ইজতেমা মাঠে তাণ্ডব
রকীবুল হক
বিশ্ব ইজতেমাকে ঘিরে তাবলিগ জামাতের দুই গ্রুপের দ্বন্দ্ব-সংঘাতের জেরে চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে। সম্প্রতি টঙ্গীর ইজতেমা মাঠে হামলায় তাবলিগের তিন কর্মী নিহতের ঘটনায় এ অস্থিরতা আরও বেড়েছে। এ ঘটনায় এরই মধ্যে মাওলানা সাদপন্থিদের ২৯ জনের নামে হত্যা মামলা করেছে মাওলানা জুবায়েরপন্থিরা। গ্রেপ্তার হয়েছেন এক নেতা, বাকিরাও আছেন আতঙ্কে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ইজতেমা ময়দান ও আশপাশে তাবলিগকর্মীদের জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সরকার। একইসঙ্গে যে কোনো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে টঙ্গী ও কাকরাইল এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
এদিকে দেশে তাবলিগ জামাতের এই দ্বন্দ্বের পেছনে বিগত আওয়ামী সরকারের ধারাবাহিকতায় তাদের দোসরদের উসকানি রয়েছে বলে মনে করছেন বিভিন্ন ধর্মীয় দলের নেতা। সেই অশুভ শক্তিকে চিহ্নিত করে যথাযথ ব্যবস্থাগ্রহণ এবং সাদপন্থিদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে আগামীতে বিশ্ব ইজতেমা এক পর্বে আয়োজনের পরামর্শ দিয়েছেন তারা। একই দাবিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব মাওলানা সাজেদুর রহমান এক বিবৃতিতে বলেন, বিতর্কিত ভারতীয় আলেম মাওলানা সাদের অনুসারী দাবি করে তাবলিগে বিভাজনের ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে দ্বীনের মুখোশধারী একদল চিহ্নিত আওয়ামী দোসর। ফ্যাসিস্ট হাসিনার আমল থেকেই সাদপন্থিরা আওয়ামী লীগের তাঁবেদারি করে শুধু তাবলিগে বিভাজনই নয়, আলেম-ওলামার বিরুদ্ধেও বিদ্বেষমূলক প্রোপাগান্ডা চালিয়েছে। তারা বলেন, আমরা আশা করি ছাত্র-জনতার অন্তর্বর্তী সরকার এ দেশে সাদপন্থি সন্ত্রাসীদের সব ধরনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হবে এবং টঙ্গীর ময়দানে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সব দোষীকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করা হবে।
এ বিষয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ ইউনূছ আহমদ গতকাল শনিবার আমার দেশকে বলেন, মাওলানা সাদের বিতর্কিত বক্তব্য নিয়ে ভারতের দেওবন্দি আলেমরাই আপত্তি জানিয়েছেন। তারই প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশে। এ দেশের ওলামায়ে কেরাম বলছেন, সাদ যেন বাংলাদেশে না আসেন। কিন্তু এ দেশের সাদপন্থিরা বলছেন তাকে ছাড়া ইজতেমা হবে না। এ অবস্থায় সৃষ্ট দ্বন্দ্ব-সংঘাতে বহির্বিশ্বে দেশের ভাবমর্যাদা ক্ষুণ্ণ হচ্ছে।
তিনি বলেন, সাদপন্থিদের পেছনে অন্য মহলের উসকানি আছে কি না, তা গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মাধ্যমে তদন্ত করে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। এ দেশের অধিকাংশ আলেমই মাওলানা সাদকে মেনে নিতে পারছেন না। তাই ভারতসহ বহির্বিশ্বের আলেমদের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নিয়ে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে এর সমাধানের পরামর্শ দেন তিনি।
এ দেশে তাবলিগের এমন দ্বন্দ্ব ও সাদপন্থিদের পেছনে ভারত এবং আওয়ামী লীগ জড়িত বলে মন্তব্য করেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী। গতকাল শনিবার তিনি আমার দেশকে বলেন, পরাজিত ফ্যাসিবাদী শক্তি নানাভাবে ফিরে আসার চেষ্টা করতে পারে, অপতৎপরতা চালাতে পারে। তাদের সব পথ বন্ধ হওয়ায় এখন তাবলিগের সাদপন্থিদের ব্যবহারের পথ বেছে নিতে পারে।
তিনি বলেন, সাদপন্থিদের দায়িত্বশীলরা আওয়ামী লীগের সঙ্গে জড়িত। কখনো গণভবনে, কখনো মেয়র ভবনে তাদের দেখা গেছে। কোনো বড় অপশক্তির পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া এমন নৃশংস সহিংসতা ঘটতে পারে না। দেশের অধিকাংশ আলেম-ওলামা তাবলিগের শূরায়ে নেজামের অংশ তথা মাওলানা জুবায়েরের সঙ্গে আছে। এ অবস্থায় সাদপন্থিদের কার্যক্রম বন্ধ এবং একপর্বে ইজতেমার পক্ষে মত দেন তিনি।
এদিকে বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে তাবলিগ জামাত বাংলাদেশ (শূরায়ী নেজাম)-এর মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান বলেন, তাবলিগের মেহনত দ্বীনের অন্যতম একটি মেহনত এবং দ্বীনের ধারক-বাহক হচ্ছেন ওলামায়ে কেরাম। মাওলানা সাদ বারবার বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে দ্বীনের মেহনতকে প্রশ্নবিদ্ধ করবেন আর ওলামায়ে কেরাম বসে থাকবেন- এটা কখনোই হতে পারে না।
তিনি বলেন, তাবলিগের এ বিভাজন কেবল মাওলানা সাদই সমাধান করতে পারেন। তিনি যদি তার আমিরত্ব থেকে সরে আসেন, তার ভুল বয়ানের জন্য তওবা করেন এবং ভবিষ্যতে এরকম বয়ান আর করবেন না বলে অঙ্গীকার করেন, তাহলেই তাবলিগের এই বিভাজন এক মিনিটের মধ্যেই সমাধান হওয়া সম্ভব।
তাবলিগের মুরব্বি ভারতের মাওলানা সাদ কান্দলভীর একটি বক্তব্যকে কেন্দ্র করে ২০১৭ সালে বিশ্ব ইজতেমার আয়োজক তাবলিগ জামাতের নেতাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি হয়। এরপর থেকে বাংলাদেশে দুই গ্রুপ আলাদা হয়ে দুই পর্বে ইজতেমা আয়োজন করে আসছে এবং তাতে অংশ নিচ্ছে। দুই গ্রুপের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্য রূপ পায় ২০১৭ সালের নভেম্বরে, ঢাকায় তাবলিগের মূল কেন্দ্র কাকরাইলে দুদল কর্মীর মধ্যে হাতাহাতির মধ্য দিয়ে। পরের বছর কাকরাইল মসজিদের দখল নিয়ে সংঘর্ষ হয়েছিল দুই পক্ষের মধ্যে। ২০১৮ সালে তাবলিগের সাদবিরোধী অংশকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশসহ অধিকাংশ ইসলামি দল।
এদিকে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর এবারের বিশ্ব ইজতেমা ঘিরে তাবলিগের দুই গ্রুপের দ্বন্দ্ব ভিন্ন রূপ নেয়। দুই পক্ষের সঙ্গে আলোচনার প্রেক্ষিতে দুই পর্বে ইজতেমা আয়োজনের সিদ্ধান্ত দেওয়া হলেও গত মঙ্গলবার গভীর রাতে ইজতেমা মাঠে হামলা চালায় সাদপন্থিরা। এ হামলায় জুবায়েরপন্থিদের তিন কর্মী নিহত হন বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। এ ঘটনার পর সাদপন্থিদের নিষিদ্ধ এবং তাদের ইজতেমা কার্যক্রম বন্ধ ও প্রতিহত করার ঘোষণাসহ এক পর্বে ইজতেমা করার দাবি জানিয়েছেন জুবায়েরপন্থিরা। এছাড়া তিন কর্মী নিহতের ঘটনায় সাদপন্থি ২৯ জনের নামে মামলা করেছেন তারা। এরইমধ্যে মুয়াজ বিন নুর নামে একজন গ্রেপ্তারও হয়েছেন।
এদিকে এক পর্বে ইজতেমার দাবি এবং তাদের প্রতিহত করার ঘোষণা প্রসঙ্গে জানতে গতকাল সাদপন্থি তাবলিগের নেতা সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলামের মোবাইলে যোগাযোগ করলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। তবে ওই পক্ষের সাথী মুয়াজ বিন নুর গ্রেপ্তার হওয়ার আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে তিনি আমার দেশকে বলেন, সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দুই পর্বে ইজতেমা আয়োজন করা হবে। কেউ এ সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করলে তাদের বিরুদ্ধে সরকার পদক্ষেপ নেবে। ইজতেমার আগেই এ বিষয়ে সমাধান হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি ।
সতর্ক অবস্থানে পুলিশ : ইজতেমা মাঠে সংঘর্ষের ঘটনায় উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গতকাল শনিবারও টঙ্গীর পাশাপাশি কাকরাইল মসজিদ এলাকায় সতর্ক অবস্থানে ছিল পুলিশ। অতর্কিত হামলার আশঙ্কায় রয়েছেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কাকরাইল মসজিদে আসা তাবলিগ জামাতের মুসল্লিরা। বরাবরের মতো পুলিশের রায়টকারসহ বিপুলসংখ্যক পুলিশ কাকরাইল মসজিদের আশপাশে অবস্থান করছে। এছাড়া সাদা পোশাকে গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা গেছে।
টঙ্গীর ইজতেমা ময়দান এলাকায়ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য মোতায়েন রয়েছেন বলে জানা গেছে।
ডিএমপির মিডিয়া বিভাগের ডিসি তালেবুর রহমান আমার দেশকে জানান, আপাতত পুলিশ ফোর্স মোতায়েন থাকবে। সতর্ক আছে পুলিশ। পাশাপাশি উত্তরা ও তুরাগ সংলগ্ন আশপাশ এলাকায় পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত সব ধরনের সভা-সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে।
এদিকে কাকরাইল মসজিদ বর্তমানে জুবায়েরপন্থিদের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আছে বলে তাবলিগের মিডিয়া বিভাগের সাথী হাবিবুল্লাহ রায়হান গতকাল আমার দেশকে জানিয়েছেন।
বিশ্ব ইজতেমাকে ঘিরে তাবলিগ জামাতের দুই গ্রুপের দ্বন্দ্ব-সংঘাতের জেরে চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে। সম্প্রতি টঙ্গীর ইজতেমা মাঠে হামলায় তাবলিগের তিন কর্মী নিহতের ঘটনায় এ অস্থিরতা আরও বেড়েছে। এ ঘটনায় এরই মধ্যে মাওলানা সাদপন্থিদের ২৯ জনের নামে হত্যা মামলা করেছে মাওলানা জুবায়েরপন্থিরা। গ্রেপ্তার হয়েছেন এক নেতা, বাকিরাও আছেন আতঙ্কে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ইজতেমা ময়দান ও আশপাশে তাবলিগকর্মীদের জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সরকার। একইসঙ্গে যে কোনো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে টঙ্গী ও কাকরাইল এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
এদিকে দেশে তাবলিগ জামাতের এই দ্বন্দ্বের পেছনে বিগত আওয়ামী সরকারের ধারাবাহিকতায় তাদের দোসরদের উসকানি রয়েছে বলে মনে করছেন বিভিন্ন ধর্মীয় দলের নেতা। সেই অশুভ শক্তিকে চিহ্নিত করে যথাযথ ব্যবস্থাগ্রহণ এবং সাদপন্থিদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে আগামীতে বিশ্ব ইজতেমা এক পর্বে আয়োজনের পরামর্শ দিয়েছেন তারা। একই দাবিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব মাওলানা সাজেদুর রহমান এক বিবৃতিতে বলেন, বিতর্কিত ভারতীয় আলেম মাওলানা সাদের অনুসারী দাবি করে তাবলিগে বিভাজনের ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে দ্বীনের মুখোশধারী একদল চিহ্নিত আওয়ামী দোসর। ফ্যাসিস্ট হাসিনার আমল থেকেই সাদপন্থিরা আওয়ামী লীগের তাঁবেদারি করে শুধু তাবলিগে বিভাজনই নয়, আলেম-ওলামার বিরুদ্ধেও বিদ্বেষমূলক প্রোপাগান্ডা চালিয়েছে। তারা বলেন, আমরা আশা করি ছাত্র-জনতার অন্তর্বর্তী সরকার এ দেশে সাদপন্থি সন্ত্রাসীদের সব ধরনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হবে এবং টঙ্গীর ময়দানে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সব দোষীকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করা হবে।
এ বিষয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ ইউনূছ আহমদ গতকাল শনিবার আমার দেশকে বলেন, মাওলানা সাদের বিতর্কিত বক্তব্য নিয়ে ভারতের দেওবন্দি আলেমরাই আপত্তি জানিয়েছেন। তারই প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশে। এ দেশের ওলামায়ে কেরাম বলছেন, সাদ যেন বাংলাদেশে না আসেন। কিন্তু এ দেশের সাদপন্থিরা বলছেন তাকে ছাড়া ইজতেমা হবে না। এ অবস্থায় সৃষ্ট দ্বন্দ্ব-সংঘাতে বহির্বিশ্বে দেশের ভাবমর্যাদা ক্ষুণ্ণ হচ্ছে।
তিনি বলেন, সাদপন্থিদের পেছনে অন্য মহলের উসকানি আছে কি না, তা গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মাধ্যমে তদন্ত করে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। এ দেশের অধিকাংশ আলেমই মাওলানা সাদকে মেনে নিতে পারছেন না। তাই ভারতসহ বহির্বিশ্বের আলেমদের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নিয়ে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে এর সমাধানের পরামর্শ দেন তিনি।
এ দেশে তাবলিগের এমন দ্বন্দ্ব ও সাদপন্থিদের পেছনে ভারত এবং আওয়ামী লীগ জড়িত বলে মন্তব্য করেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী। গতকাল শনিবার তিনি আমার দেশকে বলেন, পরাজিত ফ্যাসিবাদী শক্তি নানাভাবে ফিরে আসার চেষ্টা করতে পারে, অপতৎপরতা চালাতে পারে। তাদের সব পথ বন্ধ হওয়ায় এখন তাবলিগের সাদপন্থিদের ব্যবহারের পথ বেছে নিতে পারে।
তিনি বলেন, সাদপন্থিদের দায়িত্বশীলরা আওয়ামী লীগের সঙ্গে জড়িত। কখনো গণভবনে, কখনো মেয়র ভবনে তাদের দেখা গেছে। কোনো বড় অপশক্তির পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া এমন নৃশংস সহিংসতা ঘটতে পারে না। দেশের অধিকাংশ আলেম-ওলামা তাবলিগের শূরায়ে নেজামের অংশ তথা মাওলানা জুবায়েরের সঙ্গে আছে। এ অবস্থায় সাদপন্থিদের কার্যক্রম বন্ধ এবং একপর্বে ইজতেমার পক্ষে মত দেন তিনি।
এদিকে বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে তাবলিগ জামাত বাংলাদেশ (শূরায়ী নেজাম)-এর মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান বলেন, তাবলিগের মেহনত দ্বীনের অন্যতম একটি মেহনত এবং দ্বীনের ধারক-বাহক হচ্ছেন ওলামায়ে কেরাম। মাওলানা সাদ বারবার বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে দ্বীনের মেহনতকে প্রশ্নবিদ্ধ করবেন আর ওলামায়ে কেরাম বসে থাকবেন- এটা কখনোই হতে পারে না।
তিনি বলেন, তাবলিগের এ বিভাজন কেবল মাওলানা সাদই সমাধান করতে পারেন। তিনি যদি তার আমিরত্ব থেকে সরে আসেন, তার ভুল বয়ানের জন্য তওবা করেন এবং ভবিষ্যতে এরকম বয়ান আর করবেন না বলে অঙ্গীকার করেন, তাহলেই তাবলিগের এই বিভাজন এক মিনিটের মধ্যেই সমাধান হওয়া সম্ভব।
তাবলিগের মুরব্বি ভারতের মাওলানা সাদ কান্দলভীর একটি বক্তব্যকে কেন্দ্র করে ২০১৭ সালে বিশ্ব ইজতেমার আয়োজক তাবলিগ জামাতের নেতাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি হয়। এরপর থেকে বাংলাদেশে দুই গ্রুপ আলাদা হয়ে দুই পর্বে ইজতেমা আয়োজন করে আসছে এবং তাতে অংশ নিচ্ছে। দুই গ্রুপের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্য রূপ পায় ২০১৭ সালের নভেম্বরে, ঢাকায় তাবলিগের মূল কেন্দ্র কাকরাইলে দুদল কর্মীর মধ্যে হাতাহাতির মধ্য দিয়ে। পরের বছর কাকরাইল মসজিদের দখল নিয়ে সংঘর্ষ হয়েছিল দুই পক্ষের মধ্যে। ২০১৮ সালে তাবলিগের সাদবিরোধী অংশকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশসহ অধিকাংশ ইসলামি দল।
এদিকে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর এবারের বিশ্ব ইজতেমা ঘিরে তাবলিগের দুই গ্রুপের দ্বন্দ্ব ভিন্ন রূপ নেয়। দুই পক্ষের সঙ্গে আলোচনার প্রেক্ষিতে দুই পর্বে ইজতেমা আয়োজনের সিদ্ধান্ত দেওয়া হলেও গত মঙ্গলবার গভীর রাতে ইজতেমা মাঠে হামলা চালায় সাদপন্থিরা। এ হামলায় জুবায়েরপন্থিদের তিন কর্মী নিহত হন বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। এ ঘটনার পর সাদপন্থিদের নিষিদ্ধ এবং তাদের ইজতেমা কার্যক্রম বন্ধ ও প্রতিহত করার ঘোষণাসহ এক পর্বে ইজতেমা করার দাবি জানিয়েছেন জুবায়েরপন্থিরা। এছাড়া তিন কর্মী নিহতের ঘটনায় সাদপন্থি ২৯ জনের নামে মামলা করেছেন তারা। এরইমধ্যে মুয়াজ বিন নুর নামে একজন গ্রেপ্তারও হয়েছেন।
এদিকে এক পর্বে ইজতেমার দাবি এবং তাদের প্রতিহত করার ঘোষণা প্রসঙ্গে জানতে গতকাল সাদপন্থি তাবলিগের নেতা সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলামের মোবাইলে যোগাযোগ করলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। তবে ওই পক্ষের সাথী মুয়াজ বিন নুর গ্রেপ্তার হওয়ার আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে তিনি আমার দেশকে বলেন, সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দুই পর্বে ইজতেমা আয়োজন করা হবে। কেউ এ সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করলে তাদের বিরুদ্ধে সরকার পদক্ষেপ নেবে। ইজতেমার আগেই এ বিষয়ে সমাধান হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি ।
সতর্ক অবস্থানে পুলিশ : ইজতেমা মাঠে সংঘর্ষের ঘটনায় উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গতকাল শনিবারও টঙ্গীর পাশাপাশি কাকরাইল মসজিদ এলাকায় সতর্ক অবস্থানে ছিল পুলিশ। অতর্কিত হামলার আশঙ্কায় রয়েছেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কাকরাইল মসজিদে আসা তাবলিগ জামাতের মুসল্লিরা। বরাবরের মতো পুলিশের রায়টকারসহ বিপুলসংখ্যক পুলিশ কাকরাইল মসজিদের আশপাশে অবস্থান করছে। এছাড়া সাদা পোশাকে গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা গেছে।
টঙ্গীর ইজতেমা ময়দান এলাকায়ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য মোতায়েন রয়েছেন বলে জানা গেছে।
ডিএমপির মিডিয়া বিভাগের ডিসি তালেবুর রহমান আমার দেশকে জানান, আপাতত পুলিশ ফোর্স মোতায়েন থাকবে। সতর্ক আছে পুলিশ। পাশাপাশি উত্তরা ও তুরাগ সংলগ্ন আশপাশ এলাকায় পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত সব ধরনের সভা-সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে।
এদিকে কাকরাইল মসজিদ বর্তমানে জুবায়েরপন্থিদের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আছে বলে তাবলিগের মিডিয়া বিভাগের সাথী হাবিবুল্লাহ রায়হান গতকাল আমার দেশকে জানিয়েছেন।
‘আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকার ছিল ইসলামবিদ্বেষী। ইসলামকে দেশ থেকে উৎখাত করাই ছিল তাদের মূল টার্গেট’
১৫ ঘণ্টা আগেএখন শেখ হাসিনাকে দেখভালের দায়িত্ব ভারতেরই এবং ভারত সেই দায়িত্ব নিয়েছে। শেখ হাসিনা দীর্ঘ সময়ের জন্য ভারতেই থাকবেন এটাই এখন সবচেয়ে বড় সত্যি। কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, শেখ হাসিনা ইসুতে ঢাকা-দিল্লি সম্পর্কে অস্বস্তি তৈরি হলেও তাকে আশ্রয় দেওয়া ছাড়া ভারতের সামনে আর কোনো পথ নেই।
২০ ঘণ্টা আগেবিগত সরকারের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে অনিয়ম বিষয়ে এই সরকার একটি কমিটি করেছে। শ্বেতপত্র প্রণয়ন নামে এই কমিটি তাদের রিপোর্টও জমা দিয়েছে। রিপোর্টেও উল্লেখ করা হয়েছে জিডিপি, মূল্যস্ফীতি ও মাথাপিছু আয়ের পরিসংখ্যানে গোঁজামিল ছিলো। জনগণকে এক ধাঁধার মধ্যে ফেলে ‘উচ্চতর প্রবৃদ্ধির' কাল্পনিক গল্প শোনানো হয়েছে
২১ ঘণ্টা আগেজুলাই বিপ্লবের দিন ৫ আগস্ট সাড়ে ১২ ঘণ্টা সংসদ ভবনের বাংকারে আত্মগোপনে ছিলেন সাবেক স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। এরপর সেনাবাহিনী তাকে ক্যান্টনমেন্টে সেনা হেফাজতে নিয়ে যায়।
২ দিন আগে