমূল সংস্কারপ্রত্যাশী। এ দেশ আর এ ভূমি শাহজালালের পুণ্যভূমি হলেও স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরেও এখানে মুসলমানরা বাস করেন তৃতীয় শ্রেণির নাগরিকের মতো। আলিম আর ওলামাদের প্রতি বৈরিতা তো এ দেশের রাজনীতির রন্ধ্রে রন্ধ্রে মেশানো। দাড়ি-টুপিওয়ালাদের নিতান্তই দয়ার চোখে দেখাই যেন এ দেশে ধর্মপ্রাণ মুসলমানের একমাত্র নিয়তি। এসব চিন্তার দর্শনকে পতিত স্বৈরাচার তো অনন্য মাত্রাই দিয়েছিল সর্বস্তরের আলিম, ওলামা, সাধারণ মাদ্রাসাছাত্র, দ্বীন মেনে চলা মানুষজনকে অত্যাচার, নির্যাতন, হেনস্তা, গুম, খুন আর অপহরণের মাধ্যমে। আয়নাঘরের দেয়ালগুলো সাক্ষী—আল্লাহর দ্বীনের কথা বলার অপরাধে কত নিরপরাধ মানুষ সেখানে ধুঁকে ধুঁকে জীবন পার করেছেন। কেউ কেউ চলে গেছেন আল্লাহর কাছে।
অভ্যুত্থান-পরবর্তী রাজনীতিতে আসুক যুগান্তকারী সব পরিবর্তন। অন্যায় আর অরাজকতার পুনরাবৃত্তি না ঘটুক নতুন ভোরের এই বাংলাদেশে। এ দেশের সিংহভাগ মানুষের বিশ্বাস, সংস্কৃতি, মূল্যবোধ আর চিন্তার যথাযথ মূল্যায়ন হোক, এই নতুন দেশ নির্মাণে তারা হয়ে উঠুক সামনের সারির সারথি—দেশের দায়িত্বপ্রাপ্তদের কাছে এটাই প্রত্যাশা।
অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের যে আগুন জ্বালিয়েছিলেন বুয়েটের শহীদ আবরার ফাহাদ, সে আগুন আজ দাবানল হয়ে ভস্ম করে দিচ্ছে সব বৈষম্য, জুলুম ও অবিচার। ৫৬ হাজার বর্গমাইলের প্রতি ইঞ্চি মাটিতে সৃষ্টি করেছে তারুণ্যের গণজোয়ার। তৈরি করেছে হাজারো আবু সাঈদ, মুগ্ধ। দ্রোহে-ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন লাখো তরুণ-তরুণী। দীপ্ত কণ্ঠে তারা শপথ নিচ্ছেন। অন্যায়ের সঙ্গে আপস নয়। ইনসাফ, সুশাসন ও জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্রব্যবস্থা চান তারা। বিষয়টি বেশ আশাজাগানিয়া। আবরার থেকে আবু সাঈদ—ওরাই বাংলাদেশ। ওদের হাতেই নিরাপদ এ দেশের লাল-সবুজের পতাকা।
শেখ হাসিনা নিজেই বলেছেন, তিনি ভারতের জন্য যা করেছেন, ভারত তা চিরদিন মনে রাখবে। ফলে এই গুরুত্বপূর্ণ সম্পদকে ভারত শুধু আশ্রয় দিয়ে বসে থাকবে না, তাকে সামনে রেখে বাংলাদেশে অস্থিরতা সৃষ্টির নানা চেষ্টা করে যাবে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো যখন আওয়ামী লীগকে রাজনীতিতে পুনর্বাসনের দাবি তোলে, তখন সাধারণ মানুষ
৬ ঘণ্টা আগেবিশ্বের নানা অঞ্চলে প্রভাবশালী ও তুলনামূলকভাবে বৃহৎ রাষ্ট্র রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ আফ্রিকায় দক্ষিণ আফ্রিকা, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ইন্দোনেশিয়া, ইউরোপে জার্মানি ও ফ্রান্স এবং দক্ষিণ আমেরিকায় ব্রাজিলের উল্লেখ করা যেতে পারে।
৯ ঘণ্টা আগেপূর্ব গগনে সূর্য উঠেছে, রক্ত লাল রক্ত লাল। আমার দেশ-এর পুনঃপ্রকাশনা সেই রক্ত লালের সংগ্রামেরই একটা অংশ। আমাদের মতো লোকেরা আমার দেশ-এর মতো পত্রিকার প্রকাশনাকে স্বাগত জানাই। আল্লাহপাক মজলুমের পক্ষে।
১ দিন আগেচেয়ার টেনে বসতে বসতে আমাদের বললেন, প্রেসিডেন্ট (জিয়াউর রহমান) আজ আমাকে বলেছেন, কি খান সাহেব, হাসিনা আসছে বলে কি ভয় পাচ্ছেন? এটা শুনে আমরা কিছুটা অবাকই হলাম। মনে হলো তাহলে কি প্রেসিডেন্ট নিজেই ভয় পাচ্ছেন!
১ দিন আগে