Ad

পিঠাপ্রেমীদের দখলে রাবি টিএসসিসি

প্রতিনিধি রাবি
প্রকাশ : ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০: ৩৮

ছাত্র-শিক্ষক মিলনায়তন কেন্দ্র-‘টিএসসিসি’। প্রতিটি ক্যাম্পাসেই একটি করে ‘টিএসসিসি’ রয়েছে। এই টিএসসিসি চত্বর গানের আসর, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড, বন্ধুবান্ধব ও ছাত্র-শিক্ষকদের আড্ডায় মুখরিত থাকে সবসময়। তবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিসি চত্বরের চিত্র একদম ভিন্ন। অধিকাংশ সময় চত্বরটি থাকে কোলাহলমুক্ত। তবে শীত আসতেই পাল্টে যায় এর চিত্র। পিঠা উৎসবকে কেন্দ্র করে প্রতিদিনই চত্বরে বসে অনেক দোকান। এসব দোকানের ধোঁয়া ওঠা গরম পিঠা খেতে ছুটে আসেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং শহরের মানুষ।

শীতের বিকাল নামার আগেই শুরু হয় পিঠা তৈরির কাজ। খোলা আকাশের নিচে অর্ধশতাধিক মাটির চুলায় বানানো হয় বাহারি সব পিঠা। স্থানীয় কিছু ব্যক্তি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এসব দোকানের উদ্যোক্তা। কারিগর স্থানীয় নারীরা। পিঠা পরিবেশন করার জন্য সবুজ ঘাসের ওপর রঙিন পাটি বিছানো থাকে। কিছু চেয়ার-টুলও রয়েছে। শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাই নয়, পিঠা খেতে আসর জমান নগরবাসী।

টিএসসিসি চত্বরে প্রায় ১২টি পিঠার দোকান আছে। এসব দোকানে ১৫ ধরনের পিঠা পাওয়া যায়। এখানে আতপ চালের গুঁড়া দিয়ে তৈরি করা হয় চিতই ও ভাপা পিঠা। আরও তৈরি করা হয় তেল পিঠা, পাটিসাপটা, পুলি পিঠা, রস পিঠা, বকুল পিঠা, লাভ পিঠা, বিস্কুট পিঠা, ঝালপোয়া, চিকেন পুলি, দুধ চিতই ইত্যাদি। এসব পিঠা কিনলে সঙ্গে পাওয়া যায় ৭ পদের ভর্তা। বেগুন, শুঁটকি, শর্ষে, ধনেপাতা, কাঁচা মরিচ ও কালো জিরার ভর্তাও আছে। প্রতিটি স্পেশাল ভাপা পিঠা ২০ টাকা, সাধারণ ভাপা পিঠা ১০ টাকা, তেল পিঠা ১৫ টাকা, পাটিসাপটা ১৫ টাকা, চিতই পিঠা ১০ টাকা, পুলি পিঠা ৬ টাকা, রস পিঠা ১০ টাকা, বকুল পিঠা ৮ টাকা, লাভ পিঠা ১০ টাকা, বিস্কুট পিঠা ৬ টাকা এবং প্রতি প্লেট ভর্তা ১০ টাকা। আকারভেদে প্রতিটি দোকানে দৈনিক আয় হয় ১০ থেকে ৪০ হাজার টাকা।

পিঠা খেতে এসে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিলেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী এনামুল হক। তিনি বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শীতের সন্ধ্যা মানে টিএসসিসির পিঠা উৎসব। এখানে পিঠা খেতে রীতিমতো যুদ্ধ করতে হয়। দেরি হলে সিরিয়াল লেগে যায়। এখানকার চিতই ও ভাপা পিঠা খুবই মজাদার। চিতই পিঠার সঙ্গে থাকে স্পেশাল ভর্তা।

নগরীর ফুলতলার বাসিন্দা রাকিবুল ইসলাম। বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধুদের নিয়ে মাঝে মাঝে পিঠা খেতে আসেন। বলেন, শীতকালে ক্যাম্পাসে এলে ভালোই লাগে। এখানে বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে পিঠা খাওয়ার মজাটাই আলাদা। তাই ছুটির দিনগুলোতে এখানে ছুটে আসি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী শেখর রায়। তার একটি ছোট পিঠার দোকান আছে। তিনি বলেন, পিঠা বিক্রি করে ব্যবসার নানা কৌশল শিখতে পারি। ছাত্র অবস্থায় আয়ের একটা চর্চা থাকে। সর্বোচ্চ চেষ্টা করি ভালো মানের পিঠা দিয়ে ক্রেতাদের মন জয় করতে। শিক্ষার্থীরা পিঠা খেতে আসে, এটি আমার খুব ভালো লাগে। শহর থেকেও লোকজন আমার দোকানে আসেন।

‘মাসুম আলীর শীতকালীন পিঠা’র স্বত্বাধিকারী মাসুম আলী। ৭ বছর ধরে এখানে পিঠার দোকান পরিচালনা করছেন। শীতের সময় দোকান করেন, অন্য সময়ে রিকশা চালান। তিনি বলেন, ক্যাম্পাসে সাত বছর ধরে পিঠা বিক্রি করছি। আমার দোকানে ৪৮ জন কর্মচারী। বিকাল চারটা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত খোলা থাকে। প্রতিদিন গড়ে ৫০ হাজার টাকা বেচাকেনা হয়।

বিষয়:

রাবি
ad
এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত