বদরুদ্দীন উমর
কয়েক দিন আগে সিরিয়ার শাসক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ সেখানে বিদ্রোহীদের আক্রমণের মুখে দেশ ছেড়ে পালিয়ে রাশিয়ায় আশ্রয় নিয়েছেন। তিনি পলায়ন করলেও তার মন্ত্রিসভা ও দলের লোকরা কেউ দেশ ছেড়ে পালাননি, কেউ বিদ্রোহীদের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য বাড়িঘর ছেড়ে আত্মগোপন করেননি। উপরন্তু বিদ্রোহীরা আসাদের মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এদিক দিয়ে বাংলাদেশে জুলাইয়ের অভ্যুত্থানের বড় রকম পার্থক্য। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে পলায়ন করার সঙ্গে সঙ্গে তার মন্ত্রিসভা ও দলের লোকরা নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। শুধু তাই নয়, ঢাকা থেকে শুরু করে বিভিন্ন জেলায় এমনকি ইউনিয়ন পর্যায়ের আওয়ামী লীগ নেতারাও- সেই সঙ্গে তাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত আমলা ও পুলিশের লোকরা পর্যন্ত হাজারে হাজারে বাড়িঘর ছেড়ে আত্মগোপন করেছেন। তাদের মধ্যে অনেকে ভারতে পালিয়েছেন। কেউ কেউ পুলিশের হাতে ধরা পড়েছেন। অধিকাংশ লোক এখনো বাংলাদেশেই পালিয়ে আছেন।
সিরিয়ার বাশার আল-আসাদের পিতা হাফিজ আল-আসাদ ও বাশার ৫০ বছর সে দেশে নির্মমভাবে জনগণের ওপর শোষণ-নির্যাতন করেছিলেন। জনগণের বাকস্বাধীনতা বলে কিছু ছিল না। সেই পরিস্থিতিতে জনগণ ব্যাপকভাবে তাদের বিরুদ্ধে চলে গিয়েছিল। কিন্তু তাদের উৎখাতের কোনো ক্ষমতা জনগণের ছিল না। কোনো শক্তিশালী বিরোধী দল ছিল না। সেই অবস্থায় বাশারকে উৎখাতের জন্য সিরিয়ায় একাধিক বিদ্রোহী গ্রুপ সশস্ত্রভাবে সংগঠিত হতে থাকে, সরকারের বিরুদ্ধে কয়েক বছর ধরে লড়াই চালিয়ে অবশেষে তারা রাজধানী দামেস্ক পৌঁছায়। তার ঠিক আগেই বাশার দেশ ছেড়ে পলায়ন করেন। কিন্তু ৫০ বছর সিরিয়ায় তাদের ফ্যাসিস্ট শাসন কায়েম থাকলেও বাশারের লোকজন প্রকাশ্যে দেশেই আছেন। কিন্তু বাংলাদেশে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ১৫ বছর শাসন ক্ষমতায় থাকার পর উৎখাত হলে শুধু শেখ হাসিনা নয়, তার সঙ্গে সম্পর্কিত লোকজন জনগণের আক্রমণের ভয়ে হাজারে হাজারে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছেন। সিরিয়ায় ৫০ বছরের ফ্যাসিস্ট শাসন থেকেও বাংলাদেশে শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট শাসন আরও কত ভয়ংকর ছিল, তারই হিসাব এর মধ্যে পাওয়া যায়।
ঢাকা শহর থেকে শুরু করে বাংলাদেশের গ্রাম-গ্রামান্তর পর্যন্ত শেখ হাসিনার শোষণ-নির্যাতন ১৫ বছরের ওপর জারি থেকেছে। স্টিম রোলার চালিয়ে তারা জনগণের জীবন নিষ্পেষিত করেছিল। তাদের অক্টোপাসের থাবায় আটকে পড়ে জনগণের জীবন অতিষ্ঠ হয়েছিল। আওয়ামী লীগের লোকরা অবাধে শোষণ-নির্যাতন-লুণ্ঠন চালিয়ে গেলেও তাদের কোনো শাস্তির ব্যবস্থা ছিল না। উপরন্তু সরকারের ছত্রছায়ায় থেকে তারা নিরাপদে তাদের ক্রিমিনাল কর্মকাণ্ড চালিয়ে গিয়েছিল।
২০০৯ সালে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে শেখ হাসিনা দেশে এক লুণ্ঠনের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন। সে এবং তার দলের দুর্বৃত্তরা কোনো ধরনের আইনকানুনের তোয়াক্কা না করে এই লুণ্ঠন চালিয়ে যাওয়ার এক বছরের মাথায় শেখ হাসিনা উপলব্ধি করেন যে, জনগণের মধ্যে তাদের বিরুদ্ধে যে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে, তার ফলে নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় ফিরে আসা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। এ জন্য তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করে নিজেদের সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করে। ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালে কারচুপি ও দুর্নীতি করে তারা ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থাকে। বাস্তবত তারা বাংলাদেশে নির্বাচনব্যবস্থা উচ্ছেদই করে।
নিরঙ্কুশ ক্ষমতার অধিকারী থেকে শেখ হাসিনা তার দলের লোকদের অবাধ লুণ্ঠনের সুযোগ করে দেয়। এটা কার্যত তাদের সময়ে একধরনের শাসনরীতিতে পরিণত হয়। তারা ছোট-বড়-মাঝারি নানা প্রকল্প তৈরি করে ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত সর্বস্তরে দুর্নীতির এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করে, যা এ দেশের ইতিহাসে আগে কখনো দেখা যায়নি। উন্নয়নের কথা বলে শেখ হাসিনা বড় বড় প্রকল্প তৈরি করে। প্রকৃতপক্ষে এই প্রকল্পগুলো হয়ে দাঁড়িয়েছিল তাদের অবাধ চুরি-দুর্নীতির ক্ষেত্র। যত বড় প্রকল্প, তত বড় চুরি। পদ্মা সেতু, রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প, ঢাকার মেট্রোরেল, চট্টগ্রামে কর্ণফুলী টানেল থেকে নিয়ে অনেক বড় প্রকল্প শেখ হাসিনা তৈরি করে লাখ লাখ কোটি টাকা লুণ্ঠনের ব্যবস্থা করেন। এ ছাড়া ইউনিয়নপর্যায় পর্যন্ত শত শত নানা প্রকল্প তৈরি করে নিচের স্তরের আওয়ামী লীগারদের জন্যও চুরি-দুর্নীতির ব্যবস্থা করে। এর সঙ্গে শুরু হয় দেশ থেকে বিদেশে টাকা পাচার। এভাবে ১৫ বছরে তারা লাখ লাখ কোটি টাকা দেশের বাইরে চালান দেয়। এর ফলে দেশের অর্থনীতি বড় আকারে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এসবের বিরুদ্ধে জনগণের কণ্ঠরোধ করার জন্য তারা সারা দেশে নির্যাতন চালায়। এসবের কোনো বিস্তারিত বিবরণ দেওয়ার প্রয়োজন এখানে নেই।
এই নির্মম নির্যাতনের বিরুদ্ধেই ঘটে জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান এবং ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতন। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে জনগণের ক্ষোভ ও বিরোধিতার কোনো বহিঃপ্রকাশ ১৫ বছরে না ঘটলেও ছাত্রদের কোটা আন্দোলনের পরিস্থিতিতে জনগণও সে আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে তৈরি হয় বিশাল এক গণঅভ্যুত্থানের পরিস্থিতিতে। জুলাই মাসে এই অভ্যুত্থান শুরু হলে ৫ আগস্ট তা এক চূড়ান্ত পর্যায়ে দাঁড়ায় এবং শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে পলায়ন করেন, আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। সর্বস্তরের আওয়ামী লীগ নেতারা ঘরবাড়ি ছেড়ে পলায়ন করেন।
৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দিন থেকেই শুরু হয় তাদের বিরুদ্ধে জনগণের ব্যাপক আক্রমণ। এই আক্রমণের সময় জনগণ যে শুধু আওয়ামী লীগের লোকদের বাড়িঘরে আগুন দেয় তাই নয়, তারা শেখ মুজিবের শত শত মূর্তি দেশজুড়ে ভাঙচুর করে। তার বাড়িতে আগুন দেয়। শেখ মুজিবের বিরুদ্ধে জনগণের এই আক্রমণ দেখে অনেকেই বিস্মিত হন। এমনকি কিছু কিছু বামপন্থি লোকজন এবং নেতাও শেখ মুজিবের বিরুদ্ধে এই আক্রমণের কারণ বুঝে উঠতে না পেরে তার সমালোচনা করেন। কিন্তু আসলে শেখ মুজিবের বিরুদ্ধে এই বিক্ষোভ খুব স্বাভাবিক ও ন্যায়সংগত ছিল। তা ছাড়া এর জন্য শেখ হাসিনাই দায়ী ছিল। সে তার ১৫ বছরের দুঃশাসনের যৌক্তিকতা দেখানো এবং নিজের সব অপকর্ম আড়াল করার জন্য শেখ মুজিবের ভাবমূর্তিকে ব্যবহার করে। এ জন্য তারা শেখ মুজিবকে প্রায় দেবতার পর্যায়ে তুলে তার নামে দেশের প্রায় সব ধরনের স্থাপনার নামকরণ করে। নদী, ব্রিজ, হাসপাতাল, বিশ্ববিদ্যালয়, কনভেনশন সেন্টার, প্ল্যানেটোরিয়াম (Planetorium), সাফারি পার্ক, কর্ণফুলী টানেল থেকে নিয়ে সবকিছুর নাম শেখ মুজিবের নামে এমনভাবে রাখে, যাতে মনে হয় দেশে আর কোনো নেতা ছিল না। শুধু শেখ মুজিব নয়, শেখ হাসিনা ও তার মা, ভাই এবং অন্যান্য আত্মীয়স্বজনের নামে নানা স্থাপনা ও রাস্তার নামকরণ হয়। অর্থাৎ সবকিছুর সে পারিবারিকীকরণ করে। এটা ছিল এক অস্বাভাবিক ব্যাপার। এই অস্বাভাবিক ব্যাপারের জন্যই শেখ মুজিব ও তার সমগ্র পরিবার শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট শাসন এবং চুরি-দুর্নীতি ও লুণ্ঠনের সঙ্গে যুক্ত হয়। এভাবে যুক্ত হওয়ার কারণে শেখ মুজিবের সাড়ে ৩ বছরের ফ্যাসিস্ট শাসন এবং নানা দুষ্কৃতির বিষয় নতুন করে মানুষ স্মরণ করেন। এরই পরিণতিতে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগের সঙ্গে সঙ্গেই শুধু তার বিরুদ্ধেই নয়, শেখ মুজিবের বিরুদ্ধেও জনগণ ক্ষিপ্ত হয়ে তার শত শত মূর্তি ভেঙে ফেলে এবং বাড়িতে আগুন দেয়। জনগণের এই প্রতিক্রিয়া অস্বাভাবিক, অযৌক্তিক অথবা অন্যায় মনে করার কারণ নেই।
শেখ হাসিনা ৫ আগস্ট দেশ থেকে পলায়ন করে ভারতে আশ্রয় নিয়েছে। সে চেষ্টা করেছিল অন্য কোনো দেশে আশ্রয় নিতে। তার প্রথম পছন্দ ছিল ব্রিটেন অথবা আমেরিকা। কিন্তু আমেরিকা তার ভিসা নাকচ করে এবং ব্রিটেন স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, তারা শেখ হাসিনাকে সেখানে ঢুকতে দেবে না। শেখ হাসিনা তার ১৫ বছরের ফ্যাসিস্ট শাসন চালিয়ে শুধু যে দেশের জনগণের কাছে ঘৃণার পাত্রী হয়েছিল তা-ই নয়, সারা দুনিয়াই তাকে ঘৃণার চোখে দেখে। এ জন্য শুধু ব্রিটেন বা আমেরিকাই নয়, দুনিয়ার কোনো দেশই তাকে আশ্রয় দিতে অস্বীকার করে। শেষ পর্যন্ত উপায় না দেখে ভারত তাকে আশ্রয় দিতে বাধ্য হয়। শেখ হাসিনা নরেন্দ্র মোদির চাকরানি হিসেবে কাজ করে যেভাবে বাংলাদেশের স্বার্থ ভারতের কাছে বিকিয়ে দিয়েছিল, তাতে তাকে আশ্রয় দেওয়ার একটা নৈতিক দায়িত্ব ভারতের পক্ষে এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি।
কোনো প্রতিবেশী দেশের সঙ্গেই ভারতের ভালো সম্পর্ক নেই। একমাত্র বাংলাদেশই ছিল তার অনুগত এবং হুকুমবরদার। সেই বাংলাদেশ হঠাৎ হাতছাড়া হওয়ায় তাদের অবস্থা দাঁড়িয়েছে বিড়ালের সামনে থেকে মাছ নেওয়ার মতো। এটা সহ্য করার ও মেনে নেওয়া এখন পর্যন্ত ভারতের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। কাজেই তারা বর্তমান বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে শুধু চক্রান্ত নয়, প্রকাশ্যে শত্রুতা করে চলেছে। এ জন্য তারা বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর আক্রমণের এক ভুয়া ইস্যু তৈরি করে তাদের প্রচার মাধ্যমে মিথ্যার জোয়ার ভাসিয়ে এক অস্বাভাবিক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। এ কথা ঠিক যে, বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর আক্রমণের কিছু ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু লক্ষ করতে হবে যে, দুশমনদের ওপর আক্রমণ হয়েছে। এসব আক্রমণ জনগণ করছে না। করছে কিছু দুষ্কৃতকারী। যাদের কাছে সুশাসন বলে কিছু নেই। এই পরিস্থিতিতে হিন্দুদের ওপর আক্রমণকে সাম্প্রদায়িক চরিত্র প্রদানের চেষ্টা দূরভিসন্ধিমূলক ছাড়া অন্যকিছুই বলা চলে না। বাংলাদেশে হিন্দুদের সংখ্যা ৮%। কাজেই সাধারণভাবে দেশে দুষ্কৃতকারীরা লুটপাট ইত্যাদি করলে তার একটা অংশ এই দেশের অধিবাসী হিসেবে হিন্দুদেরও পেতে হবে। এ অবস্থায় বিরাটসংখ্যক মুসলমানের বিরুদ্ধে দুষ্কৃতকারীদের আক্রমণ হলেও তা মেনে অনেক কমসংখ্যক হিন্দুর ওপর আক্রমণ সাম্প্রদায়িক হবে কেন? জনগণের যেকোনো অংশের ওপর আক্রমণের বিরোধিতা অবশ্যই করা দরকার এবং সে বিরোধিতা করা দরকার সম্প্রদায় নিরপেক্ষভাবে। এটাই গণতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি, এটাই গণতান্ত্রিক আচরণ। কিন্তু ভারত সরকার এবং একই সঙ্গে ভারতের প্রচারণার দ্বারা বিভ্রান্ত কিছু লোক, যেকোনো হিন্দুর বিরুদ্ধে দুষ্কৃতকারীদের আক্রমণ, তাদের ঘরবাড়ি লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ইত্যাদিকে সাম্প্রদায়িক আখ্যা দিয়ে আকাশ-বাতাস উতলা করছে।
এই ক্ষেত্রে লক্ষণীয় ব্যাপার এই যে, শেখ হাসিনা ভারত সরকারের সঙ্গে নিজের চক্রান্তকে যুক্ত করে ভারত সরকারের দালাল হিসেবে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রচারণার আসর গরম করছে। এদিক দিয়ে হাসিনা শুধু একজন ফ্যাসিস্ট হিসেবেই নয়, দেশের প্রতি বিশ্বাসঘাতক বেইমান (traitor) হিসেবে তার ভূমিকা পালন করছে। কিন্তু এসব করে তার কিছু লাভ হবে না। ইতিহাসে তার নাম ফ্যাসিস্ট ও দেশদ্রোহী হিসেবে আবর্জনার স্তূপে নিক্ষিপ্ত হবে।
কয়েক দিন আগে সিরিয়ার শাসক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ সেখানে বিদ্রোহীদের আক্রমণের মুখে দেশ ছেড়ে পালিয়ে রাশিয়ায় আশ্রয় নিয়েছেন। তিনি পলায়ন করলেও তার মন্ত্রিসভা ও দলের লোকরা কেউ দেশ ছেড়ে পালাননি, কেউ বিদ্রোহীদের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য বাড়িঘর ছেড়ে আত্মগোপন করেননি। উপরন্তু বিদ্রোহীরা আসাদের মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এদিক দিয়ে বাংলাদেশে জুলাইয়ের অভ্যুত্থানের বড় রকম পার্থক্য। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে পলায়ন করার সঙ্গে সঙ্গে তার মন্ত্রিসভা ও দলের লোকরা নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। শুধু তাই নয়, ঢাকা থেকে শুরু করে বিভিন্ন জেলায় এমনকি ইউনিয়ন পর্যায়ের আওয়ামী লীগ নেতারাও- সেই সঙ্গে তাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত আমলা ও পুলিশের লোকরা পর্যন্ত হাজারে হাজারে বাড়িঘর ছেড়ে আত্মগোপন করেছেন। তাদের মধ্যে অনেকে ভারতে পালিয়েছেন। কেউ কেউ পুলিশের হাতে ধরা পড়েছেন। অধিকাংশ লোক এখনো বাংলাদেশেই পালিয়ে আছেন।
সিরিয়ার বাশার আল-আসাদের পিতা হাফিজ আল-আসাদ ও বাশার ৫০ বছর সে দেশে নির্মমভাবে জনগণের ওপর শোষণ-নির্যাতন করেছিলেন। জনগণের বাকস্বাধীনতা বলে কিছু ছিল না। সেই পরিস্থিতিতে জনগণ ব্যাপকভাবে তাদের বিরুদ্ধে চলে গিয়েছিল। কিন্তু তাদের উৎখাতের কোনো ক্ষমতা জনগণের ছিল না। কোনো শক্তিশালী বিরোধী দল ছিল না। সেই অবস্থায় বাশারকে উৎখাতের জন্য সিরিয়ায় একাধিক বিদ্রোহী গ্রুপ সশস্ত্রভাবে সংগঠিত হতে থাকে, সরকারের বিরুদ্ধে কয়েক বছর ধরে লড়াই চালিয়ে অবশেষে তারা রাজধানী দামেস্ক পৌঁছায়। তার ঠিক আগেই বাশার দেশ ছেড়ে পলায়ন করেন। কিন্তু ৫০ বছর সিরিয়ায় তাদের ফ্যাসিস্ট শাসন কায়েম থাকলেও বাশারের লোকজন প্রকাশ্যে দেশেই আছেন। কিন্তু বাংলাদেশে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ১৫ বছর শাসন ক্ষমতায় থাকার পর উৎখাত হলে শুধু শেখ হাসিনা নয়, তার সঙ্গে সম্পর্কিত লোকজন জনগণের আক্রমণের ভয়ে হাজারে হাজারে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছেন। সিরিয়ায় ৫০ বছরের ফ্যাসিস্ট শাসন থেকেও বাংলাদেশে শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট শাসন আরও কত ভয়ংকর ছিল, তারই হিসাব এর মধ্যে পাওয়া যায়।
ঢাকা শহর থেকে শুরু করে বাংলাদেশের গ্রাম-গ্রামান্তর পর্যন্ত শেখ হাসিনার শোষণ-নির্যাতন ১৫ বছরের ওপর জারি থেকেছে। স্টিম রোলার চালিয়ে তারা জনগণের জীবন নিষ্পেষিত করেছিল। তাদের অক্টোপাসের থাবায় আটকে পড়ে জনগণের জীবন অতিষ্ঠ হয়েছিল। আওয়ামী লীগের লোকরা অবাধে শোষণ-নির্যাতন-লুণ্ঠন চালিয়ে গেলেও তাদের কোনো শাস্তির ব্যবস্থা ছিল না। উপরন্তু সরকারের ছত্রছায়ায় থেকে তারা নিরাপদে তাদের ক্রিমিনাল কর্মকাণ্ড চালিয়ে গিয়েছিল।
২০০৯ সালে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে শেখ হাসিনা দেশে এক লুণ্ঠনের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন। সে এবং তার দলের দুর্বৃত্তরা কোনো ধরনের আইনকানুনের তোয়াক্কা না করে এই লুণ্ঠন চালিয়ে যাওয়ার এক বছরের মাথায় শেখ হাসিনা উপলব্ধি করেন যে, জনগণের মধ্যে তাদের বিরুদ্ধে যে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে, তার ফলে নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় ফিরে আসা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। এ জন্য তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করে নিজেদের সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করে। ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালে কারচুপি ও দুর্নীতি করে তারা ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থাকে। বাস্তবত তারা বাংলাদেশে নির্বাচনব্যবস্থা উচ্ছেদই করে।
নিরঙ্কুশ ক্ষমতার অধিকারী থেকে শেখ হাসিনা তার দলের লোকদের অবাধ লুণ্ঠনের সুযোগ করে দেয়। এটা কার্যত তাদের সময়ে একধরনের শাসনরীতিতে পরিণত হয়। তারা ছোট-বড়-মাঝারি নানা প্রকল্প তৈরি করে ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত সর্বস্তরে দুর্নীতির এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করে, যা এ দেশের ইতিহাসে আগে কখনো দেখা যায়নি। উন্নয়নের কথা বলে শেখ হাসিনা বড় বড় প্রকল্প তৈরি করে। প্রকৃতপক্ষে এই প্রকল্পগুলো হয়ে দাঁড়িয়েছিল তাদের অবাধ চুরি-দুর্নীতির ক্ষেত্র। যত বড় প্রকল্প, তত বড় চুরি। পদ্মা সেতু, রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প, ঢাকার মেট্রোরেল, চট্টগ্রামে কর্ণফুলী টানেল থেকে নিয়ে অনেক বড় প্রকল্প শেখ হাসিনা তৈরি করে লাখ লাখ কোটি টাকা লুণ্ঠনের ব্যবস্থা করেন। এ ছাড়া ইউনিয়নপর্যায় পর্যন্ত শত শত নানা প্রকল্প তৈরি করে নিচের স্তরের আওয়ামী লীগারদের জন্যও চুরি-দুর্নীতির ব্যবস্থা করে। এর সঙ্গে শুরু হয় দেশ থেকে বিদেশে টাকা পাচার। এভাবে ১৫ বছরে তারা লাখ লাখ কোটি টাকা দেশের বাইরে চালান দেয়। এর ফলে দেশের অর্থনীতি বড় আকারে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এসবের বিরুদ্ধে জনগণের কণ্ঠরোধ করার জন্য তারা সারা দেশে নির্যাতন চালায়। এসবের কোনো বিস্তারিত বিবরণ দেওয়ার প্রয়োজন এখানে নেই।
এই নির্মম নির্যাতনের বিরুদ্ধেই ঘটে জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান এবং ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতন। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে জনগণের ক্ষোভ ও বিরোধিতার কোনো বহিঃপ্রকাশ ১৫ বছরে না ঘটলেও ছাত্রদের কোটা আন্দোলনের পরিস্থিতিতে জনগণও সে আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে তৈরি হয় বিশাল এক গণঅভ্যুত্থানের পরিস্থিতিতে। জুলাই মাসে এই অভ্যুত্থান শুরু হলে ৫ আগস্ট তা এক চূড়ান্ত পর্যায়ে দাঁড়ায় এবং শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে পলায়ন করেন, আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। সর্বস্তরের আওয়ামী লীগ নেতারা ঘরবাড়ি ছেড়ে পলায়ন করেন।
৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দিন থেকেই শুরু হয় তাদের বিরুদ্ধে জনগণের ব্যাপক আক্রমণ। এই আক্রমণের সময় জনগণ যে শুধু আওয়ামী লীগের লোকদের বাড়িঘরে আগুন দেয় তাই নয়, তারা শেখ মুজিবের শত শত মূর্তি দেশজুড়ে ভাঙচুর করে। তার বাড়িতে আগুন দেয়। শেখ মুজিবের বিরুদ্ধে জনগণের এই আক্রমণ দেখে অনেকেই বিস্মিত হন। এমনকি কিছু কিছু বামপন্থি লোকজন এবং নেতাও শেখ মুজিবের বিরুদ্ধে এই আক্রমণের কারণ বুঝে উঠতে না পেরে তার সমালোচনা করেন। কিন্তু আসলে শেখ মুজিবের বিরুদ্ধে এই বিক্ষোভ খুব স্বাভাবিক ও ন্যায়সংগত ছিল। তা ছাড়া এর জন্য শেখ হাসিনাই দায়ী ছিল। সে তার ১৫ বছরের দুঃশাসনের যৌক্তিকতা দেখানো এবং নিজের সব অপকর্ম আড়াল করার জন্য শেখ মুজিবের ভাবমূর্তিকে ব্যবহার করে। এ জন্য তারা শেখ মুজিবকে প্রায় দেবতার পর্যায়ে তুলে তার নামে দেশের প্রায় সব ধরনের স্থাপনার নামকরণ করে। নদী, ব্রিজ, হাসপাতাল, বিশ্ববিদ্যালয়, কনভেনশন সেন্টার, প্ল্যানেটোরিয়াম (Planetorium), সাফারি পার্ক, কর্ণফুলী টানেল থেকে নিয়ে সবকিছুর নাম শেখ মুজিবের নামে এমনভাবে রাখে, যাতে মনে হয় দেশে আর কোনো নেতা ছিল না। শুধু শেখ মুজিব নয়, শেখ হাসিনা ও তার মা, ভাই এবং অন্যান্য আত্মীয়স্বজনের নামে নানা স্থাপনা ও রাস্তার নামকরণ হয়। অর্থাৎ সবকিছুর সে পারিবারিকীকরণ করে। এটা ছিল এক অস্বাভাবিক ব্যাপার। এই অস্বাভাবিক ব্যাপারের জন্যই শেখ মুজিব ও তার সমগ্র পরিবার শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট শাসন এবং চুরি-দুর্নীতি ও লুণ্ঠনের সঙ্গে যুক্ত হয়। এভাবে যুক্ত হওয়ার কারণে শেখ মুজিবের সাড়ে ৩ বছরের ফ্যাসিস্ট শাসন এবং নানা দুষ্কৃতির বিষয় নতুন করে মানুষ স্মরণ করেন। এরই পরিণতিতে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগের সঙ্গে সঙ্গেই শুধু তার বিরুদ্ধেই নয়, শেখ মুজিবের বিরুদ্ধেও জনগণ ক্ষিপ্ত হয়ে তার শত শত মূর্তি ভেঙে ফেলে এবং বাড়িতে আগুন দেয়। জনগণের এই প্রতিক্রিয়া অস্বাভাবিক, অযৌক্তিক অথবা অন্যায় মনে করার কারণ নেই।
শেখ হাসিনা ৫ আগস্ট দেশ থেকে পলায়ন করে ভারতে আশ্রয় নিয়েছে। সে চেষ্টা করেছিল অন্য কোনো দেশে আশ্রয় নিতে। তার প্রথম পছন্দ ছিল ব্রিটেন অথবা আমেরিকা। কিন্তু আমেরিকা তার ভিসা নাকচ করে এবং ব্রিটেন স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, তারা শেখ হাসিনাকে সেখানে ঢুকতে দেবে না। শেখ হাসিনা তার ১৫ বছরের ফ্যাসিস্ট শাসন চালিয়ে শুধু যে দেশের জনগণের কাছে ঘৃণার পাত্রী হয়েছিল তা-ই নয়, সারা দুনিয়াই তাকে ঘৃণার চোখে দেখে। এ জন্য শুধু ব্রিটেন বা আমেরিকাই নয়, দুনিয়ার কোনো দেশই তাকে আশ্রয় দিতে অস্বীকার করে। শেষ পর্যন্ত উপায় না দেখে ভারত তাকে আশ্রয় দিতে বাধ্য হয়। শেখ হাসিনা নরেন্দ্র মোদির চাকরানি হিসেবে কাজ করে যেভাবে বাংলাদেশের স্বার্থ ভারতের কাছে বিকিয়ে দিয়েছিল, তাতে তাকে আশ্রয় দেওয়ার একটা নৈতিক দায়িত্ব ভারতের পক্ষে এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি।
কোনো প্রতিবেশী দেশের সঙ্গেই ভারতের ভালো সম্পর্ক নেই। একমাত্র বাংলাদেশই ছিল তার অনুগত এবং হুকুমবরদার। সেই বাংলাদেশ হঠাৎ হাতছাড়া হওয়ায় তাদের অবস্থা দাঁড়িয়েছে বিড়ালের সামনে থেকে মাছ নেওয়ার মতো। এটা সহ্য করার ও মেনে নেওয়া এখন পর্যন্ত ভারতের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। কাজেই তারা বর্তমান বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে শুধু চক্রান্ত নয়, প্রকাশ্যে শত্রুতা করে চলেছে। এ জন্য তারা বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর আক্রমণের এক ভুয়া ইস্যু তৈরি করে তাদের প্রচার মাধ্যমে মিথ্যার জোয়ার ভাসিয়ে এক অস্বাভাবিক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। এ কথা ঠিক যে, বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর আক্রমণের কিছু ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু লক্ষ করতে হবে যে, দুশমনদের ওপর আক্রমণ হয়েছে। এসব আক্রমণ জনগণ করছে না। করছে কিছু দুষ্কৃতকারী। যাদের কাছে সুশাসন বলে কিছু নেই। এই পরিস্থিতিতে হিন্দুদের ওপর আক্রমণকে সাম্প্রদায়িক চরিত্র প্রদানের চেষ্টা দূরভিসন্ধিমূলক ছাড়া অন্যকিছুই বলা চলে না। বাংলাদেশে হিন্দুদের সংখ্যা ৮%। কাজেই সাধারণভাবে দেশে দুষ্কৃতকারীরা লুটপাট ইত্যাদি করলে তার একটা অংশ এই দেশের অধিবাসী হিসেবে হিন্দুদেরও পেতে হবে। এ অবস্থায় বিরাটসংখ্যক মুসলমানের বিরুদ্ধে দুষ্কৃতকারীদের আক্রমণ হলেও তা মেনে অনেক কমসংখ্যক হিন্দুর ওপর আক্রমণ সাম্প্রদায়িক হবে কেন? জনগণের যেকোনো অংশের ওপর আক্রমণের বিরোধিতা অবশ্যই করা দরকার এবং সে বিরোধিতা করা দরকার সম্প্রদায় নিরপেক্ষভাবে। এটাই গণতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি, এটাই গণতান্ত্রিক আচরণ। কিন্তু ভারত সরকার এবং একই সঙ্গে ভারতের প্রচারণার দ্বারা বিভ্রান্ত কিছু লোক, যেকোনো হিন্দুর বিরুদ্ধে দুষ্কৃতকারীদের আক্রমণ, তাদের ঘরবাড়ি লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ইত্যাদিকে সাম্প্রদায়িক আখ্যা দিয়ে আকাশ-বাতাস উতলা করছে।
এই ক্ষেত্রে লক্ষণীয় ব্যাপার এই যে, শেখ হাসিনা ভারত সরকারের সঙ্গে নিজের চক্রান্তকে যুক্ত করে ভারত সরকারের দালাল হিসেবে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রচারণার আসর গরম করছে। এদিক দিয়ে হাসিনা শুধু একজন ফ্যাসিস্ট হিসেবেই নয়, দেশের প্রতি বিশ্বাসঘাতক বেইমান (traitor) হিসেবে তার ভূমিকা পালন করছে। কিন্তু এসব করে তার কিছু লাভ হবে না। ইতিহাসে তার নাম ফ্যাসিস্ট ও দেশদ্রোহী হিসেবে আবর্জনার স্তূপে নিক্ষিপ্ত হবে।
শেখ হাসিনা নিজেই বলেছেন, তিনি ভারতের জন্য যা করেছেন, ভারত তা চিরদিন মনে রাখবে। ফলে এই গুরুত্বপূর্ণ সম্পদকে ভারত শুধু আশ্রয় দিয়ে বসে থাকবে না, তাকে সামনে রেখে বাংলাদেশে অস্থিরতা সৃষ্টির নানা চেষ্টা করে যাবে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো যখন আওয়ামী লীগকে রাজনীতিতে পুনর্বাসনের দাবি তোলে, তখন সাধারণ মানুষ
৬ ঘণ্টা আগেবিশ্বের নানা অঞ্চলে প্রভাবশালী ও তুলনামূলকভাবে বৃহৎ রাষ্ট্র রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ আফ্রিকায় দক্ষিণ আফ্রিকা, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ইন্দোনেশিয়া, ইউরোপে জার্মানি ও ফ্রান্স এবং দক্ষিণ আমেরিকায় ব্রাজিলের উল্লেখ করা যেতে পারে।
৯ ঘণ্টা আগেপূর্ব গগনে সূর্য উঠেছে, রক্ত লাল রক্ত লাল। আমার দেশ-এর পুনঃপ্রকাশনা সেই রক্ত লালের সংগ্রামেরই একটা অংশ। আমাদের মতো লোকেরা আমার দেশ-এর মতো পত্রিকার প্রকাশনাকে স্বাগত জানাই। আল্লাহপাক মজলুমের পক্ষে।
১ দিন আগেচেয়ার টেনে বসতে বসতে আমাদের বললেন, প্রেসিডেন্ট (জিয়াউর রহমান) আজ আমাকে বলেছেন, কি খান সাহেব, হাসিনা আসছে বলে কি ভয় পাচ্ছেন? এটা শুনে আমরা কিছুটা অবাকই হলাম। মনে হলো তাহলে কি প্রেসিডেন্ট নিজেই ভয় পাচ্ছেন!
১ দিন আগে